পাউরুটি কাটা হলো ফালি করে!
রুটিজাতীয় খাবার তৈরির সঙ্গে মানুষের পরিচিতি প্রায় ৩০ হাজার বছর ধরে। কিন্তু পাউরুটি থেকে স্লাইস বা ফালি করা পাউরুটিতে বিবর্তনের গল্প বেশি দিন আগের নয়। ১৯২৮ সালের ৭ জুলাই প্রথম স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি করা হয়েছিল ফালি করা পাউরুটি। এর আগে রুটি কিনে ক্রেতাদের নিজেদেরই ফালি করে নিতে হতো—যাতে ফালি অসমান হতো, একটু অসাবধান হলেই হাতের বুড়ো আঙুল কেটে যেতে পারত, আর সময়েরও অপচয় হতো। ফালি করা পাউরুটি যেন এসব সমস্যারই সমাধান দিল।
পাউরুটি ফালি করে কাটার এই পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছিলেন ওটো ফ্রেডেরিক রোহওয়েডার (১৮৮০-১৯৬০)। যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের এই অধিবাসীকে ফালি করা পাউরুটি তৈরির যন্ত্র বানাতে গিয়ে ভুগতেও হয়েছে বেশ। বিশেষত ১৯১৭ সালের এক অগ্নিকাণ্ডে স্লাইস বা ফালি করার জন্য বানানো তাঁর প্রথম যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু রোহওয়েডার থেমে থাকেননি, আবার তৈরি করেন সেই যন্ত্র। সেই যন্ত্র নিয়ে তখনকার পাউরুটি কারখানার মালিকেরা সন্দিহান ছিলেন। তাঁদের সংশয়ের কারণ, যন্ত্রটি আদৌ কাজ করবে কি না কিংবা ফালি করা পাউরুটি কতটা জনপ্রিয় হবে।
অবশেষে বন্ধু ফ্র্যাঙ্ক বেঞ্চের দ্বারস্থ হন রোহওয়েডার। বেঞ্চের রুটির কারখানা চিলিকোথি বেকিং কোম্পানিতেই বাণিজ্যিকভাবে প্রথম তৈরি হয় ফালি করা পাউরুটি। ১৯২৮ সালের ৭ জুলাই প্রথম বিক্রি শুরু হয় সেই পাউরুটি। শুরুর দিনগুলোতে ফালি করতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছিল রোহওয়েডারকে। তবে তাঁর তৈরি নতুন যন্ত্র দিয়ে সে সমস্যা দ্রুতই কাটিয়ে ওঠেন। এ ছাড়া ফালি করা পাউরুটি অল্প সময়ে বাসি হয়ে যাওয়ার সমস্যাও ছিল, রোহওয়েডার একধরনের আলপিন দিয়ে রুটিগুলোকে একত্রে আটকে রাখার ব্যবস্থা করেন, যাতে সেগুলো দ্রুত বাসি না হয়। তারও কিছু সময় পর মোড়কজাত করে পাউরুটি বিক্রিও শুরু হয়। নতুন এই পাউরুটির জনপ্রিয়তাও সবখানে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
ফাইজুন নাহার
তথ্যসূত্র: টাইমস এবং হিস্ট্রি ডটকম।