কালো ব্রণ তাড়াতে
বর্ষার আর্দ্রতায় ত্বকের সমস্যা বেড়ে যায় বহুগুণ। ভেজা আবহাওয়ার কারণে ত্বকে ময়লা জমে সহজেই। এ থেকেই হতে পারে ব্ল্যাক হেডসের মতো সমস্যা। এটিকে ত্বকের ছোট সমস্যা মনে হলেও ব্ল্যাক হেডস ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে দেয়। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করলে অনেক সময় স্থায়ীভাবেও দাগ হয়ে যেতে পারে।
মুখে তৈলাক্ত ভাব ও ধুলাবালি জমে থাকার কারণে ত্বকে ব্ল্যাক হেডসের মতো সমস্যা দেখা দেয়। ব্ল্যাক হেডস একধরনের ব্রণ। এতে ত্বকে একধরনের কালো গুঁড়ি গুঁড়ি ছোপের মতো তৈরি হয়; যা সাধারণত নাক, কপাল ও গালের আশপাশেই বেশি দেখা যায়। এটিকে একধরনের খোলা ছিদ্রযুক্ত ব্রণও বলা যেতে পারে। যা তেল, ধুলো–বালি ও মৃতকোষ দিয়ে ভরা থাকে। ব্ল্যাক হেডসের কারণে মুখের লাবণ্য একেবারেই হারিয়ে যায় বলছিলেন বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি পারলারের স্বত্বাধিকারী শারমিন কচি।
কোন ধরনের ত্বকে বেশি হয় ব্ল্যাক হেডস
সাধারণত তৈলাক্ত ত্বক ও শুষ্ক ত্বকে ব্ল্যাক হেডস হয় বেশি। তবে ত্বকের সব জায়গাতে দেখা যায় না। বিশেষ করে নাক ও নাকের চারপাশে গালের ওপরের অংশ এবং থুতনিতে বেশি ময়লা ও তেল আটকায় বলে বেশি ব্ল্যাক হেডস হয়। এগুলো দেখতে ছোট ছোট গোটার মতো আর এর মুখ হয় সাদা। চাপ দিলে ছোট ছোট সাদা অথবা কালো শাঁস বের হয়।
কত দিন পর পরিষ্কার করা উচিত
ব্ল্যাক হেডস খুব বেশি পরিমাণে হলে প্রথম দিকে সপ্তাহে তিন দিন। এরপর পরিমাণ কমে এলে সপ্তাহে এক দিনও পরিষ্কার করা যায়।
ত্বকের যা ক্ষতি হয়
এতে ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। ত্বক উজ্জ্বলতা ও লাবণ্য হারায়। এ ছাড়া ত্বক অমসৃণ করে তোলে ব্ল্যাক হেডস। ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করেও ব্ল্যাক হেডস দূর করা যেতে পারে।
যেসব উপাদানে দূর হবে ব্ল্যাক হেডস
লেবু
লেবুর ওপর চিনি বা লবণ দিয়ে ত্বকে ঘষে নিন। ১০-১২ মিনিট ঘষে নেওয়ার পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
দারুচিনি
দারুচিনি ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখতে বেশ ভালো কাজ করে। ১ চা-চামচ দারুচিনি গুঁড়ার সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে লাগাতে হবে এবং ২০ মিনিট পর ধুলে ব্ল্যাক হেডস অনেকটাই কমে যাবে।
অ্যালোভেরা
ব্ল্যাক হেডস বা ওয়াইট হেডস, ব্রণ বা মুখের অতিরিক্ত তেল দূর করার জন্য অ্যালোভেরা জেলের তুলনা হয় না। শুধু এই জেল মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। মুহূর্তেই ত্বক উজ্জ্বলতা বেড়ে যাবে।
নারকেল তেল
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকে নারকেল তেল ব্যবহার করে লাগিয়ে সকালে ধুয়ে ফেলুন। তবে তেলে ব্রণ তৈরি হলে ব্যবহার না করাই ভালো।
ভিনেগার
ভিনেগারে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ত্বকে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করে। কিছুটা তুলায় ভিনেগার লাগিয়ে ত্বকে ব্যবহারের পর তা শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
আরও কিছু পরামর্শ
ব্ল্যাক হেডস পরিষ্কার করার পর টোনিং করতে হবে অবশ্যই। কারণ, টোনিং না করলে লোমকূপের ছিদ্র বড় হয়ে যাবে। বিশেষ কিছু মালিশের মাধ্যমে ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডস পরিষ্কার করা যায়। বিশেষ এই পদ্ধতিগুলো জেনেই মালিশ করতে হবে। এর ফলে ত্বকের অন্যান্য সমস্যাও দূর হবে। প্রতিদিন অন্তত দুবার মুখ পরিষ্কার করতে হবে। শরীর ও মুখ মোছার জন্য আলাদা তোয়ালে ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়া ব্ল্যাক হেডসের সমস্যা কমাতে যতখানি সম্ভব তেলে ভাজা খাবার কম খেতে হবে।