এ সময়ে অনেকেরই হাত-পা ঘামে। ফলে পোহাতে হয় নানা দুর্ভোগ। আবার পা ঘেমে যাওয়ার কারণে এ থেকে সৃষ্টি হতে পারে দুর্গন্ধ। এ নিয়েও অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাসুদা খাতুন বলেন, হাত-পা ঘামার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো বের করা যায়নি। বংশগতভাবে এ রোগ থাকা, শারীরিক কিছু সমস্যা, শরীরের ভেতরের ভারসাম্যহীনতা, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা প্রভৃতি কারণে হতে পারে।
হাত-পা ঘামার কারণ
হাত-পা ঘামার প্রাথমিক কারণ হিসেবে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত স্নায়বিক উত্তেজনার কারণে ঘাম হয়ে থাকে। আরও নানা কারণে হাত-পা ঘেমে থাকে। যেমন পারকিনসন্স ডিজিজ, থাইরয়েডে সমস্যা, ডায়াবেটিস, জ্বর, শরীরে গ্লুকোজের স্বল্পতা, মেনোপোজের পর প্রভৃতি। অনেক সময় শরীরে ভিটামিনের অভাব থাকলে হাত-পা অতিরিক্ত ঘামতে পারে। আবার মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও জেনেটিক কারণে হাত-পা ঘামে।
পায়ের দুর্গন্ধের কারণ
পায়ের দুর্গন্ধের প্রধান কারণ পায়ের ঘাম। ঘেমে যাওয়া পায়ে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জুতার ভেতর থেকে ঘাম বেরোতে পারে না। অনেকক্ষণ এমন অবস্থায় থাকার ফলে পা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। জুতা ও মোজা নিয়মিত পরিষ্কার না করলেও পা ও জুতা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে।
কী করবেন?
সব সময় পা পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রতিদিন ব্যবহার করা মোজা ধুয়ে ভালোভাবে শুকিয়ে ব্যবহার করতে হবে। জুতাও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। জুতার মধ্যে পাউডার দিতে পারেন। প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে এসব রোদে দেওয়া যেতে পারে। সুতি মোজা ব্যবহার করাই ভালো, কারণ এতে পা কম ঘামে ও ঘাম শোষণ করে। আর যাদের পা বেশি মাত্রায় ঘামে, তাঁরা বেশি ঘাম শোষণ করতে পারে এমন জুতা কিনতে পারেন।
চিকিৎসা
সঠিক কারণ বের না করে চিকিৎসা করা উচিত নয়। আগে অনুসন্ধান বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কারণ খুঁজতে হবে। তারপর সঠিক চিকিৎসা নিলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সাধারণত বিভিন্নভাবে হাত-পা ঘামা কমানো যেতে পারে। অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত একধরনের বিশেষ লোশন হাত-পায়ে ব্যবহার করলে হাত-পা ঘামা কমে যায়। বিশেষ ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রে হাত-পা সেঁকে নিলে হাত-পা ঘামা কমে যাবে। পরবর্তী সময়ে এটি দেখা দিলে আবার একইভাবে সেই বৈদ্যুতিক যন্ত্রে হাত-পা সেঁকে নিতে হবে। এসব পদ্ধতি ছাড়াও একটি বিশেষ ধরনের নার্ভের অস্ত্রোপচার করেও হাত-পা ঘামা কমানো যায়।
তবে হাত-পায়ের ঘাম রোধে যা-ই করা হোক না কেন, এর আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক: চিকিৎসক