কাজপাগল মার্ক জাকারবার্গ কনসার্টে গিয়ে কাটালেন ‘কন্যাদের বাবার জীবন’
এতক্ষণে হয়তো জেনে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে ২২ ও ২৩ জুলাই টেলর সুইফটের কনসার্টে ভক্তদের চাপ এতই ছিল যে তার ফলে ভূকম্পন তৈরি হয়েছিল ২ দশমিক ৩ মাত্রার! দুই দিনের ওই কনসার্টের পর ২৮ জুলাই ক্যালিফোর্নিয়ায় আরেকটি কনসার্ট করেন টেলর সুইফট। আর এতে স্ত্রী-কন্যাদের নিয়ে হাজির হয়েছিলেন মার্ক জাকারবার্গ। কাজপাগল হিসেবে খ্যাত জাকারবার্গ কনসার্টের ছবি ইনস্টাগ্রামে দিয়ে লিখেছেন, ‘কন্যাদের বাবার জীবন’।
মেটার সিইও জাকারবার্গ যে কাজপাগল, তার প্রমাণ মিলল ওই কনসার্টের ঠিক আগেও। ভেন্যুতে যাওয়ার পথে ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে লিখেছেন, ‘কনসার্টে যাওয়ার পথে ১৩টি মেইল চেক করছি।’
তবে এত চাপের পরও কন্যাদের আবদার ফেলেন কী করে জাকারবার্গ! তাই তো দুই মেয়ে ও স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানকে নিয়ে গিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারা শহরের লেভিস স্টেডিয়ামে।
ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা কনসার্টের ছবিগুলোর মধ্যে প্রথমটিতে জাকারবার্গকে দেখা যাচ্ছে স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানের সঙ্গে। রীতিমতো কনসার্টের সাজেই দেখা গেছে তাঁদের। চোখের চারপাশে বৃত্তাকারে লাগিয়েছিলেন রঙিন পুঁতি। দ্বিতীয় ছবিতে বড় মেয়ে সাত বছর বয়সী ম্যাক্সিমা ও মেজ মেয়ে পাঁচ বছর বয়সী অগাস্ট মায়ের নজরদারিতে গান শুনছে একদম বেষ্টনী ঘেঁষে। ওই ছবিতেই জাকারবার্গের হাতে দেখা যাচ্ছে রঙিন ব্রেসলেট। ব্রেসলেটে লেখা টেলর সুইফটের ‘মিডনাইট’, ‘ফিয়ারলেস’, ‘ডেব্যু’সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় অ্যালবামের নাম। শেষ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, জাকারবার্গের দুই কন্যার সঙ্গে সমবয়সী আরও দুটি মেয়ে দাঁড়িয়ে গান শুনছে।
এই যে মেয়েরা একটু একটু করে বড় হচ্ছে, জগতের নানা বিষয়আশয় তাদের আকর্ষণ করছে এবং তার সঙ্গে নিজেকেও যে মানিয়ে নিতে হচ্ছে, তা ঠিকই টের পাচ্ছেন জাকারবার্গ। এ কারণেই হয়তো ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘কন্যাদের বাবার জীবন।’
সন্তানদের প্রতি স্নেহ, ভালোবাসা কিংবা দায়িত্বের কথা অকপটেই বলেন জাকারবার্গ ও প্রিসিলা। ম্যাক্সিমার জন্মের আগে তিনবার গর্ভপাত হয়েছিল প্রিসিলার। সে সময় জাকারবার্গ লিখেছিলেন, ‘সন্তান আসছে শুনলে আপনি অত্যন্ত আশাবাদী হবেন। সন্তান কেমন হবে, তার ভবিষ্যৎ কেমন হবে, সবকিছু নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করবেন। সন্তানকে ঘিরে সাজাতে শুরু করবেন নানা পরিকল্পনা। কিন্তু হঠাৎ সে চলে গেলে ভীষণ শূন্য লাগে। অনেকেই গর্ভপাত নিয়ে আলোচনা করেন না। কারণ, ভাবেন, আপনার সমস্যাগুলো আপনাকে সবার থেকে দূরে সরিয়ে দেবে বা আপনার ওপরই প্রতিফলিত হবে। যেন সব দোষ আপনার, আপনিই কিছু করেছেন। এর ফলে আপনার সংগ্রামে আপনাকে একাই লড়তে হয়।’
জাকারবার্গ আরও লিখেছেন, ‘আজকের উন্মুক্ত এবং সংযুক্ত বিশ্বে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে দূরত্ব বাড়ে না, বরং কাছে আনে। এতে বোঝাপড়া ও সহনশীলতার সৃষ্টি হয়, যা আমাদের আশা দেয়। আমাদের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করতেই বুঝেছিলাম যে এমনটা প্রায় সবার বেলায়ই ঘটেছে। পরিচিত অনেকেরই একই সমস্যা হওয়ার পরও পরবর্তী সময়ে প্রায় সবাই সুস্থ সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন।’
২০০৩ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে প্রিসিলার সঙ্গে পরিচয়। তারপর ১০ বছরের দীর্ঘ প্রেমের পর ২০১২ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন মার্ক জাকারবার্গ ও প্রিসিলা চ্যান। এ বছরের মার্চে তাঁদের তৃতীয় মেয়ে অরেলিয়া এসেছে কোলজুড়ে।
সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট