আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার ২০ বা ৩০ শতাংশ হওয়া উচিত আমিষ। আমাদের অনেকের ধারণা, আমিষ কেবল মাংস খেলেই পাওয়া যায়। কিন্তু মাংস ছাড়াও আমিষের আরও নানান উৎস আছে। ধরা যাক, কেউ মাংস পরিহার করতে চান বা নিরামিষাশী হতে চান, তবে তাঁর আমিষের চাহিদা কীভাবে পূরণ হবে? ডিম, দুধ, দুধের তৈরি খাবার, মাছ, শিমের বীজ, বাদাম, ছোলা, সয়াবিন, মটরশুঁটি, বরবটি, বিভিন্ন সবজির বিচি ইত্যাদি থেকেও আমরা প্রচুর পরিমাণে আমিষ পেতে পারি। এই খাবারগুলোকে নানাভাবে রান্না করে, যেমন বুটের ডালের হালুয়া, ডিম–দুধের পুডিং, পায়েস, মাছের কাটলেট বা চপ, ডালের বড়া, ছানা, দই ইত্যাদি প্রস্তুত করে খেলে আমিষের চাহিদা পূরণ হবে মাংস ছাড়াই।
মাংসের পরিপূরক কী হতে পারে, তা একটু জেনে নেওয়া যাক। এক টুকরা ৩০ গ্রাম পরিমাণ মাংসে আছে ৬ গ্রাম আমিষ। এর পরিবর্তে সমপরিমাণ আমিষ পেতে হলে আপনি খেতে পারেন ১৬০ গ্রাম বাদাম, দেড় কাপ দুধ, ৩৫ গ্রাম মাছ, আধ কাপ মটরশুঁটি, ২ কাপ তরল ডাল (মুগ-মসুর), ২০ গ্রাম পনির, ৩৫ গ্রাম ছানা, ২৫ গ্রাম ছোলার ডাল, ১৫ গ্রাম সয়াবিন, ৩০ গ্রাম ছোলা, ২০ গ্রাম সরিষা ইত্যাদির যেকোনো একটি।
অনেকে ওজন কমানোর জন্য বা হৃদ্রোগ এড়াতে মাংস এড়িয়ে চলতে চান। সে ক্ষেত্রে আমিষের অভাব যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আমিষের নানা উদ্ভিজ্জ উৎস হিসেবে নানান রকমের ডাল বেছে নিতে পারেন। দু–তিন ধরনের ডাল মিশিয়ে খেলে এর জৈবমূল্য আরও বাড়ে। একটি আমিষের সঙ্গে আরেকটি আমিষ মিশিয়ে খেলেও বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়, যেমন ডিম-ডাল, খিচুড়ি, দুধ–ডিমের তৈরি নাশতা, হালিম ইত্যাদি। বাদামে বাড়তি হিসেবে পাবেন ম্যাগনেশিয়াম ও ওমেগা ৩ চর্বি, যা উপকারী। আমিষের ক্ষেত্রে মাংসের বিকল্প হিসেবে দুধ, পনির, দই ইত্যাদি খুবই উপকারী। ক্যালসিয়াম ছাড়াও দই বা পনিরে অন্ত্রের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যাবে। সয়াবিনেও ভালো ক্যালসিয়াম আছে।