আমি পাকিস্তানি, পড়ি করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিষয় বাংলা

চীন, জাপানসহ বহু দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা পড়ার সুযোগ আছে। এমনকি পাকিস্তানের করাচি বিশ্ববিদ্যালয়েও আছে বাংলা বিভাগ। সেই বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ তাহির ওয়াহিদ জানিয়েছেন বাংলায় পড়ার অভিজ্ঞতা

করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ
ছবি: সংগৃহীত

আমার মাতৃভাষা পাঞ্জাবি আর জাতীয় ভাষা উর্দু। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি তৃতীয় বর্ষে পঞ্চম সেমিস্টারে পড়ছি। বাংলা বিভাগে। এ বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুব বেশি নয়। পাঁচ–ছয়জন। আমাদের বিভাগে দুজন শিক্ষক আছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন শুধু বাঙালি। আমি অনলাইনে বাংলা জানা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে বাংলা শিখেছি।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে চার বছর মেয়াদের ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালু আছে। আমাদের বিভাগে প্রবেশের মুখেই বাংলাদেশের আহসান মঞ্জিল, স্মৃতিসৌধ, কক্সবাজারের ছবি দেখতে পাবেন। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো বিভাগগুলোর একটি হিসাবে ১৯৫৩ সালে চালু হয় বাংলা বিভাগ। আমরা বাংলা লেখার প্রতি বেশ গুরুত্ব দিই। শিক্ষকেরাও নিয়মিত বাংলা বই ও গবেষণা প্রকাশ করেন। এখানে পড়াশোনা শেষ করে অনেক শিক্ষার্থী অনুবাদক হিসেবে কাজ করেন। অনেকেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজের সুযোগও পান।

মোহাম্মদ তাহির ওয়াহিদের বাংলা লেখার খাতা
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম বছরে আমরা বাংলা পদ্য ও সাহিত্য সম্পর্কে ধারণা পাই। বাংলা লেখাও শেখানো হয়। তৃতীয় সেমিস্টারে পড়ানো হয় কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা। কবি ফররুখ আহমেদের লেখা আমাদের নিয়মিত পাঠ্য। এ ছাড়া বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, বাংলা উপন্যাস ও আধুনিক সাহিত্য সম্পর্কে আমরা পড়ি। ষষ্ঠ সেমিস্টারে পড়ানো হয় বাংলা ছোটগল্প। সপ্তম সেমিস্টারে আমরা রবীন্দ্রনাথের কবিতা পড়ি। অষ্টম সেমিস্টারে পড়ানো হয় ভাষাবিজ্ঞান ও ধ্বনিবিজ্ঞান। মোট ৪৬টি কোর্সে ১৩৮ ক্রেডিট করতে হয়। এ ছাড়া বিএ (পাস) ও এমএ শ্রেণির ডিগ্রি নেওয়া যায়।

বাংলা ভাষার ওপরে সার্টিফিকেট কোর্স করার সুযোগ আছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমরা বাংলায় ছাপানো বই পড়ি, বাংলা কবিতা চর্চা করি নিয়মিত। যেহেতু আমাদের শিক্ষার্থী কম, তাই এখানে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমও তুলনামূলক কম।

পাকিস্তানের করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পড়েন মোহাম্মদ তাহির ওয়াহিদ
ছবি: সংগৃহীত

আমি সঠিকভাবে বাংলা শিখতে চাই, চাই আমাদের এখানে বাংলা ভাষার চর্চা আরও বিস্তৃত হোক। বাংলাদেশে যাওয়ার ইচ্ছেও আছে। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেতে চাই। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য আমি বাংলা ভাষায় আরও দক্ষ হতে চাই।