যেসব খাবার শরীর ঠান্ডা করে
গরমে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। রাজধানীর হাসপাতালগুলো থেকে পাওয়া তথ্যেও বোঝা যাচ্ছে, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। তাই খাবার ও চলাফেরায় একটু সচেতনতা জরুরি এ সময়ে। গরমের উপযোগী খাবার ও সাবধানে চলাফেরা এ ধরনের বিপর্যয় থেকে আপনাকে দেবে সুরক্ষা। গরমে ঘামের সঙ্গে প্রচুর পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এ পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদেরা বেশি করে পানি, ফল ও পানিজাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দিনে তিন লিটারের বেশি পানি পান করা প্রয়োজন। তাই নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এমন সব খাবার রাখা দরকার, যা পূরণ করবে পানির অভাব।
বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের (গ্রিন রোড) উপাধ্যক্ষ (পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান বিভাগ) আয়শা আক্তার বলেন, গরম থেকে স্বস্তি পাওয়ার জন্য অনেকে বাইরে নানা কিছু খেয়ে থাকেন। ফুটপাতের নানা রকম শরবত ও রস খেয়ে অনেকে শরীর ঠান্ডা করতে চান। তবে এতে হিতে বিপরীত হতে পারে; শরীর সুস্থ হওয়ার বদলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। এসব খাবার শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর, যা ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের কারণ হতে পারে। তাই গরমে খেতে হবে বুঝেশুনে।
এখানে থাকছে এমন কিছু খাবারের কথা, যা গরমে আপনাকে ঠিকঠাক প্রশান্তি দেবে।
বাঙ্গি
বাঙ্গি খুবই সহজলভ্য। দামেও তুলনামূলক সস্তা। শরীর ঠান্ডা রাখতে বাঙ্গি খুবই উপকারী। বাঙ্গিতে প্রচুর পটাশিয়াম ও মিনারেল আছে। তাই গরমে বাঙ্গি খেতে পারেন। নিয়মিত বাঙ্গির শরবত খেলে খাবারে অরুচি, অনিদ্রা, আলসার ও অ্যাসিডিটি দূর হয়।
ডাবের পানি
ডাবের পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে, যা আপনার শরীরকে ঠান্ডা করবে।
তরমুজ
তরমুজের ৯১ দশমিক ৫ শতাংশই পানি, যা শরীর ঠান্ডা করতে সাহায্য করবে। আরও আছে ভিটামিন ও খনিজ লবণ, যা এই গরমে আপনাকে স্বস্তি দেবে। তাই নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এই সময়ে তরমুজ রাখতে পারেন।
কাঁচা আম
কাঁচা আমে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে। এ ছাড়া রয়েছে ভিটামিন সি ও ম্যাগনেশিয়াম, যা শরীর ঠান্ডা করতে সহায়তা করে।
শসা
শসায় রয়েছে ৯৬ দশমিক ৭ শতাংশ পানি, যা শরীরের পানির অভাব মেটাতে সাহায্য করে। এই গরমে খাদ্যতালিকায় শসার সালাদ রাখুন।
আখের গুড়
আখের গুড় দিয়ে শরবত পান করলে শরীর ঠান্ডা থাকে। আখে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ রয়েছে, যা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা হ্রাসে সাহায্য করে।
পুদিনাপাতা ও ধনেপাতা
শরীর ঠান্ডা করার পাশাপাশি ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করে। পুদিনাপাতা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ–তে পরিপূর্ণ। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এমন একটি উপাদান, যা অতিরিক্ত গরমে ত্বকের যে ক্ষতি হয়, তা পুষিয়ে দিতে সাহায্য করে। গরমে ঘাম জমে ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করে। পেটের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে খাবার হজমে সাহায্য করে। ধনেপাতার মতো তরকারিতে ছিটিয়ে বা কাঁচা সালাদের সঙ্গে খাওয়া যায়।