একটি সুন্দর সম্পর্কে যে কারণে ভালো থাকেন আপনি
সম্পর্কের রসায়ন বেশ জটিল। নির্দিষ্ট কাউকে ঠিক কী কারণে ভালো লাগে, তার ঠিকঠাক উত্তর হয়তো নিজেও জানেন না অনেকে। কিন্তু ভালোবাসার মানুষের জন্য অসম্ভবকে সম্ভব করার বহু উদাহরণ আছে। সুন্দর একটা সম্পর্কে থাকলে জীবনের পথ পাড়ি দেওয়া সহজ হয় নিঃসন্দেহে। যখন একজন আরেকজনের সঙ্গে আবেগীয় সম্পর্কে জড়ান, তখন তাঁর মনের জগতে ঘটে বিশাল পরিবর্তন। শারীরবৃত্তীয় কিছু বিষয়ও এর সঙ্গে যুক্ত।
আবেগীয় পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের দেহে কিছু পরিবর্তন ঘটে। কেউ যখন প্রিয়জনের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটান, তখন ‘হ্যাপি হরমোন’ হিসেবে পরিচিত হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। দেহে এন্ডরফিন, সেরোটোনিন বা ডোপামিনের নিঃসরণ বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই একজন ভালো অনুভব করেন। ভেতরের এই ইতিবাচক অনুভূতিই তাঁর শক্তির একটা জায়গা হয়ে ওঠে। এমনটাই বলছিলেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. টুম্পা ইন্দ্রানী ঘোষ।
একজন যোগ্য সঙ্গী আপনাকে সাহস জোগাবেন। আর সম্পর্কে সুখী হলে আপনি হয়ে উঠবেন আত্মবিশ্বাসী। পৃথিবীর যাবতীয় ঝড়ঝাপটা সহজে সামলাতে পারবেন। কর্মক্ষেত্রের সমস্যা কিংবা বাড়ির বাইরের অন্যান্য ঝঞ্ঝাট নিয়ে আপনার মধ্যে খারাপ অনুভূতির সৃষ্টি হলেও ব্যক্তিগত জীবনের ইতিবাচকতার কারণে সহজে ভেঙে পড়বেন না আপনি। দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর মতো, ভরসা করার মতো, নিজের অনুভূতি ভাগ করে নেওয়ার মতো কেউ একজন আছেন—এই একটি ভাবনাই আপনার জীবনকে সুন্দর করে তুলতে পারে।
তবে সম্পর্কের গতিপথও তো আর সব সময় একরকম থাকে না। কথায় বলে, সম্পর্ক একটা চারা গাছের মতো। যত্নে, ভালোবাসায় বড় করে তুলতে হয় সেই চারা গাছকে। বাস্তবিক অর্থেই কিন্তু সম্পর্কের যত্ন নেওয়া চাই। একে-অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠতে পারলে তবেই না সম্পর্কটি সুন্দর হয়ে ওঠে।
ভালোবাসার মানুষের জন্য রোজ একটু আলাদা সময় রাখতেই হবে, তা আপনি যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন। এর বাইরেও মাঝেমধ্যে সঙ্গীর জন্য বিশেষ কিছু একটা করুন। খুব ছোট্ট কোনো কাজ দিয়েও সম্পর্কে দারুণ কিছু মুহূর্ত সৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গীকে খুশি করতে আপনার যে প্রয়াস, আপনার যে ভাবনা, তাতে কিন্তু আপনিও ভালো অনুভব করবেন। সঙ্গীকে আনন্দ দেওয়ার ভাবনার আড়ালে তো আপনার নিজের আনন্দের বুননটাও লুকিয়ে আছে।
ধরুন, সঙ্গীকে চমকে দিতে অফিস থেকে ফেরার পথে একটা গোলাপ নেবেন আপনি। এই যে ভাবনাটি ভাবলেন, পথের ধারের দোকানটাতে দাঁড়ালেন, ফুলটা কিনলেন, ফুলটা হাতে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিলেন, এই পুরো সময়েই কিন্তু আপনার মনের ভেতর সঙ্গীর ভাবনাটা রইল। অর্থাৎ তিনি চোখের আড়াল হলেও মনের আড়াল হলেন না। তাঁকে আপনি ফুলটা দেবেন, খুশির ঝিলিক দেখা যাবে তাঁর চোখে, এই ভাবনার মধ্যেও কী অপার্থিব সুখ! কেন, জানেন? এ সবই আমাদের ‘হ্যাপি হরমোন’-এর প্রভাব। এই ভাবনার মধ্যে উটকো কোনো ঝামেলা সৃষ্টি হলেও কিন্তু আপনি সুখের অনুভূতিটা ধরে রাখার জন্য সেই ঝামেলাটাকে খুব একটা পাত্তা দেবেন না! বরং আপনার মনোযোগ থাকবে সঙ্গীর হাসিমুখটার ভাবনাতেই।