শিক্ষা-গবেষণা চলছে সমানতালে

অনলাইনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে বিইউবিটি কালচারাল ক্লাব

করোনা মহামারির কারণে এখন অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর সংকট চলছে। এর মধ্যে ব্যতিক্রম রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি)। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য মো. ফৈয়াজ খান জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় গত সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা বেশি ছিল। সংকটময় পরিস্থিতিতেও অনলাইন পাঠদান প্রক্রিয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সাফল্য এসেছে বলে মনে করেন তিনি।

উপাচার্য বলেন, ‘অনলাইন ক্লাস পরিচালনার পাশাপাশি গবেষণাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সব কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। করোনার কারণে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমাদের শিক্ষকেরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই তাঁদের কাজে অনুপ্রেরণা দিতে আমরা নিয়মিতভাবে গবেষণায় বরাদ্দও দিচ্ছি।’ প্রকল্পভেদে গবেষণার জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ওয়ানস্টপ সার্ভিসটি শিক্ষার্থীদের খুব কাজে আসছে, বিশেষ করে ঢাকার বাইরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য।
এ এইচ এম আজমল হোসেন, বিইউবিটির যুগ্ম রেজিস্ট্রার ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি

এ সময়ের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সব শিক্ষার্থীর জন্য ২৫ শতাংশ টিউশন ফি মওকুফ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট প্যাকেজের দামও শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ বড় একটি সমস্যা। তাই শিক্ষার্থীদের কাছে স্বল্প খরচে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে দুটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

পাঠদান ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দাপ্তরিক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে বেশ কিছু নতুন সুবিধা চালু করেছে বিইউবিটি। মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে টিউশন ফি প্রদান, অনলাইন নিবন্ধনসহ ঘরে বসেই আরও বেশ কিছু সুবিধা পাচ্ছেন এখানকার শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা এসব কাজের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হলে তা সমাধানের জন্য ‘ওয়ানস্টপ’ নামে একটি পরিষেবাও চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এটি মূলত একটি অনলাইনভিত্তিক সেবা, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে লগইন করে প্রশ্ন টাইপ করে দিলে তৎক্ষণাৎ উত্তর পাওয়া যায়। পূর্বনির্ধারিত এই উত্তরে সন্তুষ্ট না হলে সরাসরি ফোনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগও রয়েছে। বিইউবিটির যুগ্ম রেজিস্ট্রার ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এইচ এম আজমল হোসেন বলেন, ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিসটি শিক্ষার্থীদের খুব কাজে আসছে, বিশেষ করে ঢাকার বাইরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য।’

এদিকে নতুন স্বাভাবিকের একঘেয়েমি কাটাতে পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রমেও ব্যস্ত রাখছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্লাবগুলো। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করেছিল বিইউবিটি কালচারাল ক্লাব। বিশ্ববিদ্যালয়টির ফেসবুক পেজ থেকে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ঘরে বসে অনলাইন মাধ্যমে নাচ, গান, আবৃত্তিসহ গল্প বলায় মেতে উঠেছিলেন ক্লাবের সদস্যরা। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল ‘গোয়েন্দা ধরবাবু’ শিরোনামের একটি পরিবেশনা। ক্লাবের সদস্যরা মূলত গল্পটির কাহিনি হাতে আঁকা ছবি ও কণ্ঠ অভিনয়ের মাধ্যমে পর্দায় তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের আয়োজক বিইউবিটি কালচারাল ক্লাবের সভাপতি ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘সাংস্কৃতিক নানা রকম আয়োজনে সারা বছরই ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখতাম আমরা। কিন্তু দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আনন্দ আয়োজনগুলো ভীষণভাবে মিস করছিলাম। তাই বিকল্প উপায় হিসেবে অনলাইন মাধ্যমেই একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিই আমরা।’

ক্যাম্পাসে বড় কলেবরে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে না পারার আক্ষেপ অবশ্যই আছে। তবে আয়োজকদের মতে, অনলাইনে এমন আয়োজনের ইতিবাচক দিক হলো, তাঁদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনাগুলো ক্যাম্পাসের বাইরের অনেক মানুষের কাছেও পৌঁছে গেছে।