দেবজ্যোতির জ্যোতিতে স্বর্ণপদক পেল বাংলাদেশ

সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী দেবজ্যোতি দাশছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াড (আইওআই) বেশ জনপ্রিয় একটি প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। বিশ্বের নানা দেশ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বাংলাদেশ বেশ কয়েক বছর ধরে আইওআইতে অংশ নিলেও এত দিন কাঙ্ক্ষিত সাফল্য ছিল অধরা। সেই অচলাবস্থা কেটেছে। এ বছর ৩৬তম আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক জিতেছেন সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী দেবজ্যোতি দাশ।

বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছেন ৪ জন
ছবি: সংগৃহীত

১-৮ সেপ্টেম্বর মিসরে বসেছিল প্রতিযোগিতার মূল আসর, যেখানে বিশ্বের ৯৬টি দেশের ৩৫০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। দেবজ্যোতি ছাড়াও বাংলাদেশ দলে ছিল জারিফ রহমান, আকিব আজমাইন ও দেশ আচার্য। এ ছাড়া দলনেতা হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম সোহেল রহমান।

বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের মধ্যে দেবজ্যোতি ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল। ৩৭৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট পেয়ে ২৫তম স্থান অর্জন করে সে, জেতে স্বর্ণপদক। সাফল্যের পেছনে দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ও চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারার সক্ষমতাই কাজে লেগেছে, জানাল এই শিক্ষার্থী। দেবজ্যোতি বলে, ‘পাঁচ বছর ধরে ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াডের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় আমি কম্পিটেটিভ প্রোগ্রামিং শুরু করি। পরের বছর বাংলাদেশ অলিম্পিয়াড অব ইনফরমেটিকসে (বিডিওআই) নাম লেখাই এবং জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাই। ২০২১ ও ২০২২—এই দুই বছর আমি শুধু চর্চা করেছি। যার ফল এসেছে পরবর্তী বছরগুলোতে। ২০২২ সালে ব্রোঞ্জ, ২০২৩ সালে রৌপ্য আর এ বছর স্বর্ণপদক পেলাম।’

কয়েকজন স্বর্ণপদকজয়ীর সঙ্গে দেবজ্যোতি
ছবি: সংগৃহীত

স্বর্ণ জেতা মোটেও সহজ ছিল না, জানাল দেবজ্যোতি। বলছিল, ‘প্রতিযোগিতার প্রথম দিন তেমন ভালো যায়নি। ১৮৫ পয়েন্ট নিয়ে সিলভার জোনে ছিলাম। স্বর্ণ পেতে হলে পরদিন অতিরিক্ত ২০ পয়েন্ট বেশি পেতে হতো। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের প্রতিযোগিতা ছিল আরও কঠিন। তিন পয়েন্টের বেশি পাওয়া প্রায় অসম্ভব—এমন সমস্যাও ছিল। আমি সমস্যার কূলকিনারা করতে না পেরে, অন্য দুটিতে (সমস্যায়) চলে যাই। প্রতিযোগিতার শেষ দিকে ভাবছিলাম, এই সমস্যাতেই সম্ভবত সবাই বেশি পাবে; এবারও স্বর্ণ হাতছাড়া হয়ে গেল। শেষে র‍্যাঙ্কিং দেখে আশ্বস্ত হয়েছি। যাক, শেষ পর্যন্ত স্বর্ণ হাতছাড়া হয়নি।’

আপাতত পড়ালেখা ও নিজের কিছু প্রকল্পে সময় দেবে এই মেধাবী তরুণ। আগামী বছরই হয়তো শেষবার আইওআইতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে, সেই প্রস্তুতিও চলবে।