২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

অনলাইনে ‘রিভিউ’ দেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন

অনলাইন রিভিউর ক্ষেত্রে মেনে চলা দরকার কিছু আদবকেতা
ছবি: প্রথম আলো

যেকোনো সময়ের চেয়ে ভোক্তাদের হাতে এখন অনেক বেশি ক্ষমতা। প্রযুক্তির এ যুগে এসে কাস্টমার বা গ্রাহকের রিভিউ পুরোটাই হয়ে পড়েছে অনলাইনভিত্তিক। যেকোনো ব্যবহার বা সেবা গ্রহণের পর হুট করে অনলাইনে তার রিভিউ লিখে ফেলাটা এখনকার গ্রাহকদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অনেকেই আবার রিভিউ দেখেই সিদ্ধান্ত নেন, পণ্যটি কিনবেন কি না। তাই প্রতিষ্ঠানগুলো ‘ভালো রিভিউ’ পিন করে রাখতে বা বারবার পোস্ট করতে ভোলেন না। তবে এ ক্ষেত্রে কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম না থাকায় ভুল-বোঝাবুঝি আর অসচেতনতা থেকে আপনার একটি ‘বাজে রিভিউ’-ই প্রতিষ্ঠানটির ধস নামিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। হ্যাঁ, গ্রাহক হিসেবে কোনো পণ্য সম্বন্ধে নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সমাজের আর পাঁচজনের কাছে তুলে ধরার অধিকার আপনার আছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মেনে চলা দরকার কিছু আদবকেতা। কী সেগুলো, জেনে নেওয়া যাক।

যা কিছু ভালো তা সবার আগে বলুন

রিভিউ লেখার সময় ভারসাম্য বজায় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। নেতিবাচকতা তুলে ধরার আগে ইতিবাচকতাকে আগে প্রচার করুন। এতে আপনার রিভিউর গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যাবে অনেকটাই। আগে ভালো কথা লিখলে খারাপ কথা লেখার সময় তার ঝাঁজ বা তিক্ততাও কমে আসবে। এতে আপনার রিভিউর মর্যাদা বাড়বে, সেবা প্রদানকারীর কাছেও আপনার মতামত অগ্রাধিকার পাবে। ক্ষমতার অপব্যবহার করার আগে মনে রাখবেন, আপনিও এর শিকার হতে পারেন।

ব্যক্তিগত আক্রমণ একেবারেই নয়

কোনো পরিষেবা নিতে গেলে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে আপনার মিথস্ক্রিয়া ঘটবে, এটা যেমন স্বাভাবিক, ঠিক তেমনই কোনো ব্যক্তির ব্যবহার, উপস্থাপনা আপনার কাছে ভালো না-ও লাগতে পারে, এটিও স্বাভাবিক। কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে সংশ্লিষ্ট পুরো প্রতিষ্ঠানকে বিচার করতে যাবেন না। আবার মেজাজ হারিয়ে রিভিউ সাইটে কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসবেন না।

যা জানতে চান না, তা লিখবেন না

অনলাইনে কিছু রিভিউ সাইট আপনাকে বেনামে সমালোচনা করার সুযোগ দেয়৷ বেনামে লেখার সুযোগ পেয়ে বোকামি করে বসবেন না। আমরা অনেকেই বেনামে লেখার সুযোগ পেলে অনেক নেতিবাচকতাই তুলে ধরি, যা হয়তো নিজের নামে লিখতে হলে তুলে ধরতে চাই না। ‘ইয়েল্প’ বা ‘ট্রিপ-অ্যাডভাইজার’-এর মতো সাইটে আপনি যে রিভিউ লিখবেন, তা আপনার নামেই প্রকাশিত হবে। অন্যরা চাইলে তা দেখতেও পারবেন যেকোনো সময়। তাই রিভিউ লেখার সময় এমন কথাই তুলে ধরুন, যা আপনি সত্যিকার অর্থেই জানতে চান বা অন্যও উপকৃত হবেন।

কেবল নিজের অভিজ্ঞতাই তুলে ধরুন

আপনি যা দেখেননি, শোনেননি—রিভিউয়ে তা লিখতে যাবেন না। এমন ঘটনা লিখুন, যা আপনার নিজের অভিজ্ঞতা। কোনোভাবেই অন্যের কাছ থেকে শোনা কথা রিভিউয়ে লিখতে যাবেন না।

উত্তেজিত হয়ে বা মাথা গরম করে কিছু লিখবেন না

কোনো পণ্য ব্যবহার করতে গিয়ে বা পরিষেবা গ্রহণ করতে গিয়ে আপনার সন্তোষজনক অভিজ্ঞতা না-ই হতে পারে। এতে আপনার ভেতরে ক্রোধ বা হতাশা তৈরি হতে পারে। টাকা খরচ করে পণ্য বা সেবায় সন্তুষ্টি না মিললে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। তবে এ সময় মাথা গরম করে সেই পণ্য বা পরিষেবার রিভিউ লিখতে বসবেন না। মনে রাখবেন, উত্তেজিত হয়ে করা ৯৯  শতাংশ কাজই ভালো ফল বয়ে আনে না। ক্রোধানলে পুড়ে কোনো গ্রাহক যদি নেতিবাচক কথা রিভিউয়ে লিখেও ফেলেন, দ্রুততম সময়ের ভেতর গ্রাহককে সেই রিভিউ মুছে ফেলার বা সংশোধন বা পরিমার্জনের সুযোগ দিয়ে থাকে ট্রিপ-অ্যাডভাইজার।

যা আশা করেছিলেন, তা পেয়েছেন কি না—মিলিয়ে দেখুন আগে

গ্রাহক হিসেবে আপনি যা আশা করেছেন, তা যদি পেয়ে থাকেন, তাহলে রিভিউতে নেতিবাচক কথা লেখা থেকে বিরত থাকুন। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তার পন্য বা সেবা প্রচারে বিজ্ঞাপনে যা যা বলেছে, সেই কথাগুলো পালন করেছে কি না, তা মিলিয়ে দেখুন।

সরাসরি বলুন

রিভিউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো ‘জনবহুল’ সাইটে না লিখে সম্ভব হলে ই-মেইলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে লিখুন। আপনার মতামত ‘সরাসরি’ মেসেজে বা ফোনে জানান, তবে সামনাসামনি নয়। এভাবে আপনার বার্তাটাও পৌঁছাল, আবার প্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হলো না।


সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট