(এই গল্পের সব চরিত্রই কাল্পনিক। রাজউকের কোটিপতি পিয়নের সঙ্গে কোনো চরিত্রের মিল পাওয়া গেলে তা নিতান্তই কাকতালীয়।)
* পল্টু আর বিল্টু একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়ে। পল্টু ক্লাসের ফার্স্টবয়। বিল্টু কোনোরকমে টেনেটুনে পাস করে।
* পল্টু রোজ ক্লাসে পড়া শিখে যায়। বিল্টু প্রায়ই পড়া বলতে না পেরে বেঞ্চের ওপর কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকে।
* জেএসসি পরীক্ষা ঘাড়ের ওপর তপ্ত নিশ্বাস ফেলছে। পল্টু মনপ্রাণ দিয়ে পড়াশোনা করছে। বিল্টু সারা দিন পালিয়ে সিনেমা দেখা, গুলতি দিয়ে পাখি মারা আর মারামারিতেই ব্যস্ত।
* পল্টু জিপিএ ফাইভ পেল। বিল্টু পাশের জনের খাতা দেখে কোনোমতে পেল ‘সি’ গ্রেড।
* পল্টু বিজ্ঞান বিভাগে গেল। দুই বছর পর এসএসসিতেও পেল জিপিএ ফাইভ।
* বরাবরের মতোই গুলিটা গেল বিল্টুর কানের পাশ দিয়ে।
বিল্টু, তুই পাস করলি কী করে?
আরে, ভাগ্য ভালো, অঙ্ক পরীক্ষার আগের রাইতে ফেসবুকে বইছিলাম। যে প্রশ্ন পাইছি, সব দাঁড়ি-কমাসহ মিইল্যা গেছে।
* পল্টু একটি নামকরা কলেজে ভর্তি হয়ে চলে গেল ঢাকায়।
ওদিকে বিল্টু একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে পিয়নের চাকরি নিল। ঘুষের টাকা জোগাড় করতে বিক্রি করতে হলো বাবার জমি। মায়ের গলার হারটাও বাদ গেল না।
১০ বছর পর...
* পল্টু একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করল। যোগ দিল একটা ডিজাইন ফার্মে। বেতন ১৫ হাজার টাকা। এদিকে তার গার্লফ্রেন্ড ছ্যাঁকা দিয়ে বিয়ে করল যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডিরত একজনকে। পল্টুর মনেও এখন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জেদ। সারা দিন চাকরি, রাতে বাসায় ফিরে জিআরই–র পড়া। দম ফেলার সময় নেই।
* ওদিকে বিল্টুর তখন বাড়ি, গাড়ি, ব্যাংক ব্যালান্স—সবই আছে। গুলশানে তিন বিঘা জমির ওপর সাততলা দালান, ধানমন্ডিতে স্ত্রীর নামে কিনেছে চার হাজার বর্গফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট।
* একদিন পল্টু গেল বিল্টুর অফিসে একটি প্ল্যান পাস করাতে।
আরে দোস্ত, তুই এখানে চাকরি করিস! দোস্ত, প্ল্যানটা তো পাসই করাতে পারছি না। একটু হেল্প কর না।
হে হে! সারা জীবন এত ভালো ভালো পাস কইরা এখন অন্য মাইনষের দালানের প্ল্যান পাস করানোর লাইগ্যা ঘুরছ? হেহ্! হইব হইব। তয়, আগে তোর স্যাররে বইলা আমার নাশতা-পানির ব্যবস্থা কর। বুঝস তো, আমি আবার নাশতা করতেও ফাইভ স্টার হোটেলে যাই। হে হে!