২০২৩ সালের ভ্রমণধারা
দুই কারণে দেশে ক্যাম্পিং আরও জনপ্রিয় হবে
কক্সবাজার, কুয়াকাটা, শ্রীমঙ্গল, বান্দরবান, রাঙামাটি—দেশে এগুলোই মূলত পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য। জনপ্রিয় এ জায়গাগুলো বছরজুড়েই পর্যটকমুখর থাকে। ২০২৩ সালেও ধারাটা অব্যাহত থাকবে। তবে এর বাইরে নতুন কিছু জায়গা এবং বিষয়ে মানুষের আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে, নতুন বছরে যা আরও বাড়বে।
‘কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের ঢল, খালি নেই হোটেল-মোটেল’ খবরের শিরোনামটা গত সপ্তাহের। ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতেও পর্যটকশূন্য ছিল কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। তেমন ভিড় দেখা যায়নি। তবে বড়দিনের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নামে। বুক হয়ে যায় শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট-গেস্টহাউসের সব কক্ষ। বেড়াতে যাওয়া মানুষে গিজগিজ করতে থাকে সৈকত। ঠিক সেই সময়ই ঢাকার একটি দল ক্যাম্পিং করে নির্ঝঞ্ঝাট ঘুরে এল। তাদের না ছিল থাকার অসুবিধা, না খাবারের চিন্তা। সৈকত ঘেঁষে ঝাউবনের পাশে তারা সময়ও কাটিয়েছে কোলাহলহীন।
সাশ্রয়ী ও রোমাঞ্চকর—দুই কারণে দেশেও জনপ্রিয় হচ্ছে ক্যাম্পিং বা তাঁবুবাস। যাঁদের কেউ যাচ্ছেন একা, কেউবা দল বেঁধে। একসময় দুর্গম জায়গায় ক্যাম্পিংয়ের চল থাকলেও এখন শহরতলিতেও তাঁবু পাতছেন অনেকে। নদী, পাহাড় কিংবা সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হতে ক্যাম্পিংকেই বেছে নিচ্ছেন রোমাঞ্চপ্রিয় মানুষেরা। তাই তো ঢাকা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, ভোলা, রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিক ক্যাম্প সাইটও তৈরি হয়েছে। এসব জায়গায় ক্যাম্পিংয়ের যাবতীয় সরঞ্জাম ভাড়া পাওয়া যায়। তবে অপরিচিত জায়গায় ক্যাম্পিং করার আগে নিরাপত্তার দিকটাও দেখতে হবে। কোথায় ক্যাম্পিং করছেন, সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি আগে থেকে নিশ্চিত হয়ে যেতে হবে।
দেশে ক্যাম্পিং যেমন জনপ্রিয় হচ্ছে, তেমনি ক্যাম্পিংয়ের জন্য তাঁবুসহ প্রয়োজনীয় মানসম্পন্ন উপকরণও সহজে পাওয়া যাচ্ছে। বছর দুই আগেও যা দেশের বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হতো। তাই ২০২৩ সালকে অনেকে মনে করছেন ক্যাম্পিংয়ের বছর।
ক্যাম্পিংয়ের মতো বাইসাইকেল নিয়ে ঘোরার প্রবণতাও বেড়েছে। প্যাডেল হাঁকিয়ে অনেকে চলে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। হাইওয়ে থেকে গ্রামের মেঠো পথ ধরে চলছেন মাইলের পর মাইল।
আবার চরম মাত্রার রোমাঞ্চের সন্ধানেও যাচ্ছেন তরুণেরা। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, মিরসরাইসহ পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম পাহাড়ে ছুটছেন। এ বছর ওয়াইল্ডারনেস বিডি নামে একটি ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপ এক্সট্রিম হ্যামকিং (দুই পাহাড়ের মাঝে হ্যামকে শুয়ে থাকা) শুরু করেছে। তারা র্যাপেলিং (দড়ি বেয়ে পাহাড় থেকে নামা), জুমারিং, রিভার ক্রসিং, বোল্ডারিং, লং পিচ ফ্রি হ্যান্ড ক্লাইম্বিংয়ের ব্যবস্থাও করছে। অনেকে আবার দল বেঁধে দুর্গম পাহাড়ের চূড়া ছুঁতে, জলপ্রপাতের ধারায় মুগ্ধ হতে ছুটছেন।
২০২৩ সালে এ ধরনের অভিযানে তরুণদের সম্পৃক্ততা আরও বাড়বে।