যেভাবে ললিপপ বানাত প্রাচীন মিসর, চীন ও আরবের লোকেরা

শৈশবের এক অমোঘ আকর্ষণের নাম ললিপপ
ছবি: পেকজেলস

শৈশবের এক অমোঘ আকর্ষণের নাম ললিপপ। সোজা বাংলায় যাকে বলে কাঠি-লজেন্স বা লাঠি-লজেন্স। মিষ্টি স্বাদযুক্ত বহু বর্ণের এই খাবারটি শিশুদের অতি প্রিয়। শিশুদের শান্ত করার এক অব্যর্থ ওষুধ। শিশু কাঁদছে, কোনো কিছু নিয়ে জেদ করছে, হাত-পা ছুড়ছে, থামছে না কিছুতেই, এমন পরিস্থিতিতে হাতে একটি লাঠি-লজেন্স ধরিয়ে দিন, থেমে যাবে। লাঠি-লজেন্সের কথা এলে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত কবিতা ‘কেউ কথা রাখেনি’র সেই পঙ্‌ক্তিটি চলেই আসে, ‘লাঠি-লজেন্স দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে লস্কর বাড়ির ছেলেরা।’

শৈশবের হাজারটা আক্ষেপের ভিড়ে লাঠি-লজেন্স কিনতে না পারার সেই আক্ষেপ পরিণত বয়সে এসেও কেমন ঘাপটি মেরে বসে থাকে।

১৭ শতকে চিনির উৎপাদন প্রাচুর্যের দরুন ললিপপের জগতে রীতিমতো বিপ্লব ঘটে যায়
ছবি: পেকজেলস

ললিপপের ইতিহাস বহু পুরোনো। প্রাগৈতিহাসিক যুগে গুহাবাসীরা মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহের জন্য লাঠি ব্যবহার করত। লাঠির গা বেয়ে মধু নেমে আসত, সেটি চুষে খেত গুহাবাসী প্রাচীন মানুষ। ফলে এটিকে ললিপপ বা লাঠি-লজেন্স উদ্ভাবনের প্রাথমিক পর্ব হিসেবে ধরা যেতে পারে। প্রাচীন মিসর, চীন ও আরবের লোকেরা বিভিন্ন ফল, বাদাম ও মধুর মিশ্রণে তৈরি করত একজাতীয় মিষ্টান্ন। তাতে লাঠি ঢুকিয়ে চুষে চুষে খেত। লাঠি-লজেন্সের এটিও এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

১৭ শতকে চিনির উৎপাদন প্রাচুর্যের দরুন ললিপপের জগতে রীতিমতো বিপ্লব ঘটে যায়। ১৮ শতকে এসে আজকের চেহারা পায় ললিপপ। ১৯০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাডলি স্মিথ কোম্পানির মালিক জর্জ স্মিথের হাত ধরে উৎপাদিত হয় ললিপপের প্রচলিত রূপ। ১৯৩১ সালে এর ট্রেডমার্কও নিজের করে নেন তিনি।

২০ জুলাই পালিত হয় ললিপপ তথা লাঠি-লজেন্স দিবস। কবে কীভাবে এই দিবসের সূচনা হয়েছিল, তা অবশ্য জানা যায় না। তাতে কী! শৈশবের স্মৃতিজড়ানো প্রিয় লাঠি-লজেন্স নিয়ে একটা দিন পালন করা যেতেই পারে।

ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে