দুপুরের জম্পেশ ভোজ

ঈদের রান্নায় ভারী খাবার থাকবেই। একই খাবার একটু ভিন্নভাবে করলে স্বাদ ও চেহারা বদলে যায়। এমনই কিছু রেসিপি দিলেন সেলিনা আতার

.
.

সামার সালাদ

উপকরণ: লেটুস পাতা ২ কাপ, মিষ্টি ভুট্টা ভাপানো আধা কাপ, সবুজ আপেল ১ কাপ, বেদানা আধা কাপ, বাঁধাকপি (২ রঙের) আধা কাপ, গাজর (ছোট কিউব করে কাটা) আধা কাপ ও স্প্রিং অনিয়ন আধা কাপ।

সালাদ ড্রেসিং: আপেল সিডার ভিনেগার ২ টেবিল চামচ, বালসামিক ভিনেগার ১ চা-চামচ, জলপাই তেল ১ টেবিল চামচ, সরিষা বাটা (মাস্টার্ড পেস্ট) আধা চা-চামচ, মধু ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া সিকি চা-চামচ।

প্রণালি: আপেল ও বেদানা কেটে চিনি ও লেবু পানির মিশ্রণে কিছুক্ষণ রাখুন। তবে যেন কালো না হয়ে যায়। সবজিগুলো কেটে বরফ ঠান্ডা পানিতে কিছুক্ষণ রাখুন। এতে সবজিতে মচমচে ভাব আসবে। এবার কাটা ফল ও সবজিগুলো পরিবেশন পাত্রে নিন। ড্রেসিংয়ের সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ড্রেসিং তৈরি করে সালাদের ওপর দিয়ে ঠান্ডা সালাদ পরিবেশন করুন।

.
.

কড়াই খাসি

উপকরণ: খাসির মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ চা-চামচ, লালমরিচ গুঁড়া ২ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচের কম, জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ, শাহি জিরা ১ চা-চামচ, কিশমিশ ৭/৮টি, টক দই এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ, টমেটো পিউরি ২ টেবিল চামচ, গরমমসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ, কাজু বাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ, লবণ স্বাদমতো, তেজপাতা ২টা, কাঁচা মরিচ ৮/১০টি, তেল আধা কাপ ও ঘি ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি: প্রথমে একটি বাটিতে মাংস নিন। আদা ও রসুন বাটা, হলুদ, লাল মরিচ গুঁড়া, জিরা বাটা, গরমমসলার গুঁড়া ও টক দই দিয়ে মাংস মাখিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। হাঁড়িতে সামান্য তেল দিয়ে তেজপাতা ও শাহি জিরার ফোড়ন দিন। পেঁয়াজ কুচি, কাজুবাদাম, কিশমিশ দিয়ে একটু ভেজে নামিয়ে নিয়ে ব্লেন্ড করুন।

এখন যে হাঁড়িতে মাংস রান্না করবেন, চুলায় বসিয়ে দিয়ে তেল দিন ও মসলায় মাখানো মাংস দিন। ধীরে ধীরে কষান। মাংসে ব্লেন্ড করা মসলা দিয়ে দিন।

এবার মাংস অর্ধেকটা হয়ে গেলে টমেটো পিউরি ও পেঁয়াজ বেরেস্তা দিন। দরকার মনে করলে আধা কাপ গরম পানি দিয়ে আরও ৩০ মিনিট ঢেকে রাখুন। মাংস নরম হয়ে গেলে কাঁচা মরিচ দিয়ে আবার ৫ মিনিট ঢেকে নামিয়ে নিন। পোলাও, নান বা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন।

.
.

