তুফানের ‘জুলি’ চরিত্রের জন্য যেভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন নাবিলা
সবে মা হয়েছেন। তাই ওজন বাড়তি হবে, এটাই তো স্বাভাবিক। মাসুমা রহমান নাবিলাও স্বাভাবিকভাবেই তাই বাড়তি ওজনটা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু বেশ কিছু শারীরিক জটিলতায়ও ভুগছিলেন তিনি। যেমন শরীর খুব ভারী লাগত, পায়ে ব্যথা হতো। ভেবেছিলেন ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে বুঝি এসব হচ্ছে। তাই একজন পুষ্টিবিদের শরণাপন্ন হলেন ‘তুফান’ সিনেমার এই অভিনেত্রী। ‘স্মিহার বয়স তখন ছয় মাস। সেই সময় আমি পুষ্টিবিদের পরামর্শমতো খাবার খেয়ে প্রায় পাঁচ কেজি ওজন কমাই,’ বলছিলেন নাবিলা।
২০২৩-এর নভেম্বরের কথা। এ সময় ‘তুফান’-এর জন্য নায়িকার খোঁজ চলছিল। সিনেমার জুলি চরিত্রের জন্য নাবিলাকে ডাকা হয়। তখনো চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হননি। তবে তাঁকে জানানো হয় যে জুলি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নাবিলাকে অনেকটা কম বয়সী দেখাতে হবে।
এর আগে ২০২৩ সালের শুরুতে সরকারি অনুদানের ছবি ‘বনলতা সেন’-এ অভিনয়ের প্রস্তাব পান নাবিলা। এই ছবির জন্যও তাকে ওজন কমানোর কথা বলা হয়। আবার পুষ্টিবিদের কাছে যান নাবিলা। তাঁর কথামতো ডায়েট মেনে সাড়ে তিন মাসে ৬২ থেকে ৫৬ কেজি ওজনে ফেরেন। যেহেতু মেয়েকে রেখে বাইরে শরীরচর্চার সুযোগ মিলত না, তাই বাড়িতেই প্রতিদিন খালি হাতে এক্সারসাইজ করতেন। ট্রেড মিলে হাঁটতেন। তবে ‘বনলতা সেন’-এর কাজ শেষ হলে ডায়েট মেনে খাওয়ায় কিছুটা বিরতি নিয়েছিলেন, ‘তখন মনে হতো, ইশ্ কত দিন তিহারি খাই না। মজাদার কোনো খাবার খেতে ইচ্ছা হলেই খেয়ে ফেলতাম। যে কারণে তখন ওজন আবার চার-পাঁচ কেজি বেড়ে যায়।’
নভেম্বরে ‘তুফান’-এ অভিনয়ের প্রস্তুতি হিসেবে আবারও ওজন কমানোর মিশনে নামেন নাবিলা। খাবারের তালিকায় নিয়মিতই থাকত সবজি, ফল। ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের কারণে দুধ খেতে পারতেন না। বিকল্প হিসেবে খেতেন টক দই বা পনির। স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি ত্বক ও চুলের যত্নে যোগাসন করেন নাবিলা। ‘নিয়মিত প্রাণায়াম করি। এ ছাড়াও যেহেতু ডায়েটে সব পুষ্টিকর খাবার থাকত, যার একটা প্রভাব ত্বক ও চুলে পড়ে। ত্বক ও চুলের জন্য তাই বাড়তি যত্ন নিতে হয়নি,’ বলছিলেন নাবিলা।
নাবিলাকে ছবিতে জুলি চরিত্রে বেশ ন্যাচারাল মেকআপে দেখা যায়। জানালেন, জুলি চরিত্রটিকে ধারণ করতে খুব একটা পরিবর্তন নিয়ে আসতে হয়নি। তিনি যেমন ন্যাচারাল টোনের মেকআপে থাকতে ভালোবাসেন, তেমন লুকেই পর্দায় উপস্থিত হয়েছেন। এ জন্য ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ধরে রাখা জরুরি। তবে নাবিলা আগেই জানিয়েছেন ছবির প্রস্তুতি হিসেবে ত্বক ও চুলের যত্নে খুব বেশি কিছু করেননি। সাধারণত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে সব সময় বিশেষ মনোযোগ দিয়ে থাকেন নাবিলা। মাঝেমধ্যে পারলারে ফেসিয়াল নিতে যান। ব্যস, ত্বকের যত্নে এতটুকুই, জানালেন নাবিলা। চুলের যত্নে স্ক্যাল্প পরিষ্কারের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখেন নাবিলা। ‘স্ক্যাল্প পরিষ্কার থাকলে এমনিতেই স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখায় চুল।’এ ছাড়া চুলের যত্নে নিয়মিত তেল দিয়ে থাকেন নাবিলা।
অবশেষে এই বছর রোজা শুরুর ২ দিন আগে যখন তুফানের জুলি চরিত্রের জন্য তাঁকে নির্বাচন করা হয়, তখন তাঁর ওজন ৫৩ কেজি। শুরু হয় তুফানের শুটিং। সম্প্রতি পবিত্র ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রটি ইতিমধ্যেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছ। শাকিব খান-নাবিলা জুটিকে সাগ্রহে গ্রহণ করেছেন দর্শক।
তুফান নিয়ে এখন বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন নাবিলা। কখনো শাড়ি, কখনো আবার সালোয়ার-কামিজ বা প্যান্ট-কুর্তা পরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হচ্ছেন নাবিলা। তবে সব ছাপিয়ে তার সৌন্দর্যের স্নিগ্ধতাই নজর কাড়ছে সবার।