গত বছরের মতো এবারও গৃহকেন্দ্রিক ঈদ আয়োজন হচ্ছে। ঈদের সাজটাও তেমনই।
ঈদের খুশির সঙ্গে কোনো আনন্দেরই তুলনা চলে না। তবে মহামারিকালে ঈদ আসে অন্য রূপে। পরিস্থিতি যেমনই হোক, ঈদের খুশির দোলা মনে লাগেই। জীবন তো আর থেমে থাকার নয়। গৃহবন্দী সময়ে ঈদের আয়োজনটা হয় ভিন্নভাবে। গত বছরের মতো এবারও গৃহকেন্দ্রিক ঈদ আয়োজন হচ্ছে। ঈদের সাজটাও তেমনই।
ঘুম ভেঙে উঠেই উৎফুল্ল মনটা। আহ! আজ ঈদ। সকালের এই অনুভূতিতেই যেন আনন্দের বহিঃপ্রকাশটা হয় দারুণভাবে। ঈদের সকালে গোসল সেরে সতেজ অনুভূতিতে হালকা রঙের পোশাকে দিনটা শুরু হোক। সকালের সাজে থাকুক স্নিগ্ধতা, মিষ্টি একটা আমেজ। হালকা সাজেই পূর্ণতা পায় ঈদের সকালটা। সারা দিনের জন্যই কাজে আসবে এই হালকা সাজ। এর ওপরেই কিন্তু বাকি বেলার ‘লুক’ বদলাতে থাকে। প্রতি বেলায় পুরো ‘লুক’ মুছে, নতুন করে পুরো ‘লুক’ তৈরি করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। রেড বিউটি স্যালনের রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলছিলেন এমনটাই।
শোভন মেকওভারের কসমেটোলজিস্ট শোভন সাহা বললেন, দুপুরের সাজে চোখ দুটিকে ‘ফোকাস’ করা যেতে পারে। রঙিন আইলাইনার ব্যবহারে সাজটা দারুণ হবে। দুই বা তিন স্তরে হতে পারে এই আইলাইনারের ব্যবহার। রাতের সাজে বেস, কমপ্যাক্ট, হাইলাইটার, ব্লাশ অন থাকতে পারে। আভিজাত্য আনবে ফিউশন স্মোকি আই।
কেমন হতে পারে তিন বেলার সাজ, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে।
সতেজ সকালে
সকালে হালকা ফাউন্ডেশন, হালকা রঙের আই শ্যাডোর সঙ্গে ঠোঁটে রাখতে পারেন নুড রং। হালকা বেসের মেকআপে প্রয়োজনমতো পাউডার, কনসিলার ব্যবহার করতে পারেন। হালকা করে কনট্যুরিং করতে পারেন। হালকা ব্লাশ অন ব্যবহার করা যেতে পারে। হালকা রঙে আইশ্যাডোর সঙ্গে থাকতে পারে মাশকারা। চুলটাও রাখুন সতেজ, আরামদায়ক সাজে। সকালের শ্যাম্পু করা, পরিষ্কার চুল ব্লো-ড্রাই বা আয়রন করেও নেওয়া যেতে পারে। এভাবেই হতে পারে সকালের স্নিগ্ধ সাজ। বয়সের ভেদাভেদ তো খানিকটা থাকেই। শৈশব-কৈশোর তো আপন আলোয় উজ্জ্বল। বাড়ির বউ হয়তো একটা টিপ পরে নিলেন, তাঁর লিপস্টিকটা হয়তো একটু উজ্জ্বল রঙের হতে পারে। বাড়ির গুরুজন হয়তো চুলটা বেঁধে রাখলেন হাত-খোঁপা করে।
গ্রীষ্মের দুপুরে ঈদের আমেজ
রোদ কিংবা ঝড়ের গ্রীষ্মে খুব জাঁকজমক সাজ ভালো লাগে না। দুপুরেও হালকা রঙের পোশাক মানানসই। দুপুরের সাজে বেসটা একটু ম্যাট হতে পারে। হাইলাইটার না দেওয়াই ভালো। এই সময়ের সতেজ মেকআপের সঙ্গে চওড়া আইলাইনার মানানসই। ত্বকের টোন বা মিষ্টি টোনের ব্লাশ অন হতে পারে। ঠোঁটেও থাকুক হালকা রং। সতেজ দেখাবে দুপুরেও। চুলটা একটু গুছিয়েও বাঁধতে পারেন, আবার এলোমেলোভাবেই বেঁধে নিয়ে ছেড়ে রাখতে পারেন। চুলের নিচের দিকটায় একটু ঢেউ খেলিয়ে নিতে পারেন।
রাতের আভিজাত্যে
সন্ধ্যা বা রাতের সাজে ভারী মেকআপ থাকতে পারে। পোশাকের সঙ্গে মানানসই হাইলাইটার ব্যবহার করতে পারেন, সোনালি বা রুপালি টোনের হাইলাইটার বেছে নিতে পারেন। ব্লাশ অন হতে পারে গাঢ় রঙের, ঠোঁটেও থাকতে পারে উজ্জ্বল রং। লাগাতে পারেন লিপগ্লস। চোখটা সাজাতে পারেন রঙিন করে, কিংবা করুন স্মোকি আই। স্মোকি আই করতে পোশাকের যেকোনো একটা রঙের শেড মিলিয়ে নিন কালো রঙের সঙ্গে, হয়ে গেল ফিউশন স্মোকি আই। একটু অন্যভাবে বাঁধতে পারেন চুলটা। সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্রে নাই–বা হলো যাওয়া, পছন্দমতো করে জাঁকজমক সাজে চুল সাজাতে কারও সাহায্য নিন বাড়িতেই। হয়তো চুল সাজানোর জন্য চুলের কিছু অংশে খানিকক্ষণের জন্য ক্লিপ আটকে রাখা প্রয়োজন, একা একা তা করা মুশকিল। বাড়ির কারও সাহায্য তো নিতেই পারেন অনায়াসে আগে থেকেই সময় করে, মাথা খাটিয়ে নানান সাজ চেষ্টা করতে পারেন বাড়িতে। চুল ছেড়েও রাখতে পারেন, আবার কিছুটা আটকে কিছুটা ছেড়েও রাখতে পারেন। কার্ল করে ছেড়ে রাখলে ভালো দেখায়। পনিটেইল হতে পারে সামনে থেকে চুল নিয়ে। পেছনে করতে পারেন কার্ল, একটু পাফ করেও নিতে পারেন।