জেট ল্যাগ কাটাতে কী করবেন

আমাদের দেশে যখন রাত ১২টা, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে তখন দুপুর ১টা। যুক্তরাষ্ট্রের মতো এমন অনেক দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের সময়ের বিস্তর ফারাক। এসব দেশে ভ্রমণের পরিকল্পনা করার আগে জেনে রাখুন জেট ল্যাগ সম্পর্কে।

১০ দিনের জন্য বিদেশে বেড়াতে গিয়ে সাতটি দিনই থাকলেন ঘুম ঘুম ঘোরে। দিনে ঘুম আসে, রাতে ঘুম হয় না। কী যন্ত্রণা। বেড়ানোর আনন্দটাই মাটি। এমন সমস্যার নামই ‘জেট ল্যাগ’।

সাময়িক ঘুমের সমস্যা হিসেবে একে দেখা হলেও কেবল রাতে ঘুম না আসা আর দিনে ঘুম ঘুম ভাবের মধ্যেই সীমিত থাকে না জেট ল্যাগ। চিন্তার ধীরতা আর মনঃসংযোগ করতে না পারার সমস্যাটাও ভোগায়। দূরদেশের সময়ের সঙ্গে বিশাল ব্যবধান থাকলে নিজ দেহের নিয়মতান্ত্রিক গতির ছন্দপতন ঘটে। তাতেই এই বিপত্তি। একে পুরোপুরিভাবে প্রতিরোধ কিংবা প্রতিকার করা সম্ভব না হলেও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে প্রস্তুতি চাই আগে থেকে।

বেড়াতে যাওয়ার আগে

  • পুবের দেশে (যেমন রাশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিজি) যাওয়ার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ঘুমের সময়টা আধঘণ্টা এগিয়ে আনুন। পশ্চিমের দেশের (যেমন কানাডা, মেক্সিকো, গুয়াতেমালা) জন্য করতে হবে উল্টোটা।

  • বেড়াতে যাওয়ার আগে থেকেই আপনার খাবারের সময়গুলোও একটু একটু করে বদলে নিতে পারেন (বেড়াতে গেলে খাবারের সময় যেমন হবে, তার কাছাকাছি সময় হিসাব করে নেবেন)।

যাওয়ার সময়

  • বিমানে ওঠার আগে, বিমানে উঠে এবং বিমান থেকে নেমে পর্যাপ্ত পানি খান।

  • বিমানে উঠে ঘড়ির সময় বদলে নিতে পারেন (যেখানে যাচ্ছেন, সেই দেশের সময় অনুসারে)। যদি সেখানে ঘুমের সময় হয়, তাহলে ঘুম না এলেও বিশ্রাম নিতে পারেন। ঘুমের সময় হলে আলো ও শব্দ থেকে বাঁচতে এয়ারপ্লাগ, চোখের মাস্ক প্রভৃতি কাজে লাগাতে পারেন।

  • বিমানে চুপচাপ বসে থাকবেন না। উড্ডয়নের পর দীর্ঘ যাত্রায় মাঝেমধ্যে একটু চলাফেরা করুন। দাঁড়িয়ে করা যায়, এমন হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। পেশি স্ট্রেচিং করাও ভালো।

যাওয়ার পর

  • ঘুমের আগে কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে পারেন।

  • ঘুমের আগে ভারী খাবার যেমন চর্বিযুক্ত কিংবা অধিক শর্করাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। ঘুমের কয়েক ঘণ্টা আগে চা-কফি এড়িয়ে চলুন। অ্যালকোহল বর্জনীয়।

  • ঘুমের আগে ভারী ব্যায়াম নয়।

  • পুবের দেশে গেলে ভোরের আলোতে একটু কম থাকাই ভালো, বরং বিকেল ও গোধূলির আলোয় বেশি সময় কাটাতে চেষ্টা করুন। পশ্চিমের দেশে উল্টোটা।

জেট ল্যাগের প্রভাব কমাতে এগুলো একেবারে ধরাবাঁধা নিয়ম নয়। কেউ যদি পুবের দেশের সূর্যোদয় দেখতে চান, তাঁকে তো আর জেট ল্যাগের দোহাই দিয়ে আটকে রাখা যায় না। বেড়াতে গিয়ে আপনি আসলে কোনটা চাইছেন, তা তো ঠিক করে নেবেন আপনি নিজেই।