কীভাবে ঘুরবেন মালয়েশিয়া

বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণের জন্য অন্যতম গন্তব্যগুলোর একটি হলো মালয়েশিয়া। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, গহিন জঙ্গলের বহুরূপী প্রাণী এবং পৃথিবীর সেরা কয়েকটি সমুদ্রসৈকত—সবই আছে এই দেশটিতে। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া ভ্রমণের খরচটাও খুব একটা বেশি নয়। আজ জানা যাক, মালয়েশিয়ায় কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কী খাবেন, কোথায় ঘুরবেন ইত্যাদি খুঁটিনাটি।

কীভাবে যাবেন?

মালয়েশিয়ায় বেড়াতে যাওয়ার আগে প্রথমেই আপনার প্রয়োজন হবে দেশটির ভিসা। দাপ্তরিক পাসপোর্ট বাদে সব বাংলাদেশি নাগরিকের জন্যই মালয়েশিয়া ভ্রমণের ভিসা বাধ্যতামূলক। তবে সুখবর হচ্ছে, ই-ভিসার ব্যবস্থা আছে মালয়েশিয়া প্রবেশের ক্ষেত্রে। তাই অনলাইনেই ভিসার আবেদন সেরে ফেলা যায়। আবেদনের খরচটাও খুব একটা বেশি নয়। ভিসার পরই আসে ফ্লাইট বাছাইয়ের পালা।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার অর্ধেকটা উপদ্বীপ, বাকি অর্ধেক সমতল ভূমি। বাংলাদেশ থেকে বিমানপথে দেশটিতে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা। সাধারণত রাজধানী কুয়ালালামপুরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন অবতরণ করে। এ ক্ষেত্রে সঠিক সময় ফ্লাইট বুক করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ফ্লাইটের খরচও সময়ের সঙ্গে ওঠানামা করে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব এয়ারলাইনসের টিকিটের মূল্য তুলনা করে দেখাটা সেরা অপশন। কারণ বিভিন্ন তারিখে বিভিন্ন এয়ারলাইনসে ফ্লাইটের দামের পার্থক্য থাকে। এ জন্যই দেখে নিতে পারেন গোযায়ান অ্যাপ। স্মার্টফোনে গোযায়ান অ্যাপ এখনো না থাকলে, ডাউনলোড করে ফেলতে পারবেন (এই লিংকে ক্লিক করুন)। গোযায়ান অ্যাপে নিজের গন্তব্য এবং নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে অনুসন্ধান করলেই পেয়ে যাবেন সব ধরনের এয়ারলাইনস এবং ফ্লাইটের খোঁজ। সেখানে দামসহ ফ্লাইটের যথাযথ সময়, যাত্রাবিরতির সময়, লাগেজ সীমাসহ যাবতীয় তথ্য দেওয়া থাকে। তাই ফ্লাইট বুকিংটা হবে একেবারেই ঝামেলামুক্ত।

বাংলাদেশের কাছাকাছি দেশগুলোর মধ্যে কম খরচে ভ্রমণের জন্য মালয়েশিয়া অন্যতম। ফ্লাইট বুকিংটা যদি একটু আগেভাগে করা হয়, কমতে পারে ফ্লাইটের খরচ। তাই দেরি না করে এখনই বুক করে ফেলুন।

কোথায় থাকবেন?

