এই গরমে যা খাবেন...

প্রচণ্ড গরমে অবধারিতভাবেই শরীর ঘামে। এতে করে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও ইলেকট্রোলাইট চলে যায়। পানিশূন্যতা এড়াতে ডাবের পানি পানে উপকার পাওয়া যায়। ছবিটি বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে তোলা। ছবি: আবদুস সালাম
প্রচণ্ড গরমে অবধারিতভাবেই শরীর ঘামে। এতে করে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও ইলেকট্রোলাইট চলে যায়। পানিশূন্যতা এড়াতে ডাবের পানি পানে উপকার পাওয়া যায়। ছবিটি বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে তোলা। ছবি: আবদুস সালাম

‘উফ্‌, যা গরম’—এই গরমে কথাটি একবারের জন্যও বলেননি, এমন লোক কমই পাওয়া যাবে। দিনের পর দিন তাপমাত্রার গ্রাফ শুধু ঊর্ধ্বমুখীই হচ্ছে। ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বৃষ্টি আর ঠান্ডা বাতাসের জন্য হাহাকার।

এমন প্রচণ্ড গরমে কিছু শারীরিক সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। পেটের সমস্যা এর অন্যতম। তাই গরমের দিনে একটু বুঝেশুনেই খাওয়াদাওয়া করতে হবে বলে জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক খুরশীদ জাহান। তিনি বলেন, তেলে বা ঘিয়ে ভাজা খাবার একেবারেই বাদ দেওয়া ভালো। এগুলো হজমে সমস্যা করে। শাকসবজি বেশি করে খেতে হবে। মাংস কম খেয়ে পাতে বেশি করে নিতে হবে মাছ। সকালে খাওয়া যেতে পারে রুটি, সবজির মতো হালকা খাবার। দুপুর ও রাতের খাদ্যতালিকায় খিচুড়ি, পোলাও বাদ দিয়ে সাদা ভাতকে প্রাধান্য দিতে হবে।

কর্মজীবী মানুষের জন্য এই তীব্র গরম বেশ বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে। একদিকে চলাফেরার কষ্ট, অন্যদিকে আছে পছন্দসই খাবারের সংস্থান। কর্মজীবীদের অনেকেই ‘স্ট্রিট ফুড’ বা ‘জাংক ফুডের’ ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু রাস্তাঘাটের এসব খাবার খোলা পরিবেশে তৈরি হওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি থাকে। দেখা যায়, সকালে বানানো খাবার বিক্রি হয় রাতেও। এই দীর্ঘ সময়ে পচনশীল এসব খাবারে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। এতে করে খাদ্য পরিপাকেও সমস্যার সৃষ্টি হয়।

প্রচণ্ড গরমে অবধারিতভাবেই শরীর ঘামে। এতে করে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও ইলেকট্রোলাইট চলে যায়। পানিশূন্যতা এড়াতে ডাবের পানি পানে উপকার পাওয়া যায়। ছবিটি বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে তোলা। ছবি: আবদুস সালাম
প্রচণ্ড গরমে অবধারিতভাবেই শরীর ঘামে। এতে করে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও ইলেকট্রোলাইট চলে যায়। পানিশূন্যতা এড়াতে ডাবের পানি পানে উপকার পাওয়া যায়। ছবিটি বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে তোলা। ছবি: আবদুস সালাম

অধ্যাপক খুরশীদ জাহান বলেন, একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রাস্তার ধারের খাবার যাঁরা বেশি খান, তাঁদের সারা বছরই পেটের পীড়া থাকে। এসব খাদ্যে বিষক্রিয়াও হয়। এ জন্য এসব খাবার এড়িয়ে যাওয়া ভালো। তবে যাঁরা নিরুপায়, তাঁদের গরম খাবার বেছে খেতে হবে। ঠান্ডা, বাসি খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে।

প্রচণ্ড গরমে অবধারিতভাবেই শরীর ঘামে। এতে করে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও ইলেকট্রোলাইট চলে যায়। ফলে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। পানি ও ইলেকট্রোলাইটের অভাব পূরণ করতে পানীয় পানের বিকল্প নেই। তাই বলে রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া শরবত খাওয়া যাবে না। কারণ, এসব পানির বিশুদ্ধতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন আছে, তেমনি শরবত বানানোও হয় অস্বাস্থ্যকরভাবে। এতে করে ভাইরাল হেপাটাইটিসের সংক্রমণ হতে পারে।

পুষ্টিবিদ খুরশীদ জাহান বলেন, যদি সম্ভব হয়, তবে ঘরে ফোটানো বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে রাখতে হবে। পরিমিত পরিমাণে স্যালাইনও খাওয়া যেতে পারে। তবে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থাকলে বুঝেশুনে স্যালাইন খেতে হবে। বাজারে পাওয়া বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি পানীয়র চেয়ে ডাবের পানি, লেবু, বেলসহ বিভিন্ন ফলের শরবত খাওয়া ভালো।