বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি

>
জীবনানন্দ দাশের মূল বাড়ির প্রবেশপথ
জীবনানন্দ দাশের মূল বাড়ির প্রবেশপথ

বরিশালের আলপথ, অলিগলি, নদীর পাড়ে হাঁটতেন জীবনানন্দ দাশ। কর্মজীবনও কাটিয়েছেন মায়ামাখা স্বপ্নের শহর বরিশালে
‘আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে এই বাংলায়...’ রূপসী বাংলার কবি, নির্জনতার কবি জীবনানন্দ দাশের এই কবিতায় বরিশাল ও বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। বরিশালের রূপবৈচিত্র্যে মুগ্ধ কবি তাঁর কবিতায় তুলে ধরেছেন সেসব কথা। এমন নান্দনিকতার টানেই কবি বারবার বরিশালে ধানসিড়ি নদীর তীরে আসতে চেয়েছেন।

জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯–১৯৫৪)
জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯–১৯৫৪)

কেন কবি বারবার এই বরিশালে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন, সেটা জানতে কবির বাসভবন, স্মৃতি পাঠাগারসহ রূপসী বাংলার পীঠস্থান বরিশালে কবিভক্তরা আসছেন দলে দলে। তাঁরা কবির কবিতায় খুঁজে ফেরেন তাঁর রেখে যাওয়া স্মৃতি। কেমন ছিল কবির বাড়ি? চলুন আমরা একবার ঘুরে আসি।
জীবনানন্দের শহর বরিশাল। এই বরিশালের আলপথ, অলিগলি, নদীর পাড়ে হাঁটতেন জীবনানন্দ দাশ। কর্মজীবনও কাটিয়েছেন মায়ামাখা স্বপ্নের শহর বরিশালে। এই নগরের কীর্তনখোলা নদী কবির নগরকে আরও নান্দনিক করেছে। লঞ্চ থেকে নামার আগেই সুন্দরের হাতছানি। সবুজের শহরে নেমে পায়ে হেঁটে কিংবা রিকশায় চেপে সামনে এগোলে ফজলুল হক অ্যাভিনিউ। এই সড়ক পার হয়ে ডানে ঘুরে বাঁয়ে মোড়। সড়কের নাম কবি জীবনানন্দ দাশ সড়ক (বগুড়া রোড)। এই সড়ক ধরে সামনে এগোলে চোখে পড়বে পামগাছের সারি। আর চারদিক সবুজে ঘেরা। ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে অক্সফোর্ড মিশনের গির্জা। জীবনানন্দ দাশের ভাষায় এটি লাল গির্জা হিসেবে পরিচিত। কথিত আছে, জীবনানন্দ দাশের প্রথম প্রেমিকা মুনিয়ার সঙ্গে এখানেই পরিচয় ঘটে। সে কারণেও এই গির্জার সঙ্গে কবির নিবিড় সম্পর্ক ছিল। লাল গির্জা ছাড়িয়ে কিছুটা সামনে গেলে চোখে পড়বে কবির বাসভবন ‘ধানসিড়ি’। চারদিকে সবুজে ঘেরা এই বাড়িতে থাকতেন কবি। বাড়ির বেশির ভাগ দখল হয়ে গেলেও বর্তমানে কবির স্মৃতিতে বসতভিটায় গড়ে তোলা হয়েছে জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি মিলনায়তন ও পাঠাগার। সেখানেই দর্শনার্থীরা আসেন কবিকে খুঁজতে। দোতলা এই ভবনে একটি মিলনায়তন আছে। সেখানে মাঝেমধ্যে কবিদের আড্ডা বসে। কবির জন্ম-মৃত্যুদিনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় কবিতা পরিষদ। ভবনের নিচতলাটি পাঠাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত পাঠাগারটি উন্মুক্ত থাকে।