বাংলার মিষ্টিসহ কাজলের প্রিয় সাত খাবার ও একটি রেসিপি
বলিউড তারকা কাজলকে হয়তো দেখে মনে হয় না, তবে তিনি খেতে খুব ভালোবাসেন। তাঁর পছন্দের খাবারের তালিকায় আছে বিশ্বের নানান প্রান্তের সব খাবার। কাজল বাঙালি ঘরের মেয়ে, ক্যারিয়ার গড়েছেন বলিউডে, বিয়ে করেছেন পাঞ্জাবি, ঘুরে বেড়িয়েছেন সারা বিশ্ব। ফলে দুনিয়ার নানান সংস্কৃতিকে আপন করে নেওয়া কাজলের প্রিয় খাবার যে বৈচিত্র্যময় হবে, সেটাই স্বাভাবিক।
যাঁরা ফিট থাকেন, তাঁরা হিসাব করে, নিয়ম মেনে খান। বেশি খেলে ক্যালরি ঝরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করেন। হলিউড–বলিউড তারকাদের মধে যাঁরা কড়া ডায়েট করেন, তাঁরাও মাসে একবার চিটমিল খান। কাজল চিটমিল খান সপ্তাহে একবার। তবে যেদিন চিটমিল খান, সেদিন আর কিছুই খান না। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশিদের কয়েকটি প্রিয় খাবার কাজলেরও প্রিয়। সম্প্রতি ‘সানডে বাঞ্চ উইথ কাজল’ অনুষ্ঠানে দুপুরের খাবার খেতে খেতে কাজল জানালেন তাঁর প্রিয় খাবারের কথা...
১. পানিপুরি
বাঙালি মেয়েদের প্রিয় খাবারের তালিকায় একেবারে প্রথম দিকে ফুচকা অথবা পানিপুরি থাকার সম্ভাবনা নাকি প্রবল। কাজলের ক্ষেত্রে তা শতভাগ সত্যি। এই অনুষ্ঠানে এসেও শুরুতে কাজল উপস্থাপকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেশ কয়েকটা পানিপুরি খেয়েছেন।
২. ফিশ অ্যান্ড চিপস
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ‘ফিশ অ্যান্ড চিপস’ চেখে দেখেছেন কাজল। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কোরিয়া, চীন...তবে কাজলের মতে, সবচেয়ে সেরাটা নাকি পাওয়া যায় ভারতের মুম্বাইয়ের জুহুর সান এন স্যান্ড ও কোলাবার তাজ হোটেলে।
৩. পালং-পনির (পালক-পনির)
এটা একটা পাঞ্জাবি খাবার। কাজলের জীবনসঙ্গী অজয় দেবগন পাঞ্জাবি। তাই কাজলের প্রিয় খাবারের তালিকায় পালং-পনির থাকা অস্বাভাবিক নয়। রেসিপিটাও জেনে নিন। চাইলে আপনিও বানিয়ে খেতে পারেন।
ঝটপট রেসিপি
একটি কড়াইয়ে সামান্য পানির ভেতর আধা চা–চামচ লবণ, দুটি কাঁচা মরিচ, ৩–৪টা রসুনের কোয়া, একটা পেঁয়াজের কুচি নিন। এর মধ্যে দুই আঁটি (মুঠো) পালংশাক নিয়ে বেছে–ধুয়ে কুচি করে কেটে দিন। এক মিনিট ঢাকনা দিয়ে রাখুন।
পালংশাকসহ বাকি উপাদান ছেঁকে নিন। ব্লেন্ডারে পালংশাকের পেস্ট তৈরি করুন। ওই পালংশাকের পানিতে ১৫–২০ টুকরা পনির ভিজিয়ে রাখুন।
এরপর ফ্রাইপ্যানে এক টেবিল চামচ ঘিয়ের মধে আধা চামচ জিরা, কিছু ধনিয়া, ১টি শুকনা মরিচ আর ১টি তেজপাতা দিন। এর সঙ্গে ৩-৪ কোয়া রসুন আর ১টটি কাঁচা মরিচ ছেঁচে দিন।
ফোঁড়নটা একটু ভাজা ভাজা হলে সেখানে এক ছটাক হিং আর ১টি পেঁয়াজকুচি দেবেন। পেঁয়াজটা ভাজা ভাজা হয়ে এলে সেখানে সামান্য হলুদ, মরিচ ও ধনেগুঁড়া দিয়ে দেবেন। এর ভেতর ছেড়ে দিন একটি টমেটোকুচি। টমেটো সেদ্ধ হয়ে ভাজা ভাজা হয়ে এলে ফোঁড়নের মধ্যে পালংয়ের পেস্ট ঢেলে দিন। পানিসহ পনিরটা ঢেলে দিন। কিছুক্ষণ পর চেখে দেখে যদি লবণ লাগে দিন।
রান্নাটা হয়ে এলে ওপরে সামান্য কাসুরি মেথি ও আদাকুচি ছিটিয়ে দিন। নামানোর ঠিক আগে এক টেবিল চামচ মাখন দিন। গরম পরোটা দিয়ে দারুণ লাগবে এই পালং-পনির।
৪. সুশি
জাপানি খাবার সুশি কাজলের সবচেয়ে প্রিয়। টাটকা শাকসবজি কিংবা সামুদ্রিক মাছ—সবকিছু দিয়েই সুশি বানিয়ে খেতে পছন্দ করেন কাজল। তাঁর বাড়িতে যিনি রান্না করেন, তিনিও সুশি বানাতে ওস্তাদ।
৫. চায়নিজ খাবার
জাপানি সুশির পাশাপাশি কাজল চায়নিজ খেতে খুবই ভালোবাসেন। তবে সেটা ‘ভারতীয়-চায়নিজ’ নয়, আসল চায়নিজ খাবার। ডিম সাম, হট পট, ম্যাপো তফু বিশেষ করে লম্বা কাঠি দিয়ে ডামপ্লিংস খেতে ভালোবাসেন কাজল। এ ছাড়া সি ফুডও তাঁর পছন্দ।
৬. গোয়ান ক্যুজিন
এসবের পাশাপাশি ভারতের সমুদ্রপাড়ের শহর গোয়ার ঐতিহ্যবাহী সব খাবার খুবই মজা করে খান কাজল। মোগল আমলে পর্তুগিজরা প্রায় সাড়ে চার শ বছর শাসন করেছে গোয়ায়। ফলে সেখানকার খাবারদাবারে পর্তুগিজ সংস্কৃতির ব্যাপক প্রভাব আছে। নারকেলের দুধ দিয়ে রান্না করা চিংড়ি, রাভা ফিশ ফ্রাই, ফিশ রেচিয়াডো, চিকেন জাকুটি চেখে দেখার জন্যই মাঝেমধ্যে গোয়ায় চলে যান কাজল। এই বলিউড তারকার মতে, সামুদ্রিক মাছের সেরা সব রেসিপি আছে গোয়ান ক্যুজিনে।
৭. বাংলার মিষ্টি
কাজলের মতে, চকলেট ছাড়া বিশ্বের আর সমস্ত সেরা মিষ্টি নাকি বাঙালিরাই বানিয়েছে। খাওয়া শেষে ডেজার্ট ছাড়া চলেই না। মাঝেমধ্যে মজা করে ডেজার্ট খাওয়ার জন্য মেইন কোর্সও কম করে খান কাজল। এমনকি খাওয়ার শেষ ভাগে দই দিয়ে ভাত খেতে ভালোবাসেন। দুধ-ভাতে সামান্য লবণ ছিটিয়ে খেতেও পছন্দ করেন কাজল।