বিয়ের দিন প্রথম বরকে সামনাসামনি দেখেছি: অবন্তি সিঁথি
একটি এজেন্সি গানের প্রস্তাব নিয়ে আসে অবন্তি সিঁথির কাছে। তারা জুটি হিসেবে সঙ্গে নিতে চায় প্রবাসী এক গায়ককে, নাম অমিত দে। সেবারই প্রথম অমিত দের নাম শোনেন অবন্তি, পরে গানটি না হওয়ায় নামটিও ভুলতে বসেছিলেন। কয়েক মাস পর মিউচুয়াল বন্ধুদের মাধ্যমে নামটি আবার শোনেন অবন্তি, তবে এবার আর ভোলেননি।
বন্ধুদের মাধ্যমেই তাঁদের চেনা–পরিচয় হলো। এর মধ্যে অবন্তির যুক্তরাজ্যে একটি শো করার প্রস্তাব আসে। সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে বেশ সহযোগিতা করেন অমিত দে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি। কিন্তু বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা তত দিনে গড়ে উঠেছে। এই সম্পর্ক থেকেই নিজেদের মধ্যে কথা বলেন। দুজনই গানপাগল, যে কারণে ভালো বন্ধুত্ব হতে বেশি সময় লাগেনি।
অবন্তি সিঁথি বলেন, ‘আমাদের দুজনকে কাছে টেনে এনেছে গান। পেশাগত এই জায়গায় আমাদের অনেক মিল ছিল। জীবনবোধের কথা যদি বলি, সেটাও মিলে যায়। এখান থেকেই কাছাকাছি আসা।’
২০২২ সালের মে–জুন মাসের দিকে অবন্তি বুঝতে পারেন যে দুজনের ভালো লাগা একবিন্দুতে আটকে যাচ্ছে। প্রথমবার বুঝতে পারেন যে প্রেমে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে গান ঘিরেই প্রেম বাড়তে থাকে। দুই পরিবার একসময় জানতে পারে সেই ভালো লাগার কথা। সবাই উৎসাহ দেন। এরপর আসে বিয়ের পালা। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর সাত পাকে বাঁধা পড়েন অবন্তি আর অমিত।
তবে এই যুগে এসেও যে ঘটনা অবিশ্বাস্য, সেটা হলো দুজনের সরাসরি দেখা না হওয়া। পরিচয় থেকে প্রেম, সবটাই হয়েছে ফোনে। বিয়ের আগপর্যন্ত তাঁদের সরাসরি দেখা হয়নি। অবন্তি বলেন, ‘বিয়ের আগে কখনোই আমরা একে অপরকে সরাসরি দেখিনি। আমাদের প্রথম দেখাই হয়েছে বিয়ের দিন।’
বিয়ের পরে গান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেও ভালো সময় কাটছে অবন্তির। গানপাগল এমন পরিবারের স্বপ্নই তিনি সব সময় দেখেছেন। অবন্তি সিঁথি বলেন, ‘শ্বশুরবাড়িতে নিয়মিত গানের আসর বসে। যে কয়দিন ছিলাম, গান নিয়েই অনেক সময় কেটেছে। সংগীতের প্রতিটি স্তরে তাঁদের পদচারণ। স্বামী ও দেবর পেশাদার শিল্পী। বাকিরাও কেউ বাজান, কেউ গান করেন। সবাই সংগীতের অনুরাগী। শ্বশুরবাড়িতে প্রতিদিনই গান গেয়েছি।’
এই গায়ক-গায়িকা দম্পতি নিজেদের বিয়েকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি ডুয়েট গান করেছেন। বিয়ের কয়েক দিন পরই স্বামী–স্ত্রী মিলে প্রথমবার একসঙ্গে গানটি গেয়েছেন। ‘বিয়ে সংবাদ’ নামের সেই গান ৩১ ডিসেম্বর উন্মুক্ত হয় ইউটিউবে। তার পর থেকে অনেকেই শুনছেন গানটি। নিজেরাই লিখেছেন আর কণ্ঠ দিয়েছেন অবন্তি–অমিত। বিয়ের পর এই গান দিয়েই ফিরেছেন অবন্তি সিঁথি।
বিয়ের অনুষ্ঠানের ভিডিও দিয়ে করা হয়েছে গানটির মিউজিক ভিডিও। অবন্তি বলেন, ‘গানটির সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িত। মজার ব্যাপার হলো, এই প্রথম আমি বিয়ের গান করেছি। গানটি একদমই সাদামাটাভাবে করা।’
বিয়ের পরে নেপালে হানিমুন সেরে এসেছেন অবন্তি–অমিত দম্পতি। অবন্তি জানান, কাউকে না বলেই হানিমুনে গিয়েছিলেন তাঁরা। চেয়েছিলেন দুজনে পছন্দমতো নীরবে কিছুটা সময় কাটাতে। বর্তমানে দুজন আছেন দুই জায়গায়।
অবন্তি বলেন, ‘আমার স্বামী বিয়ের জন্য দেশে এসেছিলেন। ছুটি শেষে ফিরে গেছেন। তাঁকে বেশির ভাগ সময় লন্ডনেই থাকতে হবে। হয়তো আমিও যাওয়া–আসার মধ্যে থাকব।’ বর্তমানে অবন্তি শুধু গান নিয়েই আছেন। তাঁর স্বামী অমিত দে গানের পাশাপাশি লন্ডনে একটি ট্যাক্স কনসালট্যান্সি ফার্মে জুনিয়র অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে যুক্ত।
লেখাটি ‘বর্নিল বিয়ে ২০২৪’–এ প্রকাশিত