বিমানবন্দরে প্রবেশ থেকে যাত্রীকে বিমানে তুলে দেওয়া পর্যন্ত কাজগুলো আমরা করে থাকি
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার সব দায়িত্বই পালন করলেন নারীরা। ঢাকা–দাম্মামগামী বিজি-৩৪৯ ফ্লাইটটির গ্রাউন্ড থেকে ককপিট—সব বিভাগের দায়িত্বেই ছিলেন তাঁরা। কেমন ছিল ফ্লাইটটির অভিজ্ঞতা? সজীব মিয়াকে সেই গল্প শোনালেন বিমানের গ্রাউন্ড সার্ভিস ব্যবস্থাপক লুৎফুন নাহার
বিমানবন্দরে প্রবেশ থেকে একজন যাত্রীকে বিমানে তুলে দেওয়া পর্যন্ত ধাপে ধাপে বিভিন্ন পর্যায়ের কাজগুলো আমরা গ্রাউন্ড সার্ভিস বিভাগের কর্মীরা করে থাকি। নারী দিবসের বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হলে স্যাররা আমাকে সেদিনের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেন।
৮ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যেই আমি এয়ারপোর্টে পৌঁছে যাই। আমার বিভাগের অন্যরাও চলে আসেন। সেদিন সকালের শিফটে ছিলেন ১০ জন। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে আসেন আরও ১০ জন। প্রত্যেককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে ব্রিফ করি। শুরু হয় আমাদের কাজ।
কাউন্টার, হ্যান্ডেলিং, চেকিং, লোডিং—যার যেখানে কাজ, সেখানে ছুটে যান। আমি তো দৌড়াদৌড়ির মধ্যে পড়ে যাই। একবার এ মাথা তো আরেকবার ও মাথা।
যাত্রী আসতে শুরু করেন। কাউন্টারে তাঁদের হাসিমুখে স্বাগত জানিয়ে সব বুঝিয়ে দেওয়া হলো। পাশেই হুইলচেয়ার রেডি ছিল। তবে সেই ফ্লাইটে কারও লাগল না। এরপর যাত্রীদের ইমিগ্রেশনে নিয়ে যাওয়া হলো। একে একে পাসপোর্ট চেকিং করে বোর্ডিং সম্পন্ন হলো।
ককপিট ও কেবিন থেকে সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় ছিলাম। বিমানের দুই অংশ থেকেই ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পর যাত্রীদের বিমানে তোলা হলো।
প্রতিদিনই আমরা এই কাজ করি। তবে সঙ্গে থাকেন পুরুষ সহকর্মীরা। সেদিন তাঁরা পাশে না থাকলেও মেয়েদের দায়িত্ব পালনে বেগ পেতে হয়নি। মেয়েরা সবাই আসলে খুব আত্মবিশ্বাসী। ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করে আসা এই মেয়েরা নিজেদের কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
চাকরিজীবনের শেষ সময়ে চলে এসেছি। সেই ১৯৮৯ সালে জুনিয়র ট্রাফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে যোগ দিয়েছিলাম। ধাপে ধাপে এই পর্যন্ত আসা। বিদায় বেলায় এসে দারুণ এক মুহূর্তের সাক্ষী হলাম ৮ মার্চ। বিমান যদিও প্রত্যেককে একজন কর্মী হিসেবেই বিবেচনা করে, তারপরও একজন নারী হিসেবে সমস্ত কাজ নিজেরা সম্পন্ন করার মধ্যে আলাদা আনন্দ আছে।