ব্যায়ামের আগে-পরে

ব্যায়ামের সময় চুল থাকবে বাঁধা, হাতের নাগালের মধ্যেই রাখুন ছোট তোয়ালে
ব্যায়ামের সময় চুল থাকবে বাঁধা, হাতের নাগালের মধ্যেই রাখুন ছোট তোয়ালে

সুস্থ থাকলে মন এমনিতেই ফুরফুরে থাকে, তাই না? তো, সুস্থ থাকার জন্য দরকার ভালো খাবার আর একটু শারীরিক পরিশ্রম। তাই অনেকে জিমে যান, অনেকে ঘরে ব্যায়াম করেন। ব্যায়াম করছেন আবার ইচ্ছামতো খাবারও খেয়ে নিচ্ছেন। ভাবছেন, ব্যায়াম করলে তো খাবারের সব শক্তি হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে। কিন্তু ব্যাপারটা আসলে তা নয়। খাবেন, ইচ্ছামতো নয়, নিয়ম করে। এমন পরামর্শই দিলেন বিশেষজ্ঞরা।

জিমে যাওয়ার সময় প্রয়োজন বিশেষ একটি ব্যাগ। মডেল: দয়িতা, ছবি: নকশা
জিমে যাওয়ার সময় প্রয়োজন বিশেষ একটি ব্যাগ। মডেল: দয়িতা, ছবি: নকশা

ব্যায়ামের আগে
যদি জিমে যেতে চান, তাহলে সঙ্গে রাখুন একটি আলাদা ব্যাগ। অ্যাডোনাইজ ফিটনেস সেন্টারের প্রশিক্ষক খাদিজা হোসেন বললেন সেই ব্যাগে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখতে। যেমন ম্যাট, রিস্ট ব্যান্ড, ব্যায়ামের পোশাক, হেড ব্যান্ড, গ্লাভস, নি ক্যাপ (হাঁটুতে ব্যথা থাকলে ব্যবহার করতে হবে), ব্যায়ামের সময় মাপার জন্য স্টপ ওয়াচ, কতটুকু ক্যালরি পুড়ল তা মাপার জন্য অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার, গানের তালে তালে ব্যায়াম করতে হলে ব্লুটুথ বা হেডফোন (মুঠোফোন কিংবা গান শোনার কোনো যন্ত্রের সঙ্গে সংযোগ দেওয়ার জন্য), জুতা ও মোজা, পানি, ছোট তোয়ালে ও প্রোটিন শেক। প্রয়োজন মনে করলে এক সেট পোশাক বেশি রাখুন।
পারসোনা হেলথের প্রধান প্রশিক্ষক ফারজানা খানম পরামর্শ দিলেন ব্যায়ামের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে ভারী খাবার খেতে। ভারী খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। আবার একদম খালি পেটেও ব্যায়াম করা যাবে না। ব্যায়ামের আধা ঘণ্টা আগে একদম অল্প করে ফল খাওয়া যেতে পারে। ফারজানা খানম বললেন, জিমে যাওয়ার আগে সঙ্গে পারফিউম বা বডি স্প্রে রাখা যেতে পারে। ব্যায়ামের পর ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে কাজে লাগবে এটা। চুলটা ঝুঁটি করে বেঁধে নিলে ব্যায়াম করতে সুবিধা হবে। ব্যায়াম শুরুর আগে কিছুটা ওয়ার্মআপ করে নিতে বললেন তিনি। সাঁতার কেটে বা স্কিপিং করে (দড়ি লাফ) ওয়ার্মআপ করা যেতে পারে। কিংবা ১-২ মিনিট জগিং করে নিতে পারেন। খালি হাতে ছোট ছোট ব্যায়াম করেও ওয়ার্মআপ করা যাবে।

ব্যায়ামের মাঝখানে
খাদিজা হোসেন বললেন ব্যায়াম করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেলে একটু জিরিয়ে নিতে। একটানা ব্যায়াম করা ঠিক নয়। জিরিয়ে নেওয়ার সময় এক-দুই ঢোক পানি পান করে নিতে পারেন। তবে বেশি পানি পান করা যাবে না। তাতে ব্যায়াম করার সময় মুখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসতে পারে।

ব্যায়ামের সময়
ফারজানা খানম বলেছেন দিনের যেকোনো একটা সময়কে বেছে নিতে ব্যায়াম করার জন্য। সেটা সকালবেলা হলে খুব ভালো হয়। তবে সময়ের হেরফের না করাই ভালো। যেমন একদিন সকালে, একদিন বিকেলে কিংবা একদিন দুপুরে ব্যায়াম করলে তাতে ব্যয়ামটা সঠিক উপায়ে হয় না এবং শরীর সুস্থ থাকে না। খাদিজা হোসেন বলেছেন, একদিন পর পর ব্যায়াম করলে ভালো হয়। এতে মাংসপেশি বিশ্রাম পায়। একটানা ব্যায়ামে মাংসপেশি ছিঁড়ে যেতে পারে।

ব্যায়ামের পরে
ফারজানা খানমের পরামর্শ, ব্যায়াম শেষ করার পর পর কোনো ধরনের ভারী খাবার খাওয়া যাবে না। চাইলে প্রোটিন শেক পান করে নিতে পারেন। এতে আপনার শরীরের কর্মক্ষমতা ফিরে আসবে। স্বাভাবিকভাবেই ব্যায়ামের পর শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়। আধা ঘণ্টা পর হালকা খাবার খেতে পারেন। যেমন ফল কিংবা ফলের রস। আর অবশ্যই কমপক্ষে দুই ঘণ্টা পর ভারী খাবার খাবেন। অনেক জিমেই ব্যায়ামের পর গোসল করার ব্যবস্থা থাকে। তোয়ালে থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব জিনিস থাকে সেখানে। তবে কেউ চাইলে নিজের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে নিতে পারেন। আর ব্যায়ামের পর পর গোসল করা ঠিক হবে না। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে গোসল করতে হবে। তবে ঘাম শুকাতে সরাসরি ফ্যানের নিচে থাকা যাবে না। ফারজানা খানম বলেছেন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থেকে ঘাম শুকাতে। নইলে ঠান্ডা লেগে যাবে।