ঈদে মেহ্জাবীনের বিশেষ রান্না
>করোনাকালের ঘরবন্দী সময়ে রান্নাবান্না করেছেন অভিনেত্রী মেহ্জাবীন। যা শিখেছেন তা মায়ের রান্না দেখেই। নিজের ইউটিউব চ্যানেলেও দিচ্ছেন রান্নার ভিডিও। ঈদের দিনও বিশেষ পদ রান্না করবেন মেহ্জাবীন। তিনটি পদের রেসিপি দিয়েছেন নকশার পাঠকদের জন্য।
করোনাকালে আরেকটি ঈদ সমাগত। তাই এবারের ঈদুল আজহায় নেই বাইরে ঘোরাঘুরির আয়োজন। অভিনেত্রী মেহ্জাবীন প্রতিবারই ঈদের দিনটি বাদে বাকি দিনগুলোতে ঘোরাঘুরি করতে পছন্দ করেন। তবে ঈদুল ফিতরে সেটি হয়নি, এই ঈদেও তা হচ্ছে না। তবে ঈদের দিনগুলোতে কাছের কিছু বন্ধুর সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন তিনি, নানা কারণে যাদের সঙ্গে দেখা হয়নি প্রায় ছয় মাস। আর অবশ্যই বাইরে কোথাও নয়। বন্ধুরা তাঁর বাড়িতে আসবে, নয়তো তিনি যাবেন তাদের বাড়ি।
নিজেকে বড় রাঁধুনি মানতে নারাজ মেহ্জাবীন। সময় পেলে অবশ্য ভালোবাসেন রান্নাবান্না করতে। শিখেছেন কার কাছে? মেহ্জাবীন জানালেন, এখনো শিখছেন রান্না, শেখার বাকি অনেক কিছু। করোনাকালের ঘরবন্দী সময়টাতেই শিখেছেন কিছু রান্না। নিজের ইউটিউব চ্যানেলেও নিজের করা রান্নার ভিডিও রেখেছেন।
মেহ্জাবীন বলেন, ‘যতটা শিখেছি, মাকে দেখেই শিখেছি। যেখানে যত মজার খাবারই খাই না কেন, মায়ের হাতের রান্নার মতো তৃপ্তি পাই না কোনো খাবারেই। মায়ের রান্নার স্বাদ মুখে লেগে থাকে।’ চিকেন বিরিয়ানি, বিফ বিরিয়ানি আর দেশি ঘরানার রান্না খেতে ভালোবাসেন এই অভিনেত্রী। ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছেন, বাড়িতে প্রতি শুক্রবার বিরিয়ানি রান্না হচ্ছে। পরিবারের সদস্যরাও পছন্দ করেন বিরিয়ানি।
ঈদের দিন বিশেষ কটি পদ রান্না করবেন বলে জানালেন মেহ্জাবীন। আর নকশার পাঠকদের জন্য তৈরি করে দিলেন বিফ বিরিয়ানি, বোরহানি আর লাড্ডু।
গরু বিরিয়ানি
উপকরণ: গরুর মাংস ১ কেজি, বাসমতী চাল ১ কেজি, দই ১ কাপ, টমেটো ৫টি, কাঁচা মরিচ স্বাদমতো, পেঁয়াজ ৩-৪টি, তেল ১ কাপ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, গোটা গোলমরিচ (কালো) ১ চা-চামচ, এলাচি ৪-৫টি, তেজপাতা ৩-৪টি, দারুচিনি ৩টি, লং ৮-৯টি, স্টার অ্যানিস ২টি, লবণ দেড় টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, লাল মরিচগুঁড়া দেড় টেবিল চামচ, জায়ফলগুঁড়া ১ চা-চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, জয়ত্রীগুঁড়া ১ চা-চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, বিরিয়ানি মসলা ১ প্যাকেট, জাফরান পরিমাণমতো, পুদিনাপাতা পরিমাণমতো, পানি পরিমাণমতো ও দুধ (জাফরান ভেজানোর জন্য)।