মালয়েশিয়ার একেক প্রান্তে আছে একেক ধরনের সৌন্দর্য। রাজধানী শহর কুয়ালালামপুর একেবারে আধুনিক এবং অভিজাত। শহরটি ভিন্নধারার আধুনিক স্থাপত্যশিল্পের জন্য সুপরিচিত। পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, লেক সিম্ফনি, বাতু গুহা, জালান আলোর সুস্বাদু স্ট্রিট ফুড ইত্যাদি একেবারে না দেখলে, না খেলেই নয়। পর্যটনবান্ধব শহর হওয়ায় কুয়ালালামপুরে সব পরিসরের হোটেলই পাওয়া যায়। বাজেট বেশি হোক বা কম, কুয়ালালামপুরে খুঁজে পাবেন পছন্দমতো হোটেল। হোটেল খোঁজার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পেতে পারবেন গোযায়ান অ্যাপে। ফ্লাইট বুকিংয়ের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের যেকোনো হোটেলে বসেই আগে থেকে বুক করা যায় এই অ্যাপটি ব্যবহার করে। বুকিংয়ের জন্য বিদেশি কার্ড বা ডলার এনডোর্সমেন্টেরও প্রয়োজন হয় না, পেমেন্ট করা যায় বাংলাদেশি মুদ্রা ব্যবহার করেই।

একটু দূরে গেলেই কেদাহ প্রদেশে আছে লংকাওয়ে নামের দ্বীপপুঞ্জ। এখানে ঘুরতে গিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭০০ ফুট ওপরে অবস্থিত লংকাওয়ে স্কাই ব্রিজ থেকে উপভোগ করতে পারবেন সমগ্র দ্বীপমালার সৌন্দর্য। বিশ্ববিখ্যাত লংকাওয়ে কেবল কারও আছে এই প্রদেশেই। একই দিনে অনেকগুলো দ্বীপ ঘুরে দেখা যায় লংকাওয়েতে, তা ছাড়া আছে রোমাঞ্চকর ওয়াটার স্পোর্টসে অংশগ্রহণ করার সুব্যবস্থা।

এ ছাড়া ক্যামেরুন হাইল্যান্ড, জেন্টিং হাইল্যান্ড, ইপোহ, মালাক্কা ইত্যাদি শহরও পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। মালয়েশিয়া প্রাণী বৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে সমৃদ্ধ। তাই শুধু রাজধানী শহর না দেখে মালয়েশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলেও ঘুরে আসার পরিকল্পনা করতে পারেন।

কী খাওয়া যায়?

খাবারের দিক দিয়ে মালয়েশিয়ায় বৈচিত্র্যের কোনো অভাব নেই। এশিয়া মহাদেশের সব জাতি একত্র হয়ে, মালয়েশিয়াকে দিয়েছে অনন্যসাধারণ একটি রূপ। ইন্দোনেশিয়ায় যেমন আছে নাসি গোরেং, তেমনি মালয়েশিয়ার আছে মি গোরেং। মালয়েশিয়ার রাস্তায় রাস্তায় সুপরিচিত এই খাবারটি মূলত একধরনের ঝাল নুডলস। সয়া সস, মরিচ, তেল ইত্যাদির সমন্বয়ে খাবারটি বানানো হয়। একই ধাঁচের খাবারের মাঝে আরও আছে নাসি লেমাক। এটাকে অনেকে মালয়েশিয়ার জাতীয় খাবারও বলে থাকেন। নারকেলের দুধে রান্না করা চালের সঙ্গে ঝাল তরকারি মিলিয়ে খাবারটি খাওয়া হয়।

লাকসার সুনাম এখন দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। খাবারটির উৎপত্তিস্থল মালয়েশিয়াতেই। লাকসাও একধরনের নুডলস। এর নানা সংস্করণ থাকলেও মূল খাবারটি বেশ ঝাল হয়ে থাকে। রেনদাং নামের লাল বর্ণের মাংসের ঝোল মালয়েশিয়ার আরেকটি জনপ্রিয় খাবার। মুরগি, গরু অথবা ভেড়ার মাংস দিয়ে খাবারটি বানানো হয়। এগুলো ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রুটি, চিকেন স্যাটে, সেনডল ইত্যাদি খাবার বেশ জনপ্রিয়।

এশিয়া মহাদেশ ঘুরতে চাইলে মালয়েশিয়াকে কোনোভাবেই বাদ দেওয়া উচিত হবে না। তাই ঘোরাঘুরির পরিকল্পনাটা শুরু করে ফেলুন এখনই।