যে রান্নায় শাকসবজির পুষ্টিগুণ থাকবে
শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানসমৃদ্ধ খাবারের কোনো বিকল্প নেই। এসব উপাদানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস রঙিন ও সবুজ শাকসবজি। তবে সঠিক পদ্ধতিতে রান্না না করলে শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, শাকে যে পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে, তা দিয়েই আমাদের দৈনিক চাহিদা পূরণ সম্ভব। শাকসবজির ভিটামিন সি ধরে রাখার সর্বোত্তম উপায় হলো, ভাপে বা প্রেশার কুকারে রান্না করা। ভাপে অন্য পুষ্টি উপাদানেরও (ক্যারোটিন, বি ভিটামিন, ফাইটোকেমিক্যালস ইত্যাদি) অপচয় কম হয়। কাজেই পুষ্টি চাহিদা পূরণে শাকসবজি রান্নার ক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
• শাকসবজি যথাসম্ভব বড় বড় করে কাটতে হবে। এতে আলো ও বাতাসের সংস্পর্শে ভিটামিনের ক্ষয় কম হয়।
• ভিটামিন বি ও সি–এর অপচয় রোধে সবজি খোসা ছাড়ানো ও টুকরা করার পর আবার ধোয়া যাবে না। পানিতে ভিজিয়েও রাখা যাবে না।
>অল্প সময় ধরে রান্না করতে হবে
দীর্ঘ সময় ও উচ্চ তাপে রান্নায় শাকসবজির ভিটামিন সি নষ্ট হয়
• খোসাসহ সবজি রান্না করলে পুষ্টি উপাদান বেশি মাত্রায় ধরে রাখা যায়। বিশেষ করে আলু, মিষ্টি আলু, মূলা, গাজর ইত্যাদি মূল ও কন্দজাতীয় সবজি খোসাসহ রান্না করলে ভিটামিন সিসহ অন্য পুষ্টি উপাদান বেশি পরিমাণে অক্ষুণ্ন থাকে। টমেটো, ব্রকলি, পেঁয়াজ, গাজর ইত্যাদি কাঁচা না খেয়ে রান্না করে খেলে রোগপ্রতিরোধকারী উপাদানগুলো বাড়ে।
• শাকসবজি কাটার ক্ষেত্রে ধারালো ছুরি, বঁটি ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা ছুরি-বঁটিতে ভিটামিন সি নষ্ট হয়।
• সূর্যের আলোয় রিবোফ্লাভিন নষ্ট হয় বলে শাকসবজি কেটে খোলা রাখা যাবে না। পুষ্টি উপাদানের অপচয় রোধ করতে রান্নার ঠিক আগ মুহূর্তে কাটতে হবে।
• ঢাকনা দেওয়া পাত্রে রান্না করা ভালো। এতে রান্না দ্রুত হয়, খাবার অক্সিজেনের সংস্পর্শে কম আসে বলে ভিটামিন সি ও ক্যারোটিন নষ্ট কম হয়।
• রান্নায় যতটা সম্ভব কম পানি ব্যবহার করতে হবে।
• অল্প সময় ধরে রান্না করতে হবে। দীর্ঘ সময় ও উচ্চতাপে রান্নায় শাকসবজির ভিটামিন সি নষ্ট হয়।
• সামান্য তেল দিয়ে শাকসবজি রান্না করলে ক্যারোটিন অক্ষুণ্ন থাকে। সেই সঙ্গে চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলোও সহজেই দেহে শোষিত হয়।
• শাকসবজি রান্নায় বেকিং সোডা ব্যবহার করা যাবে না। এতে ভিটামিন সি, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন ও ফলিক অ্যাসিড নষ্ট হয়।
• শাকসবজি রান্নার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে খেতে হবে।
লেখক: পুষ্টিবিদ ও শিক্ষক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর