ভালোবেসে উপহার
এক, দুই, তিন। আঙুল গুনে গুনে এই কদিন পেরোলেই ভালোবাসার দিন। নতুন হোক বা পুরোনো, প্রেমের আগুন খানিকটা উসকে দিতে এর চেয়ে ভালো দিন আর কোনটি? তো এ বছরের পরিকল্পনা কী? কীভাবে চমকে দেবেন প্রিয় সঙ্গীকে? বিশেষ কী কী ভাবলেন দিনটির জন্য?
সেই সব চিরচেনা কার্ড, আংটি, চুড়ি তো অনেক হলো। এবার না হয় ভালোবাসার উপহারে আসুক ভিন্নতা। সেটা কেমন? ধরুন, আপনার প্রিয় মানুষটির কাশফুল খুব প্রিয়, অথবা প্রজাপতি দেখলেই চঞ্চল হয়ে ওঠে। তাহলে সেটাই না হয় উঠে আসুক পোশাকে। দুজনের মনের গোপন কুঠুরিটা এবার একটুখানি প্রকাশ পাক পোশাকে। কৈরবীর ফ্যাশন ডিজাইনার ও সহ–স্বত্বাধিকারী সাদিয়া সুলতানা বলেন, নিজের মনের কথা লেখা বা পছন্দের বিষয়ের হ্যান্ডপেইন্ট দিয়ে বানানো পোশাক হতে পারে এই দিনের উপহার। তাতে অন্যজনের পছন্দ তুলে আনতে পারবেন চাইলে। কৈরবীতে আগে থেকে বানানো যেমন কিছু পোশাক পাবেন, তেমনি চাইলে মনের মতো নকশা ফরমাশ দিয়েও বানিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু সেটার জন্য এখন হাতে আপনার সময়টা একটু কম। নিজের মতো ডিজাইন চাইলে হাতে অন্তত এক মাস সময় নিয়েই অর্ডার করতে হবে।
তারপরও এই কম সময়েই প্রিয়জনকে অবাক করে দিতে চাইলে তাঁর জন্য চমক রাখতে পারেন তাঁর কর্মস্থলে বা বাসায়। সকাল সকাল ঘুম ভেঙে বা অফিসের ডেস্কে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই দেখল একটা আকর্ষণীয় কেক অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। কেমন হবে? সে জন্য দারস্থ হতে পারেন খাবার পৌঁছে দেওয়ার অ্যাপগুলোর কাছে। পছন্দের কেকটার কথা বলে দিলে তারাই নির্ধারিত সময়ে জায়গামতো পৌঁছে দেবে কেকটি। সঙ্গে না হয় থাকল এক তোড়া ফুল।
দিনটিকে বিশেষ করার জন্য আরও খানিকটা বাড়তি মনোযোগ দিতে চাইলে মন দিতে পারেন ঘর সাজানোতেও। দিনটা যেহেতু বিশেষ, তাহলে ঘরটাও না হয় ভালোবাসা ছড়াতে সেজে উঠুক নতুন করে। বসন্তের সব ফুল, লালরঙা বেলুন আর মোমবাতি তো থাকছেই বিছানায় রাখতে পারেন নিজেদের এক টুকরো স্মৃতি। পছন্দের কোনো ছবি বা প্রিয় কোনো লাইন দিয়ে বানিয়ে নিতে ছোট ছোট কুশন। সেগুলোই ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাক বিছানায়।
ডেকোরা বাংলাদেশের সিইও মো. শামীম উদ্দিন বলেন, ‘গ্রাহকের ছবি দিয়ে বানানো কুশনগুলো মাত্র দুই-তিন দিনের মধ্যেই আমরা সরবরাহ করে থাকি।’ আর ফটো ওয়াচ, ফটো মগ, ফটো ওয়াটার বোতল বা ফটোফ্রেম চাইলে ঢাকাতে এক দিনের মধ্যেও সরবরাহ পেতে পারেন। এসব জিনিস পেতে হলে ক্রেতাকে নাম, ঠিকানা আর দামের সঙ্গে পছন্দের ছবি বা লাইনটা দিয়ে দিতে হবে, ব্যস।
সুন্দর সময়ও একদমই ফিকে হয়ে যায় খাবার ছাড়া। খাবার ছাড়া সব আয়োজনই অসম্পূর্ণ। আর রান্নার হাত যদি আপনার মোটামুটি বা ভালো হয়ে থাকে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। প্রিয়জনের জন্য পছন্দের খাবার রান্না করে টেবিল সাজিয়েও দিতে পারেন সারপ্রাইজ। দিন শেষে ফিরে বিশেষ দিনে বিশেষ মানুষের হাতে বিশেষ খাবার দেখে নিশ্চয়ই তার ভালো লাগবে। তাতে সেটার স্বাদ যেমনই হোক।
আচ্ছা সেটাও যদি আপনার কাপের চা না হয়। তাহলে না হয় একটা সারপ্রাইজ ট্যুরের পরিকল্পনা করে ফেলুন। এ বছর ভালোবাসার দিনটি পড়েছে শুক্রবারে। সারা সপ্তাহের ব্যস্ততা আর ক্লান্তি কাটানোর পাশাপাশি ভালোবাসা উদ্যাপনে এর থেকে ভালো সমাধান আর কী হতে পারে? দিনভর ঘুরেফিরে আসার জন্য আশপাশে জায়গার তো অভাব নেই। চাইলেই সবকিছু মিলিয়ে পরিকল্পনা সাজানো যায়।
এসবে না যেতে চাইলে বা সময় সুযোগের অভাব থাকলে ঘুরে আসুন যেকোনো গিফট শপ থেকে। গিফট কার্ড বা ফটোফ্রেম তো পাচ্ছেনই সেখানে। আর্চিস গ্যালারি বনানীর ম্যানেজার রোকেয়া ইসলাম লাকী বলেন, এখান থেকে ক্রেতারা তাঁদের প্রিয় মানুষটিকে উপহার দিতে পারবেন পছন্দমতো উপহার। নতুন নতুন বেশ কিছু উপহারসামগ্রী এসেছে এখানে। সেটাতেও তিনি কম আপ্লুত হবেন না নিশ্চয়ই।
তবে যদি সদ্যই প্রেমের বাঁধনে বাঁধা পড়ে থাকেন, তাহলে সারা জীবনের জন্য দিনটিকে স্মরণীয় করে তুলতে চাইলে এ দিনটিকেই বেছে নিতে পারেন। এদিনেই তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলে দিতে পারেন মনের কথা বা প্রেমের কথা জানিয়ে দিতে পারেন নিজেদের পরিবারকে। তারপর না হয় আরও বড় পরিসরে পরিকল্পনা সাজানো যাবে।