‘ও আমাকে ব্লক করল কেন!’

ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ায় ঝগড়া হলে ব্লক করতে দেখা যায় অনেককেছবি: প্রথম আলো

বাস্তব জগতে কাউকে ভদ্রভাবে এড়িয়ে চলাটা অনেক ক্ষেত্রেই কঠিন হয়ে পড়ে। ভার্চ্যুয়াল জগতে কাউকে এড়িয়ে চলা অবশ্য সহজ। ব্লক করে দিলেই হলো! যিনি কোনো ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলতে চান, তিনি তো তাঁর স্বাধীনতা প্রয়োগ করে ব্লক করে দিতেই পারেন। তবে যাঁকে ব্লক করা হলো, তিনি ব্যাপারটা ধরতে পারার পর তাঁর মনে কিন্তু নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাস্তব জীবনে দুজন মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক খারাপ হয়ে পড়লে একজন অন্যজনকে ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ায় ব্লক করে দিতে পারেন। ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ায় ঝগড়া বা কথা-কাটাকাটি হলেও এমনটা করতে পারেন কেউ। কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কচ্ছেদের একটা ধাপও হতে পারে তাঁকে ব্লক করে দেওয়া। তবে এসব পরিস্থিতিতে ব্লকের সম্ভাব্য কারণ খুঁজে পাওয়াটা কঠিন কোনো ব্যাপার নয়। কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ ছাড়াও কাউকে ব্লক করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। যাঁকে ব্লক করা হয়েছে, তিনি এই ব্লকের কারণ খুঁজে না পেলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন।

আপনার সঙ্গে যদি এমনটা ঘটে, কী করবেন?

ভালো থাকতে হলে অনলাইনে ব্লক নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা না করাই ভালো
ছবি: প্রথম আলো

সহজভাবে নিন

জীবনে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যায়, যাতে আমাদের কিছু করার থাকে না। কিন্তু ভালো থাকতে হলে এসব নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা না করাই ভালো। সবকিছুকেই সহজভাবে নিতে হবে। কোনো একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মূল্যবান সময় অপচয় করার কোনো মানেই হয় না। কেউ ব্লক করে দিলেই তো আর আপনার কোনো ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে না কিংবা আপনি অকারণে দোষীও সাব্যস্ত হচ্ছেন না। তাই ইতিবাচক থাকুন। জীবনে করার মতো নিশ্চয়ই আরও বহু কাজ আপনার রয়েছে। জগতে ভাবার মতো আরও বহু বিষয় রয়েছে। মন খারাপ লাগলেও নিজেকে ভালো রাখতে ভিন্ন পরিসরে মনোনিবেশ করুন।

তবু মাথায় ভাবনা এলে কারণটা খুঁজতে পারেন

আপনার কোনো আচরণে ওই ব্যক্তি কষ্ট পেয়ে থাকতে পারেন, বিরক্ত হয়ে থাকতে পারেন। হয়তো বিষয়টা আপনি অনুমানও করতে পারছেন না। এমনও হতে পারে, আপনি সরাসরি ওই ব্যক্তিকে নির্দেশ করে কিছু বলেননি। কিন্তু আপনার কোনো কাজে তিনি হয়তো মর্মাহত হয়েছেন। সমাজ, রাজনীতি, দর্শন প্রভৃতি ভারিক্কি বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত আপনার মতামতে কোনো বাড়াবাড়ি প্রকাশিত হয়েছে বলে মনে হলেও কিন্তু কেউ আপনাকে এড়িয়ে চলতে চাইতে পারেন। তাঁর এমনটাও মনে হতে পারে যে আপনি তৃতীয় কোনো ব্যক্তির সমালোচনা করে নিজের একটা ‘ক্ষমাহীন’ অবস্থান সৃষ্টি করেছেন। তাই নিজের সাম্প্রতিক কাজ, কথা, ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ার পোস্ট এবং মন্তব্যে এমন কিছু ছিল কি না, ভেবে দেখতে পারেন। কিংবা আপনার পোস্টগুলো তাঁর কাছে একঘেয়ে বা বিরক্তিকর মনে হতে পারে। আবার এমনও হতে পারে, ওই ব্যক্তি নিজেই হয়তো কোনো বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তাই আপনাকে প্রায় ‘অকারণে’ই ব্লক করে দিয়েছেন।

আত্মসম্মান বজায় রাখুন

কারণ খুঁজে পান আর না-ই পান, কেউ আপনাকে ব্লক করলেও নিজের আত্মসম্মান নষ্ট হতে দেবেন না। মনে কষ্ট পেলেই যে সবার সঙ্গে সব বিষয় নিয়ে আলাপ করতে হবে, তা কিন্তু নয়। বরং স্বাভাবিক থাকুন। ওই ব্যক্তির সঙ্গে বাস্তব জগতে দেখাসাক্ষাৎ হলে ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন না করে স্বাভাবিকভাবে কথা বলুন। অন্য কোনো ব্যক্তি যদি কোনোভাবে বিষয়টা জেনে তা নিয়ে খোঁচাতে চেষ্টা করেন, তাঁকেও সুন্দরভাবে বলে দিন, ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ার এই একটি সামান্য ঘটনার চেয়েও বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে আপনার জীবনে। সত্যিই ওতে আপনার কিছুই আসে–যায় না।

আরও পড়ুন