রোজায় থাইরয়েড রোগীর জন্য পাঁচ পরামর্শ
থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যক্ষমতা কমে গেলে তাকে হাইপোথাইরয়ডিজম বলে। এই হরমোনের ঘাটতি মেটাতে রোগীদের লেভো থাইরক্সিন বড়ি রোজ সকালে খালি পেটে সেবন করতে হয়। ওষুধটি সাধারণত আজীবন খেয়ে যাওয়ার নিয়ম। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন আছে। যেমন বেশির ভাগ রোগীই সকালে খালি পেটে নাশতার কমপক্ষে আধা ঘণ্টা আগে এটি সেবন করেন। কিন্তু রোজায় এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে। ফলে রোগীরা এ নিয়ে একটু চিন্তায় পড়ে যান।
১. হাইপোথাইরয়েডের রোগীদের রোজা রাখতে তেমন কোনো সমস্যা নেই। তবে যাঁদের পিটুইটারি গ্রন্থির অকার্যকারিতায় সেকেন্ডারি হাইপোথাইরয়েডিজম হয়, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শে রোজা রাখতে হবে। কারণ, এ সমস্যায় অন্যান্য প্রয়োজনীয় হরমোনেরও ঘাটতি থাকে।
২. থাইরয়েডের ওষুধ কোনোমতেই বাদ দেওয়া চলবে না। হরমোনের মাত্রা ঠিক থাকলে আগে যে ডোজ খেতেন, সেটাই রোজার মধ্যেও চালিয়ে যাবেন। আর হরমোনের মাত্রায় তারতম্য থাকলে রোজা শুরুর আগেই এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধের মাত্রা ঠিক করে নিতে হবে।
৩. লেভো থাইরক্সিন খালি পেটে সেবন করলে এর ৮০ শতাংশ ভালোভাবে দেহে শোষণ হয়, আর কাজে লাগে। ভরা পেটে খেলে এর মাত্রা ৬০ শতাংশে নেমে আসে। বছরের অন্য সময় তাই রোগীরা সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ওষুধটি খেয়ে থাকেন। ওষুধ সেবন থেকে নাশতার মধ্যে সময় ব্যবধান এক ঘণ্টা হলেই ভালো। তবে রোজায় এর ব্যতিক্রম হয়। এ জন্য সাহ্রিতে একটু আগে উঠে প্রথমে খালি পেটে ওষুধটি খেয়ে নিন। এরপর বিরতি নিয়ে খাবার খেতে পারেন।
৪. আবার একটু দেরিতে, অর্থাৎ রাত ১২টার পর ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে, ওষুধ খেয়ে ঘুমাতে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সাহ্রির কয়েক ঘণ্টা আগে ওষুধ খাওয়া হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, রাতের খাবারের অন্তত দুই ঘণ্টা পর ওষুধটি খেতে হবে।
৫. রোজায় অনেক সময় নানা কারণে ওষুধ খেতে ভুল হয়ে যেতে পারে। তাহলে মনে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নিতে ভুলবেন না। আহারের অন্তত এক থেকে দুই ঘণ্টা আগে বা পরে খেতে পারলে ভালো। অথবা পরদিন একসঙ্গে দুটি ডোজ খেয়ে নিতে পারেন।
ডা. এ বি এম কামরুল হাসান, সহকারী অধ্যাপক, অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