প্রণালি: চাল আধা সেদ্ধ করে রেখে দিন আলাদাভাবে। এবার তেলে পেঁয়াজ ভেজে নিন। সোনালি-বাদামি হয়ে এলে অর্ধেকটা পেঁয়াজ তুলে রাখুন বেরেস্তার জন্য। এবার আদাবাটা, রসুনবাটা, গোলমরিচ, লবণ, তেজপাতা, দারুচিনি, লং, এলাচি, হলুদগুঁড়া, জিরাগুঁড়া, লাল মরিচগুঁড়া, স্টার ফুল ও টমেটোকুচি দিন। মসলার সুন্দর ঘ্রাণ পাবেন। কিছুক্ষণ পর মাংস দিয়ে দিন। ২০-২৫ মিনিট কষাতে হবে। এরপর একে একে যোগ করুন জায়ফলগুঁড়া, জয়ত্রীগুঁড়া, বিরিয়ানি মসলা ও দই। আরও ২০-২৫ মিনিট কষাতে হবে।
কষানো হয়ে গেলে অর্ধেকটা মাংস তুলে রাখুন। এবার বিরিয়ানির স্তর সাজানোর পালা। মাংসের প্রথম স্তরের ওপর আধা সেদ্ধ চালের অর্ধেকটা বিছিয়ে দিন। এর ওপর বেরেস্তা ও পুদিনাপাতার একটি স্তর তৈরি করুন। তুলে রাখা মাংস দিয়ে এবার নতুন একটি স্তর তৈরি করুন। তার ওপর বাকি চালটুকু দিয়ে আরেকটি স্তর করুন। আবার তৈরি করুন বেরেস্তা ও পুদিনাপাতার স্তর। এবার জাফরান গোলানো দুধ বা পানি দিন এর ওপর (চামচের সাহায্যে, একটু একটু করে, যাতে ভেতর পর্যন্ত ঢুকে যায়, এতে চালের কিছু অংশ রঙিন হবে, কিছু অংশ সাদা থাকবে)। এবার মরিচের ফালি দিন। ঢাকনা দিয়ে ১৫-২০ মিনিট দমে রাখুন। নামিয়ে পরিবেশন করুন।
বোরহানি
উপকরণ: দই ১ কাপ, সাদা গোলমরিচ আধা চা-চামচ, শর্ষেগুঁড়া ১ চা-চামচ, পুদিনাপাতা ১ কাপের তিন ভাগের এক ভাগ (বেটে নিতে হবে), ভাজা জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, ভাজা ধনেগুঁড়া আধা চা-চামচ, লাল মরিচগুঁড়া স্বাদমতো, আদাবাটা আধা টেবিল চামচ, মরিচবাটা স্বাদমতো, চিনি ২ টেবিল চামচ, বিট লবণ সিকি চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো ও পানি আধা কাপ।
প্রণালি: প্রথমে দই ও পানি ব্লেন্ড করে নিন। মসৃণ হয়ে এলে বাকি উপকরণ যোগ করে আবার ব্লেন্ড করুন। ব্লেন্ড করা হলে ফ্রিজে রেখে একটু ঠান্ডা করে নিয়ে গ্লাসে ঢেলে পুদিনাপাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
লাড্ডু
উপকরণ: বেসন ২ কাপ, ঘি ২ কাপ, সবুজ এলাচিগুঁড়া ১ চা-চামচ, খাবার রং (পছন্দমতো রঙের) সামান্য, বেকিং সোডা ২ চিমটি, চিনি ১ কাপ বা স্বাদমতো, পানি পরিমাণমতো ও পেস্তাকুচি সাজানোর জন্য।
প্রণালি: একটি পাত্রে বেসনের সঙ্গে খাওয়ার রং ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। পরিমাণমতো পানি দিন। বেকিং সোডা দিয়ে আবার ভালোভাবে মিশিয়ে নিন, যাতে কোনো শক্ত দানা না থাকে। অন্য একটি পাত্রে ঘি গরম করে এতে ওই মিশ্রণ যোগ করুন, আঠালো হয়ে উঠবে।
চুলায় আলাদা একটি পাত্রে চিনির শিরা তৈরি করুন। ৩ কাপ চিনির জন্য ২ কাপ পানি নিতে হবে, যাতে গাঢ় শিরা তৈরি হয়। মিশ্রণটি যখন ফুটতে থাকে, তখন সামান্য সবুজ এলাচিগুঁড়া যোগ করে নেড়েচেড়ে দিতে হবে। লাড্ডুর মিশ্রণটি এই সিরাপে দিতে হবে, তা আরও আঠালো হয়ে উঠবে। কিছুক্ষণ পর মিশ্রণটি হাতে ধরার মতো ঠান্ডা হয়ে এলে (চিনিটাও একটু শক্ত হয়ে আসবে) গোল করে লাড্ডু বানিয়ে পরিবেশন করুন অথবা সাজিয়ে রাখুন। প্রতিটি মিষ্টির ওপর কিছু পেস্তাকুচি হালকাভাবে গেঁথে পরিবেশন করুন।