সুস্থ দাম্পত্য সম্পর্কের পাঁচ বৈশিষ্ট্য
সুস্থ সম্পর্কের কোনো বিকল্প নেই। নিজের শারীরিক, মানসিক, আত্মিক প্রশান্তি; কর্মক্ষেত্র, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক; শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস—এই সবকিছুই ভালো থাকবে, যদি আপনি একটা সুস্থ সম্পর্কে থাকেন। আর আপনার পরিবারে যদি কোনো সন্তান থাকে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে উপহারটা আপনি তাকে দিতে পারেন সেটা হলো, আপনাদের সুস্থ দাম্পত্য জীবন। অনলাইন লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন সুইফ ওয়েলনেসের এডিটর ইন চিফ অ্যাশলে রোলিংস সুস্থ সম্পর্কের পাঁচ উপাদান বা বৈশিষ্ট্যের কথা জানিয়েছেন।
১. বিশ্বাস
বিশ্বাস করুন, বিশ্বাসই সুস্থ দাম্পত্য সম্পর্কে প্রথম আর সবচেয়ে জরুরি বৈশিষ্ট্য। বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে আপনারা একে অন্যের ওপর কতটা নির্ভর করতে পারেন।
২. সততা
একে অপরের প্রতি সৎ থাকার কোনো বিকল্প নেই। খোলামেলা আলাপ-আলোচনা একটা সম্পর্কের গভীরতা নির্ধারণ করে দেয়। আপনি নিজের চিন্তা, মতামত, অভিজ্ঞতা, অনুভূতি বা বোঝাপড়া অপর পক্ষের সঙ্গে কতটা সততার সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে আপনাদের সম্পর্কের গভীরতা।
৩. আবেগীয় নির্ভরশীলতা
একটা সম্পর্কে শারীরিক, অর্থনৈতিক বা সামাজিক অবস্থানগত নির্ভরশীলতা থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আবেগীয় নির্ভরশীলতা। ভালোবাসা আবেগীয় নির্ভরশীলতার ভিত্তি।
৪. সম্মান ও সমানুভূতি
যে যেমন, তাকে সেভাবেই মেনে নেওয়া, কখনো কখনো তাকে তার মতো থাকতে দেওয়া, যদি সেটাতে আপনার মত না থাকে, তবু। সম্পর্কে ভালোবাসা বা নির্ভরতার চেয়েও সম্মান বেশি জরুরি। একে অপরের প্রতি সম্মান থাকলে ভালোবাসা হারিয়ে ফেলেও আবার নতুন করে নতুনভাবে আবিষ্কার করা যায়। একে অপরের প্রতি নির্ভরতা না থাকলেও সম্মানের জোরে দুটো মানুষ পাশাপাশি দীর্ঘসময় পথ চলা যায়। আপনার মতের সঙ্গে অপর পক্ষের মত না মিলতেই পারে, সেটাকে আপনি সম্মান করুন।
সমানুভূতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ইমোশন। সুন্দর, স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের পেছনে এই অনুভবের ভূমিকা খুবই জোরালো। সমানুভূতি আর সম্মান বিষয়টা আমাদের একজন আরেকজনের প্রতি জাজ মেন্টাল না হয়ে বরং একটা মানুষ যেমনই হোক, তাকে সেভাবেই গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করে। দুটি মানুষ পাশাপাশি দীর্ঘসময় শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ থেকে পথ চলার জন্য সমানুভূতির কোনো বিকল্প নেই।
৫. ক্ষমা করে দেওয়া
কোনো মানুষ যেমন নিখুঁত নয়, তেমনি দুটো মানুষের সম্পর্কও পুরোপুরি পারফেক্ট হয় না। আর এটিই স্বাভাবিক। কেবল দাম্পত্য সম্পর্কই নয়, পৃথিবীর কোনো সম্পর্কের গ্রাফই সরলরেখা নয়। পারফেক্ট নয়। সম্পর্কে অনেক চড়াই-উতরাই আছে। কখনো কখনো কেউ ভুল করে ফেলেন, বাড়াবাড়ি করে ফেলেন। যদি সেটা খুব মারাত্মক কিছু না হয় বা বারবার না করে, যদি সে নিজের ভুল বুঝতে পারে, অপর পক্ষের উচিত ক্ষমা করে দেওয়া। একই ভুল যদি ইচ্ছাকৃতভাবে, অসৎ উদ্দেশ্যে বারবার করে, তখন বুঝে নেবেন, সেটা ভুল নয়, দোষ বা অন্যায়। ভুল ক্ষমা করবেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন, প্রতিরোধ করবেন। আর যে আপনার গুণগুলোর ওপর দোষগুলো মনে রাখে আর ক্রমাগত মনে করিয়ে দিতে থাকে, এমন মানুষকে জীবনসঙ্গী বানানোর মতো ভুল করবেন না।
কেবল দাম্পত্য সম্পর্কেই নয়, যেকোনো সম্পর্কে ক্ষমা করে দেওয়া খুবই দরকারি আর মহৎ একটা গুণ। ক্ষমা করার পর দেখবেন আপনি নিজেও অনেকটা হালকা বোধ করছেন।