সাক্ষাৎকারে সংঘরাজ জ্ঞানশ্রী মহাথের
আমি জন্মান্তরবাদে বিশ্বাসী একজন মানুষ
সংঘরাজ ভদন্ত জ্ঞানশ্রী মহাথেরের জন্ম ১৯২৫ সালে। তাঁর শৈশব কেটেছে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডোমখালী গ্রামে। তরুণ বয়স থেকেই নিজেকে সমাজসেবায় নিয়োজিত করেন। আটটি অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। এসব কাজের জন্য এ বছর সমাজসেবায় একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন তিনি। চট্টগ্রাম বৌদ্ধবিহারে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুজন ঘোষ
প্রশ্ন :
রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন, আপনার কেমন লাগছে?
আমি জন্মান্তরবাদে বিশ্বাসী একজন মানুষ। অতীত জন্মে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। তার কোনো হিসাব নেই। এবার রাষ্ট্রীয় সম্মান পাচ্ছি। আমি মানুষের জন্য কাজ করেছি। সমাজের মঙ্গলের জন্য কাজ করেছি। সব সময় ভালো কিছু করার চেষ্টা করেছি। এখন ভালো কাজের স্বীকৃতি পাব। ভালো লাগছে।
প্রশ্ন :
মানুষের জন্য কাজ করার চিন্তা কখন এসেছিল?
তরুণ বয়সেই আমার মনের মধ্যে মানুষের জন্য, সমাজের জন্য ভালো ও মঙ্গলময় কাজ করার স্পৃহা জেগেছিল। এই চিন্তা আসার পরপরই আমি কাজ শুরু করে দিয়েছিলাম। আমি আটটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। অনাথ আশ্রম করেছি। এখানে অসহায় ছেলেরা যেমন আশ্রয় পেয়েছে, তেমনি শ্রমণ ও ভিক্ষুরাও থেকেছেন।
প্রশ্ন :
প্রথম প্রতিষ্ঠান কোথায় করেছিলেন?
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার মুবাইছড়ি গ্রামে প্রথম অনাথ আশ্রম করেছিলাম। তখন বয়স ২৫ অথবা ৩০ হবে। মেধা আর শ্রম দিয়ে এই আশ্রম গড়ে তুলেছিলাম। এই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন স্থানীয় লোকজন। মানুষের দানের টাকায় আশ্রমটি করা সম্ভব হয়েছিল।
প্রশ্ন :
আপনার প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান কোনটি?
রাঙামাটির মোনঘর অনাথ আশ্রম এবং খাগড়াছড়ির গুইমারা এলাকার প্রতিষ্ঠান দুটি সবচেয়ে বড়।
প্রশ্ন :
আপনার শিষ্যদের সম্পর্কে কিছু বলুন...
শিষ্যদের কেউ কেউ দেশ-বিদেশে ধর্ম প্রচার করছেন। কেউ কেউ শিক্ষাজীবনে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁদের এই অর্জনের খবর শুনে মনে হয় আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে। তাঁরা ভবিষ্যতে আরও ওপরে যাবেন, মানুষের জন্য কাজ করবেন—এটা আমার কামনা। তাঁদের প্রতি আমার একটা উপদেশ, তাঁরা যেন মানুষের কল্যাণে, সমাজ ও দেশের মঙ্গলে কাজ করেন।
প্রশ্ন :
মানুষের জন্য আপনার উপদেশ কী?
আমি সবার সুখ-শান্তি ও মঙ্গল কামনা করি। সবাই সবার মঙ্গলে কাজ করুক।