ট্রেনের টিকিট কাটার সময় ‘শ্রেণি’ নির্বাচনে এই সমস্যায় কি আপনিও পড়েন

‘F_SEAT’, ‘AC_B’ ইত্যাদি কোনটি কোন আসন তা নির্বাচন করতে গিয়ে অনেকে অসুবিধায় পড়েন
কোলাজ

যাঁরা নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াত করেন, তাঁদের কাছে ব্যাপারটা হয়তো খুবই সাধারণ। কিন্তু কালেভদ্রে যাঁরা ট্রেনের টিকিট কাটতে অনলাইনে ঢুঁ মারেন তাঁদের কাছে বিষয়টা বেশ খটকা লাগার মতো। অনলাইন টিকিট কাটার সময় ‘প্রারম্ভিক স্টেশন’ ও ‘গন্তব্য স্টেশন’ নির্বাচন করার পরই আসে ‘ক্লাস’ নামের ঘর। এর অর্থ ট্রেনের কোন ধরনের কামরায় বা আসনে আপনি যাতায়াত করতে চান। এ পর্যায়ে এসে অনেকে অসুবিধায় পড়েন। কারণ, সেখানে বিভিন্ন শ্রেণির চেয়ার ও সিটের নাম সংক্ষিপ্তভাবে লেখা থাকে। যেমন প্রথম শ্রেণির আসনকে লেখা আছে ‘F_SEAT’, তেমনি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কেবিনের নাম ‘AC_B’। সংক্ষিপ্ত নামের সংশয় কাটাতে ট্রেনের আসন সম্পর্কে জেনে রাখা জরুরি। রইল বিস্তারিত—

এসি বার্থ (AC_B): এটি রেলওয়ের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কামরা। ‘তাপানুকূল স্লিপার’ বা ‘এসি কেবিন’ হিসেবেও পরিচিত। এসব কেবিনে দ্বিতল বিছানা থাকে। রাতের ডাবল কেবিনে চারজন যাত্রী শুয়ে যেতে পারেন আর সিঙ্গেল কেবিনে দুজন।

এটি রেলওয়ের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কামরা
ছবি: তানভীর আহম্মেদ

এসি সিট (AC_S): আন্তনগর ট্রেনে রাতে যা ‘এসি বার্থ’, দিনে তা-ই হয়ে যায় ‘এসি সিট’। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত এসব কেবিনের দ্বিতল বিছানা দিনের বেলায় হয়ে যায় বসার আসন। এ সময় ডাবল কেবিনে ছয়জন যাত্রী বসার ব্যবস্থা হয় আর সিঙ্গেল কেবিনে তিনজন।

স্নিগ্ধা (SNIGDHA): ট্রেনের এসি কোচের চেয়ার সিট। দেশের সব আন্তনগর ট্রেনে না থাকলেও বেশির ভাগ জনপ্রিয় গন্তব্যের ট্রেনে স্নিগ্ধা কোচ থাকে। আরামদায়ক বসার আসনের ব্যবস্থা থাকায় এই কোচে ভ্রমণও হয় আরামদায়ক।

ট্রেনের এসি কোচের চেয়ার সিট
ছবি: তানভীর আহম্মেদ

এসি চেয়ার (AC_CHAIR): ‘তাপানুকূল এসি চেয়ার’ হিসেবেও পরিচিত। ট্রেনের কোচ বা বগির এই আসনগুলো কোনো কোনো ট্রেনে স্নিগ্ধা হিসেবেও পরিচিত।

প্রথম শ্রেণি বার্থ (F_BERTH): প্রথম শ্রেণি বার্থ নন–এসি কেবিন হিসেবেও পরিচিত। এসব কেবিনে দ্বিতল বিছানা থাকে। রাতের ডাবল কেবিনে চারজন যাত্রী শুয়ে যেতে পারেন আর সিঙ্গেল কেবিনে দুজন।

প্রথম শ্রেণি বার্থ নন–এসি কেবিন হিসেবেও পরিচিত
ছবি: তানভীর আহম্মেদ

প্রথম শ্রেণি সিট (F_SEAT): সাধারণত শোয়ার বার্থ বা বিছানাওয়ালা কেবিনগুলো দিনের বেলায় প্রথম শ্রেণি সিট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ সময় ডাবল কেবিনে ছয়জন যাত্রী বসার ব্যবস্থা হয় আর সিঙ্গেল কেবিনে তিনজন।

প্রথম শ্রেণি চেয়ার (F_CHAIR): নন–এসি চেয়ার কোচের আসন। চেয়ারগুলো বেশ বড় ও আরামদায়ক। পা ছড়িয়ে বাসার মতো পর্যাপ্ত জায়গা থাকে।

দেশের প্রায় সব আন্তনগর ট্রেনে শোভন চেয়ার আছে
ছবি: তানভীর আহম্মেদ

শোভন চেয়ার (S_CHAIR): দেশের প্রায় সব আন্তনগর ট্রেনে শোভন চেয়ার আছে। দ্বিতীয় শ্রেণির এই কামরা নন–এসি। স্নিগ্ধার কাছাকাছি মানের চেয়ার। তাই ভ্রমণ মোটামুটি আরামদায়ক। ভাড়াও প্রথম শ্রেণির চেয়ারের চেয়ে কম।

শোভন (SHOVAN): ট্রেনের শোভন কোচে রেক্সিনে মোড়ানো মুখোমুখি আসন। অনেকটা বেঞ্চের মতো হলেও পেছনে হেলান দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই আসনে দুজনে বসতে হয়। মেইল ও কিছু আন্তনগর ট্রেনে শোভন আসন আছে। কম খরচের এসব আসন দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য আরামদায়ক নয়।

ট্রেনের শোভন কোচে রেক্সিনে মোড়ানো মুখোমুখি আসন
ছবি: সংগৃহীত

সুলভ (SHULOV): কাঠের বেঞ্চের মতো আসনে বসার ব্যবস্থা। এটি মেইল বা কমিউটার ট্রেনের দ্বিতীয় শ্রেণির আসন।