৫টি সুপার হেলদি বীজ খাবেন যে কারণে
নীরোগ ও সুস্থ থাকতে কত ধরনের খাবারই না খাই আমরা। কিন্তু আকারে ‘ছোট’ হলেও কাজে ‘বড়’ কিছু বীজ আপনাকে রাখবে নীরোগ। যেমন চিয়া বীজ, মিষ্টিকুমড়া বীজ, তিসি বীজ, তিল বীজ ইত্যাদি। এই বীজগুলো ফাইবারের বড় উৎস। এগুলোয় থাকে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটসহ বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। কোন বীজে কী কী উপকারিতা জেনে নিতে পারেন।
চিয়া বীজ
চিয়া বীজ সুপার ফুড হিসেবে খ্যাত। প্রাকৃতিকভাবে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। চিয়া বীজে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে, প্রদাহ কমায় ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে। এর ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এর প্রোটিন শরীরের মাংসপেশির গঠন ও মেরামত করে। চিয়া বীজে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এর ফলে কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে, যার ফলে ক্যানসার রোধ করা যায়। হাড় ও দাঁতের গঠন শক্তিশালী করে এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে চিয়া বীজ। কারণ, এতে আছে ক্যালসিয়াম। চিয়ার ভিটামিন বি শরীরের শক্তি উৎপাদনে সহায়ক এবং মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
সূর্যমুখী বীজ
সূর্যমুখী বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, ফ্ল্যাভোনয়েড ও অন্যান্য উদ্ভিদ যৌগ থাকে, যা প্রদাহ কমাতে পারে। সূর্যমুখীর ফ্ল্যাভোনয়েডগুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ‘ভান্ডার’, যা কোষকে ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে। এই ফ্রি র্যাডিক্যাল ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ক্যানসার ও হৃদ্রোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি লিনোলিক, ওলিক ও পামিটিক অ্যাসিডের মতো ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো সূর্যমুখী বীজে পাওয়া যায়, যা কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে পারে। এগুলো ত্বক সুস্থ রাখে।
তিসি বীজ
তিসি বীজ ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও লিগন্যানের একটি বড় উৎস, যার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অন্যান্য পুষ্টি উপাদানেও এটি ভরপুর। এতে আছে প্রোটিন, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডসহ থায়ামিন, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেশিয়াম। এই বীজ হৃৎস্বাস্থ্য ভালো রাখে, কোলেস্টেরলের মাত্রা ও প্রদাহ কমাতে পারে। পাশাপাশি ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় এই বীজ। রক্তচাপ ও রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করে তিসি বীজ।
মিষ্টিকুমড়ার বীজ
মিষ্টিকুমড়ার বীজে রয়েছে প্রচুর জিংক, ফসফরাস, গুড ফ্যাট ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। এ ছাড়া ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়ামেরও এটি ভালো উৎস। প্রোস্টেট স্বাস্থ্য ও হৃৎস্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে মিষ্টিকুমড়ার বীজ। পাশাপাশি এই বীজে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করে। ফলে ডায়াবেটিক রোগীরা এটি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এমনকি নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
তিল বীজ
তিল বীজের পুষ্টিগুণ অসাধারণ। উপকারী বিভিন্ন উপাদান, যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন ও বি ভিটামিনের উৎস এই বীজ। এ ছাড়া তিল বীজে ফাইবার, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। তিল বীজ লিগন্যানের একটি বড় উৎস, যা হরমোনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। এতে সেসামিন ও সেসামলের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রক্তচাপ ও প্রদাহ কমায়, ভালো রাখে হাড়ের স্বাস্থ্য।