প্রাক্তন ফিরতে চাইছেন, এখন কী করবেন
ফেসবুক স্ক্রল করতেই একটা কেস স্টাডি চোখে পড়ল। এক জুটি প্রায়ই ‘ব্রেকআপ-প্যাচআপ’-এর ভেতর দিয়ে যেতেন। মানে, এই তাঁরা একসঙ্গে আছেন, আবার দুদিন পরই ব্রেকআপ। আবার হয়তো কিছুদিন পর দুজনকে একসঙ্গে দেখা গেল রেস্তোরাঁয়। তো, সেই জুটি বিয়ে করল। বিয়ের ছয় মাস যেতে না যেতেই দেখা গেল তাঁরা আইনগতভাবে বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন। আবার বিপরীত চিত্রও দেখা যায়। প্রেমের সময় ব্রেকআপের পরও অনেকেই বিরতি নিয়ে ফিরেছেন একে অপরের কাছে। বিয়ে করে দিব্যি সুখের সংসার করছেন।
আসলে প্রাক্তন ফিরতে চাইলে কী করবেন, এ প্রশ্নের কোনো একক উত্তর নেই। একেকজনের ক্ষেত্রে বিষয়টি একেক রকম। তবে সাধারণ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
১. ব্রেকআপটা কি ভুল ছিল?
পেছনে তাকান। কেন হয়েছিল বিচ্ছেদ? সেটা কতটা যৌক্তিক ছিল, ভাবুন। কেউ ফিরতে চাইলেই আবেগের বশে তাঁকে গ্রহণ না করে আবারও যাতে একই অনুভূতির ভেতর দিয়ে যেতে না হয়, সেটি নিশ্চিত করুন। মনে রাখবেন, মানুষ সহজে বদলায় না। সোশ্যাল সাইকোলজিক্যাল অ্যান্ড পার্সোনাল সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, শতকরা ৮৭ ভাগ ক্ষেত্রে প্রাক্তন ফিরে আসার পর সেই সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদে ‘কার্যকর’ হয়নি। তবে আপনার যদি মনে হয় যে আপনাদের সম্পর্কটাকে আরেকবার সুযোগ দেওয়া উচিত, তাহলে কেন নয়!
২. একটু থামুন
হুট করে আবেগের বশে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। ব্রেকআপ করার আগেও ভাবুন। সেই সঙ্গে ‘প্যাচআপ’ করার আগেও সময় নিন। নিজেকে বুঝে ওঠার জন্য সময় নিন। ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলের শিকার হবেন না। নিজের মনের কথা শুনুন। আর সে জন্য সময় নিন।
৩. ‘ট্রায়াল পিরিয়ড’
ব্রেকআপ আর প্যাচআপের মাঝখানে একটা ‘ট্রায়াল পিরিয়ড’ রাখুন। আপনার প্রাক্তনকে পর্যবেক্ষণে রাখুন। দুজন মিলে খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করুন। বোঝাপড়া ঝালিয়ে নিন। মনে রাখবেন, প্রথমবার প্রেমে পড়েছিলেন আবেগে। এবার বিবেক আর যুক্তি দিয়ে সেটাকে বিচার-বিবেচনা করার সময়। পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে তবেই আবার ভাঙা সম্পর্ক জোড়া লাগাতে পা বাড়ান।
৪. প্রাক্তনকে নিয়ে কোন স্মৃতিগুলো আপনাকে নাড়া দেয়?
প্যাচআপের জন্য এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। স্মৃতির অলিগলিতে চট করে ঢুঁ মেরে আসুন। প্রাক্তনের সঙ্গে কোন স্মৃতিগুলো আপনার হৃদয়ে গভীরভাবে ছাপ ফেলেছে? সেগুলো কি আনন্দের, নাকি বিষাদের? মোদ্দাকথা, প্রাক্তনের বিষয়ে আপনার বর্তমান অনুভূতি কেমন? এই প্রশ্নের উত্তরের ওপর নির্ভর করছে আপনার প্রাক্তন টক্সিক, নাকি বিচ্ছেদের কারণ কেবলই ভুল-বোঝাবুঝি।
৫. আর অতীতের সঙ্গে তুলনা নয়
একবার যদি আপনি পুরোনো সম্পর্ক জোড়া লাগিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েই নেন, তাহলে আর অতীতের সঙ্গে কোনো তুলনা নয়। মেক্সিকান-মার্কিন-ফ্রেঞ্চ হলিউড তারকা সালমা হায়েক নিজেদের দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁদের দাম্পত্য জীবনে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাঁরা দুজনই কেবল সমস্যাটির সমাধানের ওপর জোর দেন। কে এই সমস্যা তৈরির জন্য দায়ী বা কার কতটুকু দায়, সেদিকে সময় নষ্ট না করে তাঁরা সামনের দিকে তাকান। যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তরিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। আপনিও ‘প্যাচআপ’ করার পর অতীতে কে কী করেছেন, সেগুলোর ‘রেফারেন্স’ টানবেন না। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে, নিজেদের শুধরে নিয়ে সুন্দরভাবে সামনে এগিয়ে যান।
সূত্র: বেটার হেল্প