লক্ষণ খিঁচুনি নয়, খিঁচুনির মতো

মানসিক চাপের ফলে অনেক সময় খিঁচুনির মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কিন্তু এই খিঁচুনি মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক কিছুর নিঃসরণ থেকে হয় না, এটি মানসিক চাপের বহিঃপ্রকাশ। প্রকৃত মৃগী রোগীর খিঁচুনি থেকে এ ধরনের লক্ষণ আলাদা করা বেশ কঠিন। রোগের লক্ষণ ও ইতিহাস থেকে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। মৃগী রোগী না হলেও খিঁচুনির মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। একে বলে সিউডোসিজার। যেমন হাত-পায়ের খিঁচুনি না হয়ে অনেক সময় পিঠ বেঁকে যায় বা নিতম্বের অস্বাভাবিক ঝাঁকুনি হয় কিংবা রোগী হাত-পা প্রবলভাবে ছোড়াছুড়ি করে। এটি প্রত্যক্ষদর্শীরা খিঁচুনি বলে ভুল করেন। এ ক্ষেত্রে সাধারণত রোগী পুরোপুরি অজ্ঞান হন না, চারপাশে কী ঘটছে তা বুঝতে পারেন অথবা হাত-পায়ে স্পর্শ করলে বা খোঁচা দিলে টের পান। এমন ঘটনা অন্যের উপস্থিতিতে হয়। ঘুমের মধ্যে ঘটে না। প্রকৃত খিঁচুনির মতো এতে জিহ্বায় কামড় লেগে রক্তপাত হয় না, রোগী মাটিতে পড়ে মারাত্মক আঘাত পান না এবং খিঁচুনি-পরবর্তী স্মৃতি-ভ্রষ্টতা, মাথাব্যথা, মানসিক বিভ্রম—এসবও ঘটে না। এমন সমস্যা কাদের মধ্যে থাকতে পারে? মা-বাবা বকুনি দিলে বা স্কুলের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ করার পর কিশোর-কিশোরীদের এ ধরনের খিঁচুনি দেখা দেয়। সিউডোসিজার ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের প্রায় তিন গুণ বেশি হয়। অনেকের ক্ষেত্রে শৈশবে যৌন হয়রানির পূর্ব-ইতিহাস থাকে। অপ্রকৃত খিঁচুনি বা সিউডোসিজার হলে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।  জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট।