রুপার গয়নায় সাজ
সাজে বাঙালিয়ানার ছাপ থাক কিংবা পাশ্চাত্য আমেজ—গয়নার উপকরণ হিসেবে অনায়াসেই বেছে নেওয়া যায় রুপা। এর সঙ্গে নানা অনুষঙ্গও জুড়ে দেওয়া হয় গয়না গড়ার সময়। মোটিফেও থাকছে বৈচিত্র্য। পাথরের ব্যবহার ছাড়া কেবল রুপার গড়ন বদলে দিয়েই গয়নায় আনা যায় ভিন্নতা।
গয়নার দোকান গ্লুড টুগেদারের প্রতিষ্ঠাতা মেহনাজ আহমেদ বলছিলেন ফিউশনধর্মী রুপার গয়নার কথা। এ ধরনের ভিন্ন মোটিফের গয়না, শাড়ি, কুর্তা, এমনকি পাশ্চাত্য ধারার পোশাকের সঙ্গেও মানায়। মিনাকারি কাজে খানিকটা রঙের ছোঁয়াও চলে আসে রুপার গয়নায়। ঐতিহ্যবাহী রুপার গয়না সংগ্রহে রাখেন কেউ কেউ। এমন সংগ্রহে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়ে ঐতিহ্যের গল্পগাথা। পাথর না থাকলেও সুন্দরভাবে পলিশ করা যেকোনো রুপার গয়না দেখায় চকচকে। এ ছাড়া রুপায় রোডিয়াম প্লেটিং করা হলে হোয়াইট গোল্ডের মতো দেখায়।
রুপালি রং ছাপিয়ে
রুপার গয়নায় চমৎকার সব পাথরের ব্যবহার হচ্ছে আজকাল। নীলকান্তমণি, টারকোয়েস, নবরত্ন কিংবা ওপালের মতো পাথরের রং যোগ হতে পারে রুপায়। জারকন বা কিউবিক জারকোনিয়াও ব্যবহার হতে পারে। হিরার মতো ব্রিলিয়ান্ট কাট কিংবা প্রিন্সেস কাটের মতো কাটের পাথর ব্যবহারে রুপার গয়না হয়ে উঠতে পারে অভিজাত। রুপার অক্সিডাইজ রূপও আছে, ফ্যাশনধারায় এ রূপও জনপ্রিয় বলেই জানালেন কনক দ্য জুয়েলারি প্যালেসের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার লায়লা খায়ের। রুপার সঙ্গে কাঠের বিডস, এমনকি চামড়ার সমন্বয়েও গয়না হতে পারে। কাঠের বিডসে থাকতে পারে পছন্দসই রং। কাঠের নেকলেসের সঙ্গে রুপার লকেটের সমন্বয়ে আসবে ভিন্নতা। একটা সময় যেকোনো গয়নার রং বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পোশাকের রংকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। এখন কিন্তু সেখানেও ভিন্নতা এসেছে। সবুজ রঙের পোশাকের সঙ্গে আপনি পছন্দমতো রঙের পাথর বসানো রুপার গয়না বেছে নিতে পারেন। একইভাবে পোশাকে সোনালি কারুকাজ থাকলেও সেটির সঙ্গে রুপার গয়না পরা যেতে পারে অনায়াসেই। সাদামাটা যেকোনো পোশাকের সঙ্গে অসাধারণ একটি রুপার গয়নায় আপনাকে দেখাবে আলাদা। রুপার টপ, ঝুমকা, দুল, নাকফুল, নথ, হাতের বা পায়ের আংটি, ব্রেসলেট, নূপুর, চিকন চুড়ি, চওড়া বালা, চওড়া বা চিকন টিকলি, খোঁপার কাঁটার মতো গয়নার চল রয়েছে এ সময়ের ফ্যাশনে। বৈচিত্র্যময় নকশার রুপার আংটি, চানবালি, রতনচূড় গোলাপ বালা, নকশা বালা ঐতিহ্যবাহী ধারার গয়না।
মোটিফে বৈচিত্র্য
জ্যামিতিক মোটিফ, ঐতিহ্যবাহী মোটিফ কিংবা প্রকৃতি থেকে নেওয়া কোনো মোটিফের রুপার গয়না বেছে নিতে পারেন আধুনিক ধারার সাজে। ছোট–বড় নানা আকারে একই মোটিফের পুনরাবৃত্তি করেও বৈচিত্র্য আনা যায়। পয়সা বা মাদুলির মতো ঐতিহ্যবাহী মোটিফ আজও টিকে আছে। ঢোল বা মাদুলি মোটিফের গয়না যে কেবল শাড়ির সঙ্গেই পরা যাবে, এমনটা নয়।
আরও যা
একটু যত্নের সঙ্গে ব্যবহার করলে রুপার গয়না নষ্ট হয় না। তবে সময়ের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই সামান্য কালচে ভাব চলে আসে। এ রকম ক্ষেত্রে অবশ্য নিয়মমাফিক পরিষ্কার করে নিলেই গয়নার মূল রং ফিরে আসে।
সোনার বিকল্প হিসেবে গোল্ড প্লেটেড রুপার গয়না বেশ জনপ্রিয়। দামে সাশ্রয়ী এসব গয়না কালচে হয়ে যাওয়ার প্রবণতাও কম।
দ্রুত ফ্যাশনের যুগে অনেক ক্রেতাই সাশ্রয়ী দামে অধিকসংখ্যক গয়না কিনতে আগ্রহী হন। সে ক্ষেত্রে সাধারণভাবে ব্যবহারের জন্য রুপার ছোটখাটো গয়না গড়তেও দামটা একটু বেশি মনে হতে পারে। কিন্তু নানা রকম মূল্যবান পাথরের বাইরেও কাচ, পাথর ও অন্য সাশ্রয়ী অনুষঙ্গের সমন্বয়ে রুপার গয়না তৈরির সুযোগ আছে।