বাজার করার কাজে কি আপনি নতুন, জেনে নিন এই বিষয়গুলো
ভালো রান্নার পেছনে কেবল একজন ভালো রাঁধুনিই থাকেন না, ভালো বাজার করতে জানা একজন মানুষও থাকেন। বুঝেশুনে এবং জিনিস চিনে বাজার করতে পারাটা একটা দারুণ গুণ। আপনি যদি নিজেই বাজার করেন, নিজেই রাঁধেন, তাহলে ভালো রান্না পাওয়ার জন্য আপনার দুটি কাজই ঠিকঠাক জানতে হবে। যাঁরা নতুন বাজার করা শুরু করেছেন, তাঁদের জন্য বিষয়টি আরও কঠিন। সে আপনি কাঁচাবাজারেই যান কি সুপারশপ, বাজার করার কিছু মূল বিষয় আপনার জানা থাকতেই হবে। আজকাল অনলাইনেও বাজার করা যায়। অনলাইনের বাজারটা বুঝে নেওয়ার সময়ও কিছু জিনিস দেখেশুনে না নিলে পরে পস্তাতে হতে পারে।
বাজার করার আগে তালিকা
বাজার করার আগে অবশ্যই তালিকা করে নিন। প্রথমে ভাঁড়ার ঘর, রান্নাঘর, ফ্রিজ ও ডিপফ্রিজ ভালোভাবে দেখে নিন। কী প্রয়োজন, কতটা প্রয়োজন, তার একটা হিসাব করে নিন।
তালিকায় পচনশীল খাবার খুব বেশি পরিমাণে রাখবেন না।
কোন মৌসুমে কী পাওয়া যায়, সে বিষয়ে ধারণা থাকাও জরুরি। বাজারে যাওয়ার পর কোনো মৌসুমি খাবার মৌসুম ছাড়াও বিক্রি হতে দেখতে পারেন। এগুলোর দাম বেশি হয়, স্বাদও তেমন ভালো থাকে না।
কখন যাবেন, কোথায় যাবেন
কখন বাজারে যাবেন, ঠিক করে নিন। সকাল সকাল বাজার করলে টাটকা জিনিস পাবেন। আবার খুব ভিড়ের সময় বাজার করাটাই মুশকিলের হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কাঁচাবাজারে যাবেন, নাকি সুপারশপে, সেটিও ভেবে দেখুন। কাঁচাবাজারে অনেক জিনিসের ভেতর থেকে বাছাই করার সুযোগ থাকে। দামও কম পড়ে। সুপারশপে কিছু পণ্যে ভ্যাট দিতে হয়, আবার কিছু জিনিস, যেমন মাংসের নির্দিষ্ট টুকরা কিনতে গেলে খরচ পড়ে বেশি। তবে কখনো কখনো আবার অফার বা মূল্যছাড়ে খরচও বাঁচে। কাছাকাছি বিভিন্ন কাঁচাবাজারে পণ্যের মানেও তফাত থাকতে পারে। কয়েক দিন বাজার করলে এই বিষয়গুলো সম্পর্কেও ধারণা পাবেন।
কাছাকাছি কোথাও হাট বসলে সেখানে যেতে পারেন। আপনার কাছাকাছি কোথাও ‘কৃষকের বাজার’ বসলে সেখানে যান। তাজা জিনিস পাবেন।
পচনশীল দ্রব্য কিনতে খুব বেশি দূরে না যাওয়াই ভালো।
বাজারে গিয়ে
বাজারে গিয়ে প্রথমে এমন জিনিস কিনুন, যেগুলো পচনশীল নয়। মাছ কিনুন সবশেষে।
পচনশীল পণ্য বহন করুন আলাদা ব্যাগে। এসব পণ্যের ব্যাগ কখনো অন্য ব্যাগের নিচে রাখবেন না। ভঙ্গুর জিনিসও সাবধানে বহন করুন।
মাছ কেনার আগে মাছের চোখ, কানকো, ত্বকের নমনীয়তা এবং ঘ্রাণ খেয়াল করুন। টাটকা মাছের চোখ হয় স্বচ্ছ; কানকো থাকে গাঢ় রঙের ও ভেজা ভেজা। টাটকা মাছের ঘ্রাণ থাকে ঠিকঠাক, ত্বকে হালকা চাপ দিলে দেবে যায় না। এসবের অন্যথা হলে সেই মাছ নেবেন না।
মাংস, শাক বা সবজি শুষ্ক হয়ে পড়লে নেবেন না। লাউ কেনার সময় দেখে নিন, বোঁটার কাছের অংশ নরম কি না। ঢ্যাঁড়সও কিনুন নরম দেখে।
মুরগি কেনার সময় সেটিকে অসুস্থ বা নিস্তেজ মনে হলে কিনবেন না।
মাছ বা মুরগি কেনার কথা চূড়ান্ত করার সময়ই তা কেটেকুটে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে রাখুন। খরচের বিষয়টাও চূড়ান্ত করে নিন।
ডিম নেওয়ার সময় দেখে নিন, ভাঙা আছে কি না।
চাল, ডাল, অন্যান্য শস্যদানা বা চিনি বস্তা থেকে নেওয়া হলে খেয়াল করুন, তাতে অন্য কিছু মিশে আছে কি না বা পোকামাকড় দেখা যাচ্ছে কি না।
ফল আধপাকা কেনা ভালো।
প্যাকেটজাত বা বোতলজাত দ্রব্য কেনার সময় মেয়াদ দেখে নিন। উপকরণগুলোও দেখে নেওয়া ভালো।
অফার বা মূল্যছাড়ে জিনিস কেনার সময়ও মেয়াদ খেয়াল রাখুন। জিনিসটি আসলেও প্রয়োজন কি না, ভেবে দেখুন।
সূত্র: রিডারস ডাইজেস্ট