হুট করে চাকরি চলে গেলে যেভাবে মানিয়ে নেবেন
করপোরেট–জীবন দ্রুত গতির গাড়ির মতো। পথে স্পিড ব্রেকার বা খাদ পড়তে পারে—এসব মাথায় নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। চাকরি কখনই নিশ্চিত নয়, তারপরও আপনাকে কাজ করে যেতে হবে। আজ হয়তো এক অফিসে কাজ করছেন। পেশাগত উন্নতি কিংবা চাকরির প্রয়োজনে আগামী মাসে হয়তো অন্য অফিসে কাজ করতে হবে। হুট করে চলেও যেতে পারে চাকরি। চাকরি জীবনে কঠিন সময় আসবে, কিন্তু আমরা কীভাবে তা মেনে নেব, সেটা আমাদের জানতে হবে। তাঁর ভাবনার কথা জানাচ্ছেন মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ রুবিনা খান।
চ্যালেঞ্জকে স্বীকার করুন
চাকরি থেকে ছাঁটাই কিংবা চাকরি চলে যাওয়ার মতো কঠিন সময়কে মোকাবিলা করার প্রথম ধাপ হলো ঘটনাকে স্বীকার করা নেওয়া। তাঁর সঙ্গেই কেন এমন কিছু হচ্ছে, অনেকেই এটা মানতে পারেন না। করপোরেট সংস্কৃতিতে প্রতিযোগিতায় যে ভালো করবে, সে–ই টিকে থাকবে। বাস্তবে যখন চাকরি থাকবে না, তখন নিজের অবস্থান স্বীকার করে নিতে হবে। পরিস্থিতিকে বাস্তবসম্মত উপায়ে মূল্যায়ন করতে হবে। নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখানো যাবে না। কাউকে দোষারোপ করে মন খারাপ করা যাবে না। আপনি যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, তার ওপর ফোকাস করতে হবে। কঠিন সময়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরের জিনিস বা ঘটনা নিয়ে মাথা ঘামানো যাবে না। এমন কাজ বা বিষয়ে মনোনিবেশ করুন, যাতে আবারও আপনি কাজে ফিরতে পারেন। দক্ষতার উন্নতি, শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে নতুন পথ খোঁজার চেষ্টা করুন। চাকরি নেই বলে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দিন পার করা যাবে না। সক্রিয়ভাবে নিজের উন্নয়ন ও নতুন বিকল্প উপায় খুঁজতে হবে।
সহযোগিতা নিন
আপনার পরিচিত পেশাদার ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করুন। চাকরিবিহীন এই সময়ে আপনার পরিচিতরাই হতে পারে নতুন সুযোগ দেখানোর কম্পাস। পরামর্শক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পরামর্শদাতা, সহকর্মী বা বিশ্বস্ত বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। নতুন পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিতে শিখুন। তাঁদের পরামর্শ ও নতুন ভাবনা শুনে নিজেকে তৈরি করতে পারেন। নিজের জীবনবৃত্তান্ত ও কাজের নমুনা তাঁদের কাছে প্রকাশ করুন। লিংকডইনের মতো সাইটে নিজের উপস্থিতি জানান দিন।ছবি:
থেমে থাকা চলবে না
চাকরি নেই বলে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বেছে নেবেন না। অপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিতে পারলে ভালো এ সময়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় দিন। কিছু লুকাবেন না। নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করুন, কিন্তু পরিবার ও স্বজনদের দুর্বল করবেন না। অনেক সময় পরিবারের কারও চাকরি না থাকলে ছোট সদস্যরা মন খারাপ করে। এই কঠিন সময়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করুন। কঠিন সময়ে শরীর ও মন খারাপ করা চলবে না। চ্যালেঞ্জ জয় করতে নিজের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন। সামনে বাধা দেখে থামা যাবে না। প্রতিদিন সকালে নতুন করে সুযোগ তৈরির চেষ্টা করুন। চেষ্টা করতে থাকলে চাকরির ডাক আসবেই।