২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

নিজেকে প্রকাশের যত দক্ষতা

ইতিবাচক মনোভাব নিজের দক্ষতা প্রকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। ছবি: অধুনা
ইতিবাচক মনোভাব নিজের দক্ষতা প্রকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। ছবি: অধুনা

জনাব মোস্তাফিজ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক। হুট করে রেগে যাওয়া যেন সহজাত প্রবৃত্তি 3তাঁর। মোস্তাফিজ সাহেবের অধীনে যাঁরা কাজ করেন, সারা দিনই সবার মেজাজ খুঁতখুঁতে ও অস্থির থাকে। পুরো অফিসের পরিবেশই কেমন যেন থমথমে থাকে। এতে অনেক তরুণ কর্মীর যেমন কাজে মন বসে না, তেমনি কাজের মান ও আগ্রহ সবার কমছে। অন্যদিকে রেজোয়ান সাহেব আরেকটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। খুবই সজ্জন হিসেবে কর্মীদের মধ্যে রেজোয়ান সাহেবের জনপ্রিয়তা বেশ। তাঁর কাছ থেকে কর্মীরা পরামর্শ, দিকনির্দেশনা পান তরুণ কর্মীরা। যেকোনো সমস্যা, সংকটে রেজোয়ান সাহেব স্থির মাথায় সময় আর ধৈর্য নিয়ে বটগাছের মতো সবাইকে আগলে রাখেন। প্রতিষ্ঠানের কর্তা ও কর্মীদের রেজোয়ান সাহেবের মতো ব্যক্তিত্ব ও ব্যবহার দক্ষতা আয়ত্তের পরামর্শ দেন আবেগকেন্দ্রিক বুদ্ধিমত্তা বা ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স বিশেষজ্ঞ এস এম আরিফুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিজীবনে যেমন আমরা নিজেদের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকি, তেমনি কর্মজীবনে আমাদের অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনেও গুরুত্ব দিতে হবে। নিজের কর্মক্ষেত্র ও অফিসের সবার মধ্যে ইতিবাচক ও অনুপ্রেরণার কর্মস্পৃহার দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’ 

হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউয়ের পডকাস্টে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ব্যক্তিত্ব আসলে নির্ধারণ করে প্রতিষ্ঠানের আচরণ কেমন। যুক্তরাষ্ট্রের ৬৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ব্যক্তিত্ব বিকাশে মনোযোগ দেয় বলে তাদের সাফল্য অন্যদের চেয়ে বেশি থাকে। ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স বিশেষজ্ঞ এস এম আরিফুজ্জামান দক্ষতা শেখার কোনো বয়স বা পদবি নেই বলে মনে করেন। সব বয়সের যেকোনো পদবির কর্মীর সবার নিজের উন্নয়ন ও কর্মস্থলের পরিবেশের মান উন্নয়নে সময় দেওয়া উচিত। তিনি দক্ষতা বিকাশে বেশ কিছু পরামর্শ দিচ্ছেন।

নিজের ব্যক্তিত্ব ও অবস্থান সম্পর্কে জানুন

আমরা নিজেরা অনেক সময় নিজের সম্পর্কে সচেতন নই। নিজের ব্যক্তিত্বের প্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকে না। অনলাইনে বেশ কিছু পার্সোনালিটি টেস্ট আছে, যার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যক্তি কেমন তা জানতে পারেন।

আপনার সহকর্মীদের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন

সবাই একই ব্যক্তিত্বের হয় না। একেকজনের বোঝার ও জানার মাত্রা ভিন্ন রকমের। একটি দলে কাজের জন্য যে যেভাবে ভাবছে, তার ভাবনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। 

পরিস্থিতি বুঝে আচরণ শেখার চেষ্টা করুন

নানা কারণে অফিসে বিভিন্ন জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন জার্নাল বা অনলাইন রিসোর্সে বিভিন্ন ঘটনার সম্পর্কে অনেক লেখা ও বিশেষজ্ঞ মতামত পড়ার সুযোগ আছে। সেসব ঘেঁটে জানার চেষ্টা করুন। 

পরামর্শ নিন ও দিন

কাজ ও আচরণে নিজের কোনো সমস্যা থাকলে তা অন্য সহকর্মীদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করুন। সহকর্মীর কোনো আচরণে বা কাজে কষ্ট পেলে তা তাকে ইতিবাচকভাবে জানান। কারও কাজে ভুল হলে সমস্যা সমাধানে তাঁকে সহায়তা করুন। অযথা বকুনি কিংবা সবার সামনে কথা শোনালে অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। 

অন্যকে বুঝুন সবার আগে: আমরা সব সময় ব্যক্তিকেন্দ্রিক আচরণ করি। নিজের আচরণ নিজের কাজের দিকেই আমাদের সব সময় ভাবনা থাকে। অফিসে অন্য সহকর্মীদের বোঝার চেষ্টা করুন। বিভিন্নজনের শখ আর কাজের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে জানুন। সহকর্মী সম্পর্কে বৈচিত্র্য আনতে অন্যদের আগ্রহ আর শখ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন।

ইতিবাচক আচরণ করুন

যেকোনো পরিস্থিতিতে কর্মক্ষেত্রে মুখে হাসি রাখুন। সবক্ষেত্রে ইতিবাচক আচরণ করুন। অবসর কিংবা বিরতিতে সহকর্মী কিংবা অধস্তন কর্মীদের সময় দিন। ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার কিংবা কাজের ভাবনা নিয়ে গল্প করুন। ছুটির দিন বা সময়গুলোতে পরস্পরের সঙ্গে গল্প কিংবা ঘোরাঘুরির মাধ্যমে কর্মজীবনের অবসাদ ও ক্লান্তি কাটানোর চেষ্টা করুন।