বিফ পারসিয়ান কাবাব

উপকরণ: গরুর মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম, পেঁয়াজ কিমা ১ কাপ, জাফরান ১ চিমটি, কাঁচা মরিচ কিমা ১ চা-চামচ, পাপরিকা আধা চা-চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, ডিম ১টি, দুধে ভেজানো পাউরুটি ৩ টুকরা, কিশমিশ মিহি কুচি ২ চা-চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো ও সাসলিকের কাঠি ৮/১০টি।

প্রণালি: প্রথমে জাফরান ১ টেবিল চামচ কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পেঁয়াজের রস হালকা করে চিপে ফেলুন। এবার সব উপকরণ একসঙ্গে ভালো করে মেখে নিন। কিমার এই মিশ্রণ একটি এয়ার টাইট বক্সে করে ফ্রিজে রাখুন সারা রাত। এবার এটি ৮ ভাগে ভাগ করুন ও প্রতিটা ভাগ কাঠিতে হাত দিয়ে চেপে চেপে কাবাবের আকারে গড়ে নিন। কাঠিতে সঠিকভাবে আটকানোর জন্য আবার ফ্রিজে রাখুন ১ ঘণ্টা। এবার এই কাবাবগুলো চুলায় গ্রিল প্যানে বা কাবাব চুলায় বসিয়ে গ্রিল করুন। সবুজ সালাদ অথবা রায়তার সঙ্গে পরিবেশন করুন।

.
.

গরুর শাহি রেজালা

উপকরণ: গরুর মাংস দেড় কেজি, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা দেড় টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, লাল মরিচ গুঁড়া ২ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ, কিশমিশ বাটা ১ টেবিল চামচ, মিষ্টি দই এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ, আলুবোখারা ৫-৬টি, গরমমসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ, জয়ফল জয়ত্রী বাটা ১ চা-চামচ, কাজুবাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা সিকি কাপ, লবণ স্বাদমতো, তেজপাতা ২/৩টি, কাঁচা মরিচ ৮/১০টি, তেল এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ ও ঘি ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি: মাংসের হাঁড়িতে পেঁয়াজ কুচি, পেঁয়াজ বাটা, আদা ও রসুন বাটা, হলুদ ও লাল মরিচ গুঁড়া, জিরা বাটা, গরম মাসলা, তেজপাতা, তেল, লবণ স্বাদমতো দিয়ে মাখিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। এখন হাঁড়ি চুলায় বসিয়ে দিন। পানি দেওয়ার দরকার নেই। মাংস থেকেই পানি ছাড়বে। মাংসটা আস্তে আস্তে কষাতে থাকুন।

এবার একটা বাটিতে মিষ্টি দইয়ের সঙ্গে কিশমিশ বাটা, আলুবোখারা, পেঁয়াজ, বেরেস্তা, জয়ফল-জয়ত্রী, কাজুবাদাম বাটা দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিন। দইয়ের মিশ্রণটা মাংসে দিয়ে নেড়ে আধা কাপ গরম পানি দিয়ে কম আঁচে ঢেকে রাখুন ৩০ মিনিট। কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও ১০ মিনিট দমে রাখুন।

মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। পরিবেশনের সময় ওপরে বেরেস্তা ছিটিয়ে দিন।

.
.

মুরগির মোগলাই রোস্ট

উপকরণ: এলাচি গুঁড়া আধা চা-চামচ, দারুচিনি গুঁড়া সিকি চা-চামচের কম, শাহি জিরা গুঁড়া সিকি চা চামচের কম, জয়ত্রী গুঁড়া এক চা-চামচের আট ভাগের এক ভাগ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া এক চা-চামচের আট ভাগের এক ভাগ ও জায়ফল ১টার ৬ ভাগের ১ ভাগ (সব একসঙ্গে গুঁড়া করে মিশিয়ে রাখবেন)

রোস্টের উপকরণ: মুরগি ২টা (প্রতিটা ৪ টুকরা করে) মোট ৮ টুকরা, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ,

রসুন বাটা ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ,পেঁয়াজ বেরেস্তা সিকি কাপ, পেঁয়াজ বাটা ৩ টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ, ভাজার জন্য তেল আধা কাপ, ঘি সিকি কাপ, টক দই ৩ টেবিল চামচ, মিষ্টি দই ৩ টেবিল চামচ, জাফরান রং আধা চা-চামচ, দুধে ভেজানো জাফরান সামান্য, কাঠ ও কাজুবাদাম বাটা দেড় টেবিল চামচ, আলুবোখারা ৪টি, কিশমিশ বাটা ১ টেবিল চামচ, মাওয়া ২ টেবিল চামচ, কিশমিশ আস্ত ৭/৮টি, কুচানো কাঠবাদাম ও পেস্তা বাদাম ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৬টি, লবণ স্বাদমতো, পানি দেড় কাপ।

প্রণালি: সব বাটা ও গুঁড়া মসলার সঙ্গে (রোস্টের মসলা বাদে) ১ চা-চামচ লবণ ও টক দই ভালোভাবে ফেটে রাখুন। মিশ্রণটা মসৃণ হতে হবে। মুরগি ধুয়ে কিচেন টাওয়েল দিয়ে চেপে পানি শুষে নিন। এবার ওই মসলা দিয়ে ম্যারিনেট করুন ১ ঘণ্টা। একটি কড়াইতে তেল দিয়ে মসলা সরিয়ে মুরগিগুলো হালকা ভেজে নেবেন। রং পরিবর্তন হলেই নামিয়ে নিন। মিষ্টি দই, পেঁয়াজ বেরেস্তা ও রোস্টের মসলা একসঙ্গে মিশিয়ে রাখুন। এবার রোস্টের হাঁড়িতে ওই তেল ও ঘি দিয়ে ম্যারিনেট করা মসলা ও আলুবোখারা দিয়ে খানিকটা কষিয়ে নিন। ভাজা মুরগিগুলো দিয়ে মসলার সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে মিষ্টি দই ও রোস্টের মসলার মিশ্রণটা দিয়ে নাড়াচাড়া করে গরম পানিটুকু দিয়ে ঢেকে দিন। পানি টেনে এলে দুধে ভেজানো জাফরান, মাওয়া, কিশমিশ, কাঁচা মরিচ ও কুচানো বাদাম দিয়ে কিছুক্ষণ দমে রাখুন। পানি শুকিয়ে মসলা তেলের ওপর এলে নামিয়ে নিন।

.
.

শাহি জাফরানি পোলাও

উপকরণ: পোলাও চাল ১ কেজি, তেল আধা কাপ, ঘি আধা কাপ, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, আস্ত এলাচি ৪/৫টি, দারুচিনি ২/৩টি স্টিক, কাজু ও পেস্তা বাদাম বাটা ২ টেবিল চামচ, নারকেল দুধ ১ কাপ, কিশমিশ (ঘিয়ে ভাজা) ২ টেবিল চামচ, জাফরান (দুধে ভেজানো) সিকি চা-চামচ, শাহি জিরা (আস্ত) ১ চা-চামচ, গরম পানি ৫/৬ কাপ, দুধ ১ কাপ ও লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: চাল ধুয়ে ঝাঁঝরিতে পানি ঝরিয়ে রাখুন। হাঁড়িতে তেল গরম করে শাহি জিরা ও এলাচি দারুচিনি দিন। আদা কুচি দিয়ে একটু ভাজুন। ভাজা হয়ে গেলে চাল দিয়ে ভাজুন। আদা বাটা ও লবণ দিন ও একটু ভেজে গরম পানি দিয়ে দিন। বাদাম বাটা একটু পানি দিয়ে নরম মিশ্রণ করে চালে দিয়ে দিন। চাল অর্ধেক ফুটে এলে নারকেল দুধ ও ঘন তরল দুধ দিয়ে ঢেকে দিন। পোলাও হয়ে এলে জাফরান ও কিশমিশ দিয়ে দমে রাখুন ১০ মিনিট। নামিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।