উচ্ছলতায় উজ্জ্বল সময়
টিনএজ, অর্থাৎ ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের ফ্যাশনধারার ব্যাপ্তি এখন দুনিয়াজুড়ে। তবে এ বয়সের আসল সৌন্দর্য তাদের উচ্ছলতা। মেকআপ ছাড়াও যে চেহারা প্রাণবন্ত হতে পারে, সেটা ওদের দেখলেই বোঝা যায়। তাদের পোশাকআশাকেও ফুটে ওঠে সহজাত উচ্ছলতা।
রঙিন চশমা চোখে পৃথিবী দেখার সময়টাও রঙিন। ইচ্ছা হলেই ডানা মেলে দূরে হারিয়ে যাওয়ার বাসনা এ বয়সেই পূর্ণতা পেতে শুরু করে। নিজেকে নতুন করে সাজানোর চিন্তাধারাও এ বয়সেই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। পথের পাঁচালী–র দুর্গার মতো আজকের কিশোরী প্রতিদিন শাড়ি পরে না। টিনএজ, অর্থাৎ ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের ফ্যাশনধারার ব্যাপ্তি এখন দুনিয়াজুড়ে। তবে এ বয়সের আসল সৌন্দর্য তাদের উচ্ছলতা। মেকআপ ছাড়া চেহারাও যে প্রাণবন্ত হতে পারে, সেটা ওদের দেখলেই বোঝা যায়।
সাজবিহীন টিন?
তারুণ্যের স্বাভাবিকতাই সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ। এমনটাই বললেন নুজহাত খান। মেকআপ করতেই যদি চায়, তবে ভ্রুতে একটু জেল, হালকা মাসকারা আর গ্লসি গোলাপি লিপবামই যথেষ্ট। ভ্রুজোড়া ব্রাশ করতে পারেন নিচ থেকে ওপরের দিকে, ভেতর থেকে বাইরের দিকে। এর বাইরে বড়জোর ঠোঁটে শিশিরের উজ্জ্বল লিপগ্লস, একটু হাইলাইটার (চিক বোন হাইলাইটার) আর চোখের পাতায় শিমার কিংবা উজ্জ্বল আইশ্যাডো, সঙ্গে নিওন আইলাইনার। মেকআপ করলে নিয়মমতো পরিষ্কারও করতে হবে অবশ্যই।
স্বাস্থ্যকর জীবনধারা
ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস হতেই পারে। সুষম খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা-বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে। অনিয়ম নয়। রাত জাগা না। বারবার মুখ ধোয়া, ময়েশ্চারাইজার আবশ্যক। কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুতে পারেন রোজ দুবার করে। বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতেই হবে। ঘুমের আগে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেওয়া ভালো, ঠোঁটে লিপবাম।
পরিষ্কার, উজ্জ্বল ত্বক
বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি বলেন, ঘুম ভাঙার পর কিংবা সকালে গোসল করার সময় জেল বা ফোম (বেশি তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে) ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়া প্রয়োজন। মুখ ধোয়ার পর এমন টোনার ব্যবহার করতে হবে, যাতে পিএইচের ভারসাম্য বজায় থাকে। সপ্তাহে এক দিন মুলতানি মাটি আর গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগালে উজ্জ্বলতা বজায় থাকে (১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে)। সপ্তাহে এক দিন ক্লিনজার দিয়ে ডিপক্লিনজিং কিংবা সুজি টেলে নিয়ে (সুজি কালো হয়ে যাবে) ক্লিনজার বা ম্যাসাজ ক্রিমের সঙ্গে মিলিয়ে স্ক্রাবিং করা যায়। ১৫ মিনিট পর্যন্ত বৃত্তাকারে ওপর থেকে নিচে, নিচে থেকে ওপরের দিকে আলতোভাবে মালিশ করা যেতে পারে। স্টিমও নেওয়া যায়। গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে পানি নিংড়িয়ে নিয়ে মুখের ওপর কিছুক্ষণ রাখলে ব্ল্যাকহেডসও কমে। বাইরে থেকে ফিরে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। এরপর পানি আর গোলাপজলে বানানো বরফ লাগালে ত্বকে পোড়াভাব থাকে না।
ব্রণ হলে
ব্রণ-ব্ল্যাকহেডস খোঁটাখুঁটি করা যাবে না। সপ্তাহে এক–দুদিন প্যাক লাগাতে পারেন, তবে সমস্যা বেশি হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়াই ভালো বলেই জানালেন শারমিন কচি।
• পরিমাণমতো চন্দনবাটার সঙ্গে সামান্য কমলালেবু বা মালটার রস আর এক চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
• তুলসীপাতাবাটা আর ডিমের সাদা অংশের মিশ্রণ মুখে লাগানো যায়। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিতে হবে।
• ব্ল্যাকহেডস থাকলে মধু ও সামান্য কমলালেবু বা মালটার রসের মিশ্রণ নাক ও এর চারপাশে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর আলতোভাবে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগানো যায়। ব্ল্যাকহেডসের স্থানে টমেটোর দানা আর রস ঘষতে হবে ৫ থেকে ১০ মিনিট।
চুলের যত্নে
• রোদ, ময়লা, ক্লোরিন আর গরম পানি থেকে চুলকে দূরে রাখতে হবে।
• গোসলের আগে জলপাই তেল বা ক্যাস্টর অয়েল মালিশ ভালো, তবে খুব বেশি মালিশ নয়।
• চিরুনির দাঁতের প্রান্তভাগ যেন মসৃণ ও গোল হয়, নইলে নরম ব্রাশ বেছে নিতে হবে।
• ছয় সপ্তাহ অন্তর চুল ছেঁটে নেওয়া ভালো।
• রাসায়নিক প্রয়োগ, ড্রায়িং-স্ট্রেইটনিং-কার্লিং প্রভৃতি এড়িয়ে চলতে হবে।