তরুণদের দিকনির্দেশনায় তারুণ্যের জয়োৎসব শুরু
দেশের সৃজনশীল ও উদ্যমী তরুণদের দিকনির্দেশনা দিতে শুরু হলো ‘ক্রাউন সিমেন্ট-প্রথম আলো তারুণ্যের জয়োৎসব’। আজ বুধবার সকাল ১০টায় প্রায় পাঁচ হাজার তরুণের অংশগ্রহণে এ উৎসব উদ্বোধন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সম্পর্কে ধারণা দিতে এবং চাকরি বাজারে থাকা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে এ আয়োজন।
কেআইবি মিলনায়তনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এ উৎসব শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে একুশ শতকের স্বপ্নযাত্রা নামক অধিবেশন হয়। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশের তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নবনির্বাচিত সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক, পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী হুসেইন এম ইলিয়াস, ক্রাউন সিমেন্টের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান, প্রথম আলোর যুব কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান প্রমুখ।
ক্রাউন সিমেন্টের সহযোগিতায় এই উৎসবের আয়োজক প্রথম আলো।
স্বাগত বক্তব্যে পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী হুসেইন এম ইলিয়াস বলেন, ‘উদ্যোক্তা হিসেবে নতুন কিছু শুরু করতে পুঁজি লাগে না, খুব বেশি বুদ্ধিও লাগে না। শুধু ইচ্ছা লাগে। তোমাকে যেটা বেশি সুখী করবে, সেটা করারই চেষ্টা করো।’
ক্রাউন সিমেন্টের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তরুণেরাই দেশের সম্পদ। তরুণদের অবদান স্বাধীনতাযুদ্ধে ছিল, এখনো আছে। আজ যাঁরা সফল, তাঁরা তরুণ বয়স থেকেই ব্যবসা শুরু করেছিলেন।’
বিজিএমইএর নবনির্বাচিত সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক বলেন, ‘যা কিছু আমাদের বড় করে, তা হলো আমাদের স্বপ্ন, আমাদের ইচ্ছা। সম্পদ আমাদের সীমিত করে না। উল্টো অনেক সম্পদ আমাদের খাটো করে। তাই নিজের ইচ্ছা ও স্বপ্নকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে এসেও অনেক বড় কিছু করা যায়। আমাদের একটাই লক্ষ্য, আমরা বাংলাদেশের জয় দেখতে চাই। তরুণদের জয় দেখতে চাই। তরুণেরাই সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
প্রথম আলোর যুব কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘২০১৭ সালে তরুণদের নিয়ে প্রথম আলো একটি জরিপ করে। সে জরিপে উঠে আসে, ৭৩ শতাংশ ছেলেমেয়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। এমন দেশ আমরা চাইনি। রাস্তা খুব পরিষ্কার, তোমরা হতাশার মধ্যে যাবে না। নিজেই পথ তৈরি করবে—সেটা তোমাদেরই ঠিক করতে হবে। তুমি সারা দিন যা করছ, তা তোমার লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যায় কি না—তা তোমাকে ভাবতে হবে। তুমি যদি তৈরি হও, তবে তোমার নেতৃত্ব, ভালোবাসার জন্য সারা দুনিয়া অপেক্ষা করছে।’
২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায়িক শিক্ষা অনুষদে তারুণ্যের জয়োৎসব শুরু হয়েছিল। পরে দেশের ৩২টি অঞ্চলে এই উৎসব ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অংশ নেন ১০ হাজার তরুণ। আজ তারুণ্যের জয়োৎসবের জাতীয় পর্ব। এতে সারা দেশ থেকে আসা পাঁচ হাজার তরুণ অংশ নিচ্ছেন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী আসমা সুলতানা বলেন, ‘এখানে এসে প্রায় পাঁচ হাজার বন্ধু পেলাম। বিসিএসের প্রতিযোগিতায় উত্তরণের রাস্তা খুঁজতে হবে এখান থেকে।’
চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি উদ্ভাবনী কিছু করতে চাই। কিন্তু কোত্থেকে শুরু করব, বুঝতে পারছি না। উৎসবের বন্ধুদের সঙ্গে আমার ভাবনা শেয়ার করতে এসেছি। জানতে এসেছি—উদ্যোক্তা হতে হলে কী কী করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সম্পর্কে ধারণা দিতে এবং চাকরি বাজারে থাকা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে আজ ঢাকার খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে দিনব্যাপী এই আয়োজনে থাকছে কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে ধারণা তৈরি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ, প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক সম্মেলন বিষয়ে ধারণা দেওয়া। সারা দিনে এখানে মোট ১১টি অধিবেশন ও ৫টি কর্মশালা হবে। আলোচক হিসেবে থাকবেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল হওয়া ৫৩ জন ব্যক্তিত্ব। আলোচকেরা একুশ শতকের স্বপ্নযাত্রা ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে যোগ দিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিয়ে কথা বলবেন।