আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো, প্লিজ!
আজ মে মাসের দ্বিতীয় রোববার, মা দিবস। বিশেষ এই দিন উপলক্ষে আমরা মাকে নিয়ে লেখা আহ্বান করেছিলাম পাঠকের কাছে। পাঠক লিখেছেন তাঁর বেড়ে ওঠার পেছনে মায়ের অনুপ্রেরণার গল্প।
প্রত্যেক সন্তানের কাছেই মা খুব প্রিয়। মা সম্পর্কে বলতে গেলে সবার কথাই অনেকাংশে মিলে যাবে। তবে আলাদা করে বলতে পারি, আমার মা অনেকটাই শিশুসুলভ। একদম বাচ্চাদের মতো। কেন, সেটা বিস্তারিত বলছি না। বললে মা বকা দেবে!
মা এমনই। আমার ওপর রাগ করে। কিন্তু আমি তাকে ছেড়ে কয়দিনের জন্য কোথাও গেলেই কেঁদে ভাসিয়ে দেয়। বেড়ানো শেষে যখন বাড়ি ফিরে আসি, তখন এত আদর করে, এত ভালোবাসা দেয় যে মাঝেমধ্যে মনে হয় মায়ের থেকে দূরে থাকি। দূর থেকে এসে মায়ের যে আদর পাই, কাছে থাকলে হয়তো দুজনই দুজনকে এতটা অনুভব করতে পারি না।
আমি যখন খুব ছোট, তখন থেকেই আমার নাচ, গান, আবৃত্তি—এসবের প্রতি ঝোঁক ছিল। মা সেটা লক্ষ করেছে। যখন প্রাথমিকে পড়ি, তখন আমরা গ্রামে থাকতাম। আমাদের উপজেলায় প্রতিবছর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হতো। নিয়ম ছিল, একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ তিনটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে। আমি নাম দিয়েছিলাম নাচ, আবৃত্তি আর উপস্থিত বক্তৃতায়। দেখা গেছে, তিনটিতেই আমি প্রথম। আমার নাচের শিক্ষক ছিল মা। পড়াশোনাও মা-ই দেখত। স্কুলে সব সময় প্রথম হতাম। এর অন্যতম কারণ—মায়ের সহযোগিতা। একটা পর্যায় পর্যন্ত মা সব নোট করে দিত, আমার কাজ ছিল শুধু পড়া। আমি হয়তো আজকের এই অবস্থান আসতে পারতাম না, যদি না অনুপ্রেরণা দিত মা।
এই সবকিছুর জন্যই আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ, মা। সামনে আরও অনেকটা পথ যেতে হবে। তুমি প্লিজ পাশে থেকো, যেভাবে এত দিন ছিলে। সময়ে-অসময়ে, বুঝে না বুঝে, ভুল করে তোমার সঙ্গে উঁচু গলায় কথা বলে ফেলি। আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো, প্লিজ!
লেখক: আন্জুমান আনোয়ার, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম কলেজ