টাক মাথার এত উপকার, আপনি কি জানতেন
ন্যাড়া বেলতলায় কবার যায়। কেশহীন মাথা নিয়ে কত গবেষণা! অনেকের মন খারাপ কিন্তু আছে। তবে কিছু কারণ আছে, যেগুলো শুনে যারা টেকো তাদের বরং গর্বিত হওয়া উচিত। আর টাক নিয়ে কত কবিতা ছোটবেলায় শুনেছি—
‘দাদুর মাথায় টাক ছিল, সেই টাকে তেল মাখছিল
এমন সময় বোলতা এসে হুল ফুটিয়ে পালায় শেষে
ঘুলিয়ে দিল বুদ্ধি দাদুর ফুলিয়ে দিল টাক টারে।’
এ তো গেল কবিতা। টেকোদের বুদ্ধি বরং বেশি তীক্ষ্ণ হয়। বিখাত টেকো অভিনেতাদের মধ্যে আগেকার যুগের তুলসী চক্রবর্তী আর হালের অনুপম খেরের কথাই ধরুন। হলিউডের প্রায় অনেক অভিনেতার মাথায় টাক। আর আইকনিক সব নেতা ডুয়াইট ডি আইসেন আওয়ার, উইনস্টন চার্চিল, মহাত্মা গান্ধী, ভ্লাদিমির লেনিন, নিকিতা ক্রুশভ—তাঁদের চেহারাটা মনে করুন, আপনার মন খারাপ উবে যাবে।
যাহোক, এখন টেকো হলে যে মন খারাপের কোনো কারণ নেই, তার পক্ষে দারুণ আটটি কারণ নিয়ে এবার আলোচনা করা যাক
কেশ হানি আর টাক পড়া নিয়ে পুরুষের দুর্ভাবনার অন্ত নেই। বালিশে চুলের গোছা পাওয়া উদ্বেগ সৃষ্টি করে তাদের মনে। কিন্তু এটা খারাপ নয় বরং ভালো। যদি বলি চুল পড়ার আছে ইতিবাচক দিক। তাই একে নেগেটিভ ভাবে না দেখে বরং এর পজিটিভ দিক দেখে মন শক্ত করুন।
১. টেকো হলে ক্যানসারের ঝুঁকি কম। প্রোস্টেট ক্যানসার নিয়ে এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের তরুণ বয়স থেকে কেশ বিরল হতে থাকে মাথায়, তাদের প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ কম। এবার ভাবুন, মাথায় অনেক চুলো লোকের তুলনায় আপনি বরং এগিয়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, টাক মাথার লোকদের শরীরে দীর্ঘকাল টেস্টোস্টেরন হরমোনের মুখোমুখি হবার জন্য এমন বিরল কেশ হয়।
২. দেহের বিপাক কর্ম হবে কার্যকর। পুং হরমোন টেস্টোস্টেরনের মাথার কেশে প্রভাব এমন থাকলেও দেহের বিপাককে শক্তিমান করতে এর জুড়ি নেই। আর শরীর পায় পুরুষালি আকার, ওজন হয় স্বাস্থ্যকর আর পেশি হয় সুগঠিত। মুখে থাকে কম চর্বি, তাই মুখমণ্ডল হবে দারুণ পুরুষালি, ঠিক যেন ভাস্কর্য মুখাবয়ব।
৩. টাকদের দেখা যাবে অনেক পুরুষালি, অনেক ম্যাসকুলিন। টেকো পুরুষ আর ঝাঁকড়া চুলো পুরুষের মধ্যে কার কেমন পছন্দ, এ বিষয়ে নারীদের মানে তরুণীদের মতামত নেওয়া হলো। একই পুরুষের কয়েকজন চুলো আর এদেরকেই ডিজিটালি টেকো বানিয়ে রাখা হলো ছবিতে। যারা টেকো এদেরকে দেখা গেল তুলনামুলক বেশি লম্বা, শক্তিশালী আর দৃঢ় প্রত্যয়ী। তাই নারীরাও ঝুঁকেছে সেদিকে বেশি। আর গবেষণা বলে, টেকো পুরুষ কিছু পেশায় মানানসই বেশি যেমন: পুলিশ, অগ্নিনির্বাপণকর্মী আর সেনাসদস্য।
৪. বাঁচে সময়, বাঁচে অর্থ। শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, চিরুনি, ব্রাশ, ক্রিম, হেয়ার ড্রেসার ব্যবহারের ঝামেলা নেই। কেশসজ্জা, গ্রুমিং—এসবের সময় খরচ হয় না। এদিকে সময় যেমন বাঁচে, হেয়ারস্টাইল করতে করতে সময়ের অপচয় কমে।
৫. টুপি পরলে দারুণ লাগে টেকো মাথায়। টেকো মাথায় দিলেন হ্যাট আর চোখে রোদচশমা। দারুণ লাগবে দেখতে। যেকোনো হ্যাটেই মানাবে টাক মাথায়।
৬. বিজনেস ডিলে অনেক সুবিধা। টেকো লোকদের নেতৃত্বের গুণ আর দেখন ভাব থাকে বেশি। মনে হয় অনেক দৃঢ় প্রত্যয়ী আর শক্তিশালী। আর প্রভাব বিস্তারী চেহারা এসব গুণ ব্যবসা জগতে বাড়তি সুবিধা দেয়। যাদের মাথায় কেশ পড়ে আর মাথা শেভ করা নয় এদের মনে হয় দুর্বল, তাদের মনে নিরাপত্তার অভাবে এমন মনে হয়। তাই অনেকে বলেন, কেশ বিরল মাথা হলে পুরো কামিয়ে ফেলা ভালো। বিশেষজ্ঞরা বলেন, পৃথিবীর অনেক প্রভাবশালী নেতাই ছিলেন টাক। তাদের উদাহরণ তো শুরুতেই দিয়েছি।
৭. টেকো হলে চুল পড়ছে এমন দুশিন্তা থেকে রক্ষা পেলেন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, মাথা থেকে চুল পড়ছে—এই চিন্তা পুরুষের বড় চিন্তা। আমি টেকো হয়ে যাচ্ছি, এই চিন্তা মনকে দুর্বল করে দেয়। ত্বক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া, দৈনন্দিন কেশে নানা দ্রব্য ব্যবহার আর কয়টি চুল পড়ল, তা গোনা সময়ের অপচয়। কেশ বিদায় নিলে বুঝবেন, এবার দুশ্চিন্তা গেল।
৮. মনে হবে না বুড়ো হচ্ছেন। কেশ থাকলে এ সময় তাতে রুপালি রং আসবে। আর টাক মানে কেশে পাক ধরা নিয়ে আর দুশ্চিন্তা নেই। বুড়ো হয়ে গেলেন এ নিয়ে দুর্ভাবনা নেই। ত্বকে কয়েকটা ভাঁজ ছাড়া তরুণই থাকলেন।
প্যাট্রিক বা ব্রুস উইলিস কত দিন তরুণ থেকে গেলেন। টেকোরা অনেক আকর্ষণীয় হয়ে থাকেন। প্রিন্স উইলিয়ামকে বলা হচ্ছে, সবচেয়ে আবেদনময় পুরুষ অথচ তাঁর মাথায় টাক। গবেষণায় দেখা গেল, নারীরা টেকোদের বেশি বুদ্ধিমান আর বিজ্ঞ মনে করেন। এবার ভাবুন, তারপরও আপনি টাক বলে দুশ্চিন্তা করবেন কি না।