রঙিন চুলে টক দই, লেবু, আমলকী কেন ব্যবহার করবেন না

রঙিন চুলে টক দই, লেবু, সিরকার মতো অম্লীয় উপকরণ ব্যবহার করা যাবে না। মডেল: রাবেয়া রাবু, সাজ: অরা বিউটি লাউঞ্জ
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

বাহারি রঙে অনেকেই চুল রাঙাচ্ছেন আজকাল। কিন্তু মুশকিল হলো, রাসায়নিক রং ব্যবহারে চুল খানিকটা রুক্ষ হয়ে পড়ে । তাই রঙিন চুলকে মসৃণ ও নরম রাখতে প্রয়োজন একটু বাড়তি যত্ন।

আবার চুলের রঙের স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্যও কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হয়। এই যেমন রঙিন চুলে কোনো অম্লীয় উপাদান প্রয়োগ করতে নেই।

চুলে ব্লন্ড জাতীয় রং করার ক্ষেত্রে এমন কোনো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া যাবে না, যাতে উচ্চ তাপের প্রয়োজন হয়।
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

শ্যাম্পু হোক ঠিকঠাক

প্রয়োজন বুঝে বুঝে এক দিন অন্তর শ্যাম্পু করুন। ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহারে চুল থাকবে কোমল। তবে সব শ্যাম্পু রঙিন চুলের উপযোগী নয়। কালার প্রটেক্ট শ্যাম্পু বেছে নিতে হবে, এটি চুলের রংকে সুরক্ষিত রাখবে।

কিছু কিছু ফ্যাশনেবল রং করানোই হয় অস্থায়ী ভিত্তিতে, প্রতিবার শ্যাম্পু করার সময় এগুলো মলিন হতে থাকে। এমন রং করানোর পর যদি কেউ রং ধরে রাখার জন্য শ্যাম্পু করা একেবারেই কমিয়ে দেন, সেটিও কিন্তু ঠিক নয়। তাতে মাথার ত্বকে ঘাম এবং ধুলা-ময়লা জমে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিই বাড়ে।

চাই আরও আর্দ্রতা

শ্যাম্পুর পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজিং কন্ডিশনার প্রয়োগ করতে হবে। এ ছাড়া প্রতিদিন চুলে সেরাম ব্যবহার করা প্রয়োজন। বাইরে যাওয়ার আগে হালকা ভেজা চুলে সেরাম লাগিয়ে নিলে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব থেকেও রঙিন চুলকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।

কিছু কিছু ফ্যাশনেবল রং করানোই হয় অস্থায়ী ভিত্তিতে, প্রতিবার শ্যাম্পু করার সময় এগুলো মলিন হতে থাকে।
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

প্রতি সপ্তাহে বিশেষ যত্ন

  • সপ্তাহে এক-দুই দিন হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন। তাতে চুল পুষ্টি পাবে। তবে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে সঠিক নিয়মে। চুলের ধরন অনুযায়ী সঠিক মাস্কটি বেছে নিতে হবে। প্রথমে উষ্ণ তেল মালিশ করে নেওয়া ভালো। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। দ্বিতীয়বার শ্যাম্পু প্রয়োগ করুন। আবার চুল ধুয়ে নিন। এবার লাগিয়ে নিন মাস্ক। মাস্কের সঙ্গে অন্য কোনো উপাদান মেশাবেন না। মাস্ক রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করা হয়, এর সঙ্গে ঘরোয়া যত্নের উপকরণের সংমিশ্রণ করা যাবে না। মাস্ক প্রয়োগের ১৫-৩০ মিনিট পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

  • একটি ডিম, মাঝারি আকারের একটি কলা, সামান্য মধু, সামান্য অ্যালোভেরার নির্যাস এবং পরিমাণমতো গরুর দুধ মিশিয়ে প্রোটিন প্যাক তৈরি করতে পারেন। এতে অন্য কোনো উপকরণ যোগ করবেন না। সপ্তাহে একদিন হেয়ার মাস্কের পরিবর্তে এই প্যাকটি প্রয়োগ করতে পারেন। প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে তৈরি বলে প্যাকের কার্যকারিতা পেতে একটু বেশি সময় লাগলেও আপনার চুল ভেতর থেকে পুষ্টি পাবে। 

যা এড়িয়ে চলতে হবে

  • রঙিন চুলে কোনো অম্লীয় বা অ্যাসিডিক উপকরণ প্রয়োগ করা যাবে না। অর্থাৎ টক দই, সিরকা, লেবু, কমলালেবু বা অন্য কোনো টক ফল বা সেটির নির্যাস লাগানো যাবে না।

  • চুলে ব্লন্ড জাতীয় রং করার ক্ষেত্রে এমন কোনো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া যাবে না, যাতে উচ্চ তাপের প্রয়োজন হয়। নিতান্তই প্রয়োজন হলে ড্রায়ারের তাপমাত্রা কমিয়ে নিতে হবে, তা ছাড়া চুলের সুরক্ষার জন্য সেরামও লাগিয়ে নিতে হবে।