এশিয়া কাপের আগে আরেক এশিয়া কাপ, চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
ক্রিকেটে এশিয়া কাপ শুরু হচ্ছে ৩০ আগস্ট। তার আগেই বসেছিল আরেক এশিয়া কাপের আসর। ক্রিকেটার নয়, আইনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসে এ আসর—এশিয়া কাপ ২০২৩। এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় মুটকোর্ট প্রতিযোগিতা। এশিয়া অঞ্চলে আন্তর্জাতিক আইনের জ্ঞান এবং উপলব্ধি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে জাপানে আয়োজিত হয় এ প্রতিযোগিতা। এবারের আসরে এশিয়ার বাঘা বাঘা বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে জয়ী হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুটকোর্ট সোসাইটি।
টোকিওর ইউনাইটেড নেশন ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত এশিয়া কাপে স্বাগতিক জাপান ছাড়াও অংশ নেয় বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইরান, মঙ্গোলিয়া, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ। প্রাথমিক পর্যায়ে ৫৫টির বেশি দল অংশ নিলেও শেষ পর্যন্ত ওরাল রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হয় ১৬টি দল। ২২ ও ২৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত ওরাল রাউন্ডে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার মোকাবিলা করে ফাইনাল রাউন্ডে কম্বোডিয়ার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ, অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দল। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর আগে অন্যান্য স্বীকৃতি থাকলেও এত বড় মাপের প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুটকোর্ট সোসাইটির চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। এ ছাড়া প্রতিযোগিতার বেস্ট মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড (অ্যাপ্লিক্যান্ট) ও থার্ড বেস্ট মেমোরিয়ালের (রেসপন্ড্যান্ট) স্বীকৃতিও অর্জন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলে ছিলেন ঐশী রহমান, রাফিদ আজাদ, তানহা তানজিয়া ও ফিয়াজ রব্বানী। দলের অন্যতম সদস্য ঐশী বলেন, ‘আমাদের এবারের সাফল্য শুধু যে বাংলাদেশের জন্যই বড়, তা নয়। এর আগে এশিয়া কাপে পুরো দক্ষিণ এশিয়া থেকেই আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এটা ভেবেই আমাদের বেশি ভালো লাগছে। প্রস্তুতির জন্য আমরা এতটাই কম সময় পেয়েছিলাম যে ঈদের দিনও ব্যস্ত ছিলাম মেমোরিয়াল নিয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত সবাইকে পেছনে ফেলে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছি, এটাই সবচেয়ে আনন্দের। ’
আন্তর্জাতিক অঙ্গনের এ ধরনের প্রতিযোগিতায় বন্ধুত্বের মেলবন্ধনও ঘটায়। এ ব্যাপারে দলের আরেক সদস্য ও প্রতিযোগিতার থার্ড বেস্ট ওরালিস্ট (অ্যাপ্লিক্যান্ট) সৌমিক বলেন, ‘সমগ্র এশিয়া থেকে অনেক প্রতিভাবান মুটারের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি তাঁদের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা ও সংগ্রামের কথা শোনার সুযোগ হয়েছে। কিছু কিছু দল তো আসার সময় আমাদের বেশ কিছু স্যুভেনিরও দিয়েছে। সেখানে অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়ায় ফাইনালে তাদের সমর্থনও পেয়েছি। বিশেষ করে আমাদের চ্যাম্পিয়ন ঘোষণার পর তাঁদের উল্লাস দেখে খুবই ভালো লেগেছে।’
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, অ্যাডভোকেট দিহিদার মাসুম কবির, আইএফআইসি ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দলটি। তাঁদের বক্তব্য, পৃষ্ঠপোষকদের এমন সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়মিতই এ ধরনের সাফল্য অর্জন সম্ভব হবে।