হয় না, হয় না করে হয়েছে প্রেম। কত নির্ঘুম রাত, কান্নাকাটি, জল্পনা-কল্পনা। সবকিছুর ইতি টেনে প্রথম দেখা করতে যাচ্ছেন। দুশ্চিন্তায় আরও একটি রাতের ঘুম শেষ। যাওয়ার আগে ভুলে ফেলে গেলেন মানিব্যাগ। হাত ঘেমে, জিহ্বা শুকিয়ে অবস্থা বেশ খারাপ। যাক শেষ অবধি যখন পৌঁছালেন প্রেমিকার কাছে, তখন বলতে চাননি এমন একটি বেফাঁস কথা বলে ফেললেন। ব্যস, আর কী। বাকিটা না বললেও বোঝা যায়। শেষ পর্যন্ত কেমন কেটেছিল সেদিনটি।
আর যদি পারিবারিক সম্বন্ধের বিয়ে হয়। কথাবার্তা হয়ে গেছে পরিবারে–পরিবারে। পাত্র-পাত্রী প্রথম কোথাও দেখা করতে যাবেন। বিশেষ এই দিনটিতেও অনেকে গোলমাল বাধিয়ে ফেলেন। রিডার্স ডাইজেস্ট সাময়িকীর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আপনি যা না, প্রথম দেখায় তা আপনি করতে যাবেন না। আপনি মানুষ হিসেবে যেমন, আপনার ব্যক্তিত্ব যেমন, তেমনই আচরণ করবেন। সঙ্গীর কাছে অবশ্যই স্বচ্ছ থাকা উচিত।
রেস্তোরাঁ বা অন্য কোথাও দেখা করতে যাওয়ার আগে ঠিক করে নিতে হবে। এই জায়গা দুজনেরই পছন্দের কি না। এমনকি খাবারের অর্ডার করার আগেও দুজনের পছন্দের কোনো খাবার অর্ডার দিন।
সাবধান ও সতর্ক থাকার চেয়ে মনে রাখবেন আন্তরিক ও ভদ্র থাকাটা বেশি জরুরি। আপনি একজন রুচিবান ব্যক্তি, এটা যেন প্রকাশ পায়।
প্রথম দেখায় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন—
কথা বলুন সাধারণ কোনো বিষয়ে: খুব ভারী কোনো বিষয়ে কথা না বলে দুজনের আগ্রহ আছে এমন বিষয়ে কথা বলুন। বই, সিনেমা, গান এসব নিয়ে কিছুক্ষণ কথা তো বলাই যায়। কার কী পছন্দ, সেটাও জানা হয়ে যাবে। হেসে হেসে কথা বলুন। এতে দুজনের মধ্যে জড়তা থাকলে তা ভেঙে যাবে। সহজ হবে সম্পর্ক।
সরাসরি কথা বলুন: খাবার ভালো লাগছে কি না, জায়গা পছন্দ হলো কি না, এগুলো সরাসরি জিজ্ঞাসা। সঙ্গীকে বিব্রত না করে আপনার কিছু জানার থাকলে বিনয়ের সঙ্গে নরমভাবে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আপনি কতটা সংবেদনশীল সেটিও বোঝা যাবে।
ভিন্ন কোনো পরিকল্পনা: রেস্তোরাঁতে পুরো সময়টা না কাটিয়ে খাওয়ার পর সিনেমা দেখতে যেতে পারেন। বইয়ের দোকানেও ঢুঁ মারতে পারেন। আবার কিছুটা পথ পাশাপাশি একসঙ্গে হাঁটাও যেতে পারে। নীরব থেকেও অনেক কিছু বলা যায়। একে অন্যকে অনুভব করা যায়। গাড়ি থাকলে শহরের মধ্যে পছন্দের কোনো জায়গা ঘুরতে যেতে পারেন। সঙ্গীর পছন্দ হচ্ছে কি না, সেটি জিজ্ঞাসা করে নিতে ভুলবেন না। হাজার হোক প্রথম দেখা বলে কথা। সেদিন না জানলে কবে জানবেন।
উপহার: সামর্থ্য অনুযায়ী ছোট কোনো উপহার নিতে পারেন। দামি কোনো কিছু দিতে হবে তা তো নয়। ফুলে অ্যালার্জি না থাকলে ফুল, চকলেট ও বই দিতে পারেন। এগুলো পছন্দ করে না, এমন মানুষের সংখ্যা কম।
বেফাঁস কিছু বলে ফেললে: বলতে চাননি কিন্তু বন্দুকের গুলির মতো বেরিয়ে গেছে, এমন কোনো বেফাঁস কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে ‘স্যরি’ বলবেন। আপনাকে যেন ভুল না বোঝে, আপনি সঙ্গীকে বিব্রত বা কষ্ট দিতে চাননি সেটি বুঝিয়ে বলুন। রাগ দেখাবেন না কোনোভাবেই।
বাড়াবাড়ি কিছু না করা: শুরুর দিনেই জোর করে হাত ধরা বা খুব বেশি ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা না করাই ভালো। সঙ্গীর কোনো আচরণ পছন্দ না হলে সেদিনই বলার দরকার নেই। পরেও বুঝিয়ে বলতে পারবেন।
সূত্র: ফেমিনা, সেভেনটিন, রিডার্স ডাইজেস্ট