আম্মু খুঁটি আর আব্বু ছাদ
আজ বাবা দিবস। এ উপলক্ষে পাঠকের কাছ থেকে লেখা আহ্বান করেছিলাম আমরা। পড়ুন ঝিনাইদহের সরকারি কেশবচন্দ্র কলেজের মাসুমা ইসলামের লেখা
ছোটবেলা থেকেই বাবার কড়া শাসনে বড় হয়েছি। ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকায় পরিবারকে খুব বেশি সময় দিতে পারেননি বাবা। ফলে দূরত্ব সব সময়ই রয়ে গেছে। আব্বুকে দূর থেকে সব সময় কঠিন মানুষ মনে হয়েছে। কিন্তু জানি, দিনরাত তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান শুধু আমাদের জন্যই।
২০১৬ সালে যখন জেএসসি পরীক্ষা দিলাম, মনে আছে, আব্বু ভোরবেলা কোচিংয়ে দিয়ে আসতেন। দুপুরে স্কুলে গিয়ে টিফিন খাইয়ে যেসব ক্লাস হয়ে গেছে, সেসব বই নিয়ে আসতেন। যেন স্কুল থেকে ফেরার সময় আমার ব্যাগ ভারী না থাকে।
কলেজে ভর্তির ব্যাপারে শুধু আব্বুই আমাকে ইচ্ছেপূরণে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। কারণ, ওই ছোট বয়সে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাওয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং। আমাকে যেদিন কলেজে রেখে এলেন, সেদিন আব্বুকে শিশুর মতো কাঁদতে দেখে আকাশ থেকে পড়েছিলাম। প্রতিবার হোস্টেলে আমাকে দেখতে এসে চলে যাওয়ার সময় বাসে উঠেই যে কান্নাকাটি করতেন, দীর্ঘশ্বাস ফেলতেন, তখন বুঝতাম কঠিন মানুষটা ভেতরে কতটা নরম। আমাদের তিন ভাই–বোনকে রেখে আব্বু একটুও থাকতে পারেন না। আসলে আমার জীবনে আম্মু খুঁটি আর আব্বু ছাদ। তাঁদের ছাড়া আমার কোনো অস্তিত্ব নেই।
অনেক সময় কারণে-অকারণে, সময়-অসময়ে রাগ দেখিয়ে ফেলি, উচ্চস্বরে কথা বলে ফেলি। আমাকে মাফ করে দেবেন আব্বু। আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি।