নব্বইয়ের দশকে জন্ম? তাহলে শরীরের এই পরীক্ষা করার সময় হয়েছে আপনার

যাদের জন্ম নব্বই দশকের শুরুর দিকে তাদের এখন সচেতন হতে হবে শরীর নিয়ে। মডেল: রেহানছবি: প্রথম আলো

বয়স ৪০ পেরোনোর পর ডাক্তারের কাছে গিয়ে ‘লিপিড প্রোফাইল’–এর নাম শোনেননি, এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। ৪০ পেরোনোর পর ‘সাধারণ’ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষারই অংশ এই লিপিড প্রোফাইল টেস্ট। তবে আজকাল বয়স ৩০ হলেই এই পরীক্ষার বিষয়ে জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে যাঁদের জন্ম, এখন তাঁদের সচেতন হওয়া জরুরি। অনেকেরই ত্রিশের পর এই পরীক্ষা করানো লাগছে। ‘লিপিড প্রোফাইল’ পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তের কোলেস্টেরলসহ বিভিন্ন চর্বির মাত্রা নির্ণয় করা হয়, যা একজন মানুষকে সুস্থ রাখতে জরুরি।

কোলেস্টেরল কী

কোলেস্টেরল আমাদের রক্তের একটি চটচটে ও মোমের মতো পদার্থ, যা আদতে একধরনের চর্বি। দেহকোষের গঠন, হরমোন ও ভিটামিন তৈরিতে কোলেস্টেরল প্রয়োজন। কোষের কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিও আসে কোলেস্টেরল থেকে। অর্থাৎ স্বাভাবিক মাত্রার কোলেস্টেরল আমাদের শরীর ও শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল শরীরের সবচেয়ে খারাপ উপাদানগুলোর একটি।

কোলেস্টেরল বাড়লে কী হয়?

দুশ্চিন্তা ও কম ঘুম থেকেও শরীরে নানা সমস্যা হতে পারে। মডেল: জুলফিকার
ছবি: কবির হোসেন

কোলেস্টেরল যেহেতু মোমজাতীয় পদার্থ, তাই রক্তে এর পরিমাণ বেশি হলে রক্তনালির ভেতরের অংশে তা জমাট বাঁধতে শুরু করে। তখন রক্তনালির স্বাভাবিক পরিধি কমে গিয়ে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। এমনকি কখনো কখনো রক্ত চলাচল একেবারে বন্ধও হয়ে যায়। রক্তনালির ভেতর এমন নানা ধরনের পরিবর্তনের কারণে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে চর্বি জমে হতে পারে হৃদ্‌রোগ এবং মস্তিষ্কের রক্তনালিতে চর্বি জমে হতে পারে স্ট্রোক। বহু রোগীর এমন মারাত্মক সমস্যার মূলে থাকে রক্তের কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা।

কী কারণে বাড়ে?

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে ৩০ বছর বয়স পেরোনোর পরই কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। কম বয়সেই দীর্ঘমেয়াদি নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া, অতিরিক্ত পরিমাণে তেল–চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া, শরীরচর্চায় ঢিলেমি, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম, রাত জাগার অভ্যাস ও ধূমপান বা মদ্যপানের মতো অভ্যাসের কারণে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। স্টেরয়েডসহ কিছু ওষুধ সেবনেও বাড়তে পারে কোলেস্টেরলের মাত্রা।

এই সময়ে স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। মডেল: হৃদি
ছবি: প্রথম আলো

প্রতিকারের উপায়

১. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। লাল মাংস, অতিরিক্ত তেল-চর্বি জাতীয় খাবার, চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে যেতে হবে। প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে। মাছ ও মাছের তেল খেতে পারেন।

২. রোজ অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা বা নিদেনপক্ষে হাঁটার অভ্যাস করুন।

৪. রাতে অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুমান।

৫. ধূমপান ও মদ্যপান থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন।