মানবিকে পড়ে সাইবার বিশেষজ্ঞ
স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়েননি। কিন্তু তাঁর কাজ এই বিজ্ঞান ঘিরেই। কীভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ জন্মাল? কীভাবে নিজেকে তৈরি করলেন? পড়ুন ডিকোডস ল্যাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ মঈনুদ্দীনের কথা।
স্কুল ও কলেজে মানবিক বিভাগে পড়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস ও মাস্টার্স অব আর্টস ডিগ্রি নিই ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে। সবাই যখন বিসিএসের পড়া নিয়ে ব্যস্ত, আমি দেখলাম, আমি গণিতে কিছুটা দুর্বল। বিকল্প হিসেবে মার্চেন্ডাইজিং ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ খুঁজি। কম্পিউটার ব্যবহার করতে গিয়ে তখন হ্যাকিংয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।
কম্পিউটারবিজ্ঞান বা প্রযুক্তিসংক্রান্ত বিষয়ে না পড়ার কারণে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমার যেহেতু পাটিগণিতে দুর্বলতা ছিল, তাই অনেক কিছু প্রথমে বুঝতাম না। পিএইচপি আর প্রোগ্রামিং ভাষা শেখার সময় দেখলাম, এখানে গণিতের অনেক কিছু যুক্ত। না বুঝলেও ধীরে ধীরে সময় দিয়েছি শেখার জন্য।
ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ফান্ডের আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে এক বছরব্যাপী প্রশিক্ষণের সুযোগ নিই। ক্যারিয়ার শুরু করি ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে, একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে। পরে তথ্যনিরাপত্তা নিয়ে নানা বিষয়ে পড়াশোনা ও গবেষণার মাধ্যমে শেখা শুরু করি। বাংলাদেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্যনিরাপত্তা নিয়ে প্রশিক্ষকের কাজ করেছি। আমি এখন নতুন প্রজন্মের তরুণদের সাইবার সিকিউরিটিতে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ নিয়ে ডিকোডস ল্যাব লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেছি। এ ছাড়া অনলাইনভিত্তিক ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি, নাম সাইবারস্কিলবিডি ডটকম। এখান থেকে সহজে ও কম খরচে যে কেউ কোর্স করে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারবেন।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ–প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন সাইবার সিকিউরিটি ও ডিজিটাল ফরেনসিকের ওপর সিলেবাস প্রণয়ন ও মানদণ্ড নির্ধারণ কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করেছি। শুরুতে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে কাজের সময় অনেকেই একটু অবাক হতেন। মানবিক থেকে পড়ে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করতে পারব কি না, এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতেন। বড় বড় কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে আমি নিজেকে প্রমাণ করেছি